০৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

কামালের নেশা ! পাহাড়, খাল, সরকারী ভূমি দখল ?

  • Akash Md. Jasim Editor
  • আপডেট: ০৯:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪
  • ২৩৭

দিশারী ডেস্ক। ২৬ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

কোম্পানীগঞ্জের এক ইউপির জনৈক চেয়ারম্যান জানান, এক সময় চট্রগ্রামের কোন অঞ্চলের একটি পাহাড় দখল করেছিলেন কামাল। এরপর কিছু রাজনৈতিক কর্তা ও প্রশাসনকে হাত করে ওই পাহাড়টির দখল ও মাটি একের পর এক বিক্রয় করে রাতারাতি কোটিপতির খাতায় নাম লেখান তিনি।

পুুরো নাম মো. কামাল উদ্দিন। স্থানীয়ভাবে একটি ইটভাটার পরিচালক বলে কোম্পানী নামেও পরিচয় তার। নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনের উত্থানের নেপথ্য কাহিনী যেন কোন রাজকাহনকেও হার মানায়।

স্থানীয়দের অনেকে জানান, এক সময় নুন আনতে পান্তা পুরালেও গত ক’বছরের ব্যবধানে কামাল এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। তাদের অভিযোগ, এ ব্যক্তি একজন দুর্নীতিবাজ ও সরকারী সম্পদ লুটেরা দলের সদস্য।

কামাল ভারতের নাগরিক বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। অবশ্য, এমনটা অসত্য বলে দাবি তার। স্থানীয়রা জানান, ভারতের বোম্বে তার সন্তান এবং স্ত্রীও নাকি বসবাস করছেন ?  অথচ, তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে বিগত নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।

তিনি এলজিইডিসহ সরকারের কতেক উন্নয়ন সংস্থার ঠিকাদার হয়ে বিগত ১৫ বছর প্রায় কাজের শতভাগ টেকসই, উন্নত ও সঠিকভাবে না করেও সাবেক সরকারের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং নোয়াখালী ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর পরিচয় ব্যবহার করে কোটি-কোটি টাকা ভাগিয়ে নেন।

তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দৌরাত্ম্য দেখিয়ে ভাগিয়ে নেয়া কাজগুলোর গুণমান বিচার করলে কামালের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হতে বেগ পেতে হবেনা কারো।

ইতোমধ্যে, কামাল কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের সাথে সখ্যতা গড়ে দক্ষিণ চরএলাহি মৌজায় সন্ধীপের মেঘনা থেকে জেগে ওঠা সহস্রাধিক একর খাস ভূমি দখল করে নেয়। ওই জায়গা দখলে নিয়ে রাতারাতি চট্রগ্রামের জনৈক আজিম নামের এক ধর্নাঢ্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকার বিনিময়ে মৎস্য প্রকল্পের নামে ভাড়া দেয়।

কামাল কোম্পানী ওই জায়গা দখলে নিতে নোয়াখালী ও জালছেঁড়া খাল পুরোটাই তার দখলের মধ্যে ভোগদখল নিয়ে পানি প্রবাহের পথ পুরোটাই বন্ধ করে দেয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের বিভিন্নমহলে জানানোর পরও কোন বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি প্রশাসন। অনেকের মতে, হয়তোবা এসব দখলকর্মে সরকারী প্রশাসনের কোন কর্তা ব্যক্তিও সুবিধার ভাগি হয়েছেন !

এদিকে, কামাল জেগে ওঠা চরের পুরোটাই নিজের দখলে নিতে ওই চরে বসতি গড়া ৩০/৩৫ টি পরিবারকেও উচ্ছেদ করে দেয়। এসব কাজে চরএলাহির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায়। ভূমিহীনেরা জানান, রাজ্জাক তাদের ভয় দেখিয়েছেন। এ জায়গা থেকে তাদের ঘর-বাড়ি সরিয়ে না নিলে তাদের পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠনোর ভয় দেখান।

এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন জানান, তিনি এখন প্রকাশ্যে আসতে পারছেননা। পরবর্তীতে যোগাযোগ করে কথা বলবেন। একই বিষয়ে চরএলাহির আবদুর রাজ্জাক বলেন, তার জানামতে কামাল কিছু ভূমিহীনদের কিছু জায়গার টাকাও দিয়েছেন।

অপরদিকে, মৎস্য খামারী আজিম মুঠোফোনে বলেন, আমি তো টাকার বিনিময়ে জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি। আমার ক্ষতি করে লাভ কি ? এ পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলেও জানান। এ সময় নোয়াখালী ও জালছেঁড়া খাল ওই খামারের ভেতর কেন জানতে চাইলে বলেন এবিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। একইসঙ্গে, সরকারী ভূমি কামাল কিভাবে ভাড়া দেয় জানতে চাইলেও কোন সদোত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বিষয়টির বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

কামালের নেশা ! পাহাড়, খাল, সরকারী ভূমি দখল ?

আপডেট: ০৯:৪১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

দিশারী ডেস্ক। ২৬ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

কোম্পানীগঞ্জের এক ইউপির জনৈক চেয়ারম্যান জানান, এক সময় চট্রগ্রামের কোন অঞ্চলের একটি পাহাড় দখল করেছিলেন কামাল। এরপর কিছু রাজনৈতিক কর্তা ও প্রশাসনকে হাত করে ওই পাহাড়টির দখল ও মাটি একের পর এক বিক্রয় করে রাতারাতি কোটিপতির খাতায় নাম লেখান তিনি।

পুুরো নাম মো. কামাল উদ্দিন। স্থানীয়ভাবে একটি ইটভাটার পরিচালক বলে কোম্পানী নামেও পরিচয় তার। নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনের উত্থানের নেপথ্য কাহিনী যেন কোন রাজকাহনকেও হার মানায়।

স্থানীয়দের অনেকে জানান, এক সময় নুন আনতে পান্তা পুরালেও গত ক’বছরের ব্যবধানে কামাল এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। তাদের অভিযোগ, এ ব্যক্তি একজন দুর্নীতিবাজ ও সরকারী সম্পদ লুটেরা দলের সদস্য।

কামাল ভারতের নাগরিক বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। অবশ্য, এমনটা অসত্য বলে দাবি তার। স্থানীয়রা জানান, ভারতের বোম্বে তার সন্তান এবং স্ত্রীও নাকি বসবাস করছেন ?  অথচ, তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে বিগত নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।

তিনি এলজিইডিসহ সরকারের কতেক উন্নয়ন সংস্থার ঠিকাদার হয়ে বিগত ১৫ বছর প্রায় কাজের শতভাগ টেকসই, উন্নত ও সঠিকভাবে না করেও সাবেক সরকারের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং নোয়াখালী ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর পরিচয় ব্যবহার করে কোটি-কোটি টাকা ভাগিয়ে নেন।

তারা বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দৌরাত্ম্য দেখিয়ে ভাগিয়ে নেয়া কাজগুলোর গুণমান বিচার করলে কামালের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হতে বেগ পেতে হবেনা কারো।

ইতোমধ্যে, কামাল কোম্পানীগঞ্জের চর এলাহির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের সাথে সখ্যতা গড়ে দক্ষিণ চরএলাহি মৌজায় সন্ধীপের মেঘনা থেকে জেগে ওঠা সহস্রাধিক একর খাস ভূমি দখল করে নেয়। ওই জায়গা দখলে নিয়ে রাতারাতি চট্রগ্রামের জনৈক আজিম নামের এক ধর্নাঢ্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকার বিনিময়ে মৎস্য প্রকল্পের নামে ভাড়া দেয়।

কামাল কোম্পানী ওই জায়গা দখলে নিতে নোয়াখালী ও জালছেঁড়া খাল পুরোটাই তার দখলের মধ্যে ভোগদখল নিয়ে পানি প্রবাহের পথ পুরোটাই বন্ধ করে দেয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের বিভিন্নমহলে জানানোর পরও কোন বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি প্রশাসন। অনেকের মতে, হয়তোবা এসব দখলকর্মে সরকারী প্রশাসনের কোন কর্তা ব্যক্তিও সুবিধার ভাগি হয়েছেন !

এদিকে, কামাল জেগে ওঠা চরের পুরোটাই নিজের দখলে নিতে ওই চরে বসতি গড়া ৩০/৩৫ টি পরিবারকেও উচ্ছেদ করে দেয়। এসব কাজে চরএলাহির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকও প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায়। ভূমিহীনেরা জানান, রাজ্জাক তাদের ভয় দেখিয়েছেন। এ জায়গা থেকে তাদের ঘর-বাড়ি সরিয়ে না নিলে তাদের পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠনোর ভয় দেখান।

এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন জানান, তিনি এখন প্রকাশ্যে আসতে পারছেননা। পরবর্তীতে যোগাযোগ করে কথা বলবেন। একই বিষয়ে চরএলাহির আবদুর রাজ্জাক বলেন, তার জানামতে কামাল কিছু ভূমিহীনদের কিছু জায়গার টাকাও দিয়েছেন।

অপরদিকে, মৎস্য খামারী আজিম মুঠোফোনে বলেন, আমি তো টাকার বিনিময়ে জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি। আমার ক্ষতি করে লাভ কি ? এ পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলেও জানান। এ সময় নোয়াখালী ও জালছেঁড়া খাল ওই খামারের ভেতর কেন জানতে চাইলে বলেন এবিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। একইসঙ্গে, সরকারী ভূমি কামাল কিভাবে ভাড়া দেয় জানতে চাইলেও কোন সদোত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বিষয়টির বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।