০৯:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

স্কুলে যেতে চায়না ৩৭ ভাগ শিশু

  • Akash Md. Jasim Editor
  • আপডেট: ১০:১৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১০২

দিশারী ডেস্ক। ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংস অবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং করোনাকালীন সময়ের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাবে দেশের ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ শিশুর মধ্যে স্কুলে না যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে।

————————————————————————————————

এছাড়া ভীত বা আতঙ্কগ্রস্ত থাকে ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ শিশু। লেখাপড়ায় অমনোযোগী ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং খিটখিটে মেজাজ থাকে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ শিশুর। গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।

————————————————————————————————

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ওই গবেষণাপত্র উত্থাপিত হয়।

সভায় জানানো হয়, গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে, দেশের আটটি বিভাগের মোট ২০৩টি সংগঠনের সহায়তায়। ৩৬০ জনের উপস্থিতিতে ১২টি ফোকাস গ্রুপের আলোচনা, ৩০ জন তথ্যাভিজ্ঞ ব্যক্তির মতামত, দুটি বিভাগীয় এবং দুটি জাতীয় পর্যায়ের সভার মাধ্যমে গবেষণার উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।

শিশুদের মানসিক পরিবর্তন

গবেষণায় ওঠে এসেছে, বর্তমানে অস্থিরতা বা ট্রমার মধ্যে থাকে ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু। শিক্ষায় অমনোযোগী ১৯ দশমিক ২ শতাংশ, উচ্ছৃঙ্খল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ, শিক্ষাক্রমের বিরূপ প্রভাব ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, ডিভাইসে আসক্তি ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ, ভীত-সন্ত্রস্ত থাকা ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, আতঙ্কিত থাকা ২৩ দশমিক ২ শতাংশ, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু।

শিশুদের আচরণ পরিবর্তন

গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, শিশুদের মধ্যে সমাজ সম্পর্কে নেতিবাচক আচরণ প্রকাশ করে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থার প্রকাশ করে ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ, অগ্রহণযোগ্য আচরণ প্রকাশ করে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ।

এছাড়া লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়া ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ, সোশাল মিডিয়ায় আসক্ত ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ, মেজাজ দেখানো ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ, সহিংস আচরণ ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুর।

সরকারের জন্য সুপারিশ

গবেষণা প্রতিবেদনে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, শিশু সুরক্ষা আইন (২০১৩) যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা, শিক্ষক-প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয় অন্তর্ভুক্ত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ট্রমা কাউন্সেলিং কর্মসূচি আয়োজন করা, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যা নিরূপণের জন্য শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের খোলার মাঠ ব্যবহারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় পর্যাপ্ত সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতে সরকারের করণীয়

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ও সরঞ্জাম চেয়েছেন ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ ; বিনোদন কার্যক্রম গ্রহণ করার কথা বলেছেন ২২ দশমিক ২ শতাংশ ; শিশু সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের কথা বলেছেন ৭ দশমিক ৯ শতাংশ ; চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ ; টিভিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানের নিয়মিত আয়োজনের কথা বলেছেন ১১ দশমিক ৮ শতাংশ ; শিশুদের দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার কথা বলেন ১০ দশমিক ৩ শতাংশ ; বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ব্যবস্থা করার কথা বলেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ; শিশুদের নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ এবং শিশুদের নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশ কার্যক্রম হাতে নিতে বলেছেন ৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।

এছাড়া গবেষণা প্রতিবেদনে শিশুদের সহায়তা করার সুপারিশ, এনজিও বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুপারিশ, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সুপারিশ, অভিভাবকদের জন্য সুপারিশ, বিদ্যালয়গুলোর জন্য সুপারিশ এবং সরকারের করণীয় নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিচার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হক। গবেষণা প্রণয়ন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক আব্দুর রউফ।

স্কুলে যেতে চায়না ৩৭ ভাগ শিশু

আপডেট: ১০:১৮:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

দিশারী ডেস্ক। ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংস অবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং করোনাকালীন সময়ের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাবে দেশের ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ শিশুর মধ্যে স্কুলে না যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে।

————————————————————————————————

এছাড়া ভীত বা আতঙ্কগ্রস্ত থাকে ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ শিশু। লেখাপড়ায় অমনোযোগী ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং খিটখিটে মেজাজ থাকে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ শিশুর। গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।

————————————————————————————————

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ওই গবেষণাপত্র উত্থাপিত হয়।

সভায় জানানো হয়, গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে, দেশের আটটি বিভাগের মোট ২০৩টি সংগঠনের সহায়তায়। ৩৬০ জনের উপস্থিতিতে ১২টি ফোকাস গ্রুপের আলোচনা, ৩০ জন তথ্যাভিজ্ঞ ব্যক্তির মতামত, দুটি বিভাগীয় এবং দুটি জাতীয় পর্যায়ের সভার মাধ্যমে গবেষণার উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।

শিশুদের মানসিক পরিবর্তন

গবেষণায় ওঠে এসেছে, বর্তমানে অস্থিরতা বা ট্রমার মধ্যে থাকে ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু। শিক্ষায় অমনোযোগী ১৯ দশমিক ২ শতাংশ, উচ্ছৃঙ্খল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ, শিক্ষাক্রমের বিরূপ প্রভাব ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, ডিভাইসে আসক্তি ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ, ভীত-সন্ত্রস্ত থাকা ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, আতঙ্কিত থাকা ২৩ দশমিক ২ শতাংশ, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ শিশু।

শিশুদের আচরণ পরিবর্তন

গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, শিশুদের মধ্যে সমাজ সম্পর্কে নেতিবাচক আচরণ প্রকাশ করে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থার প্রকাশ করে ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ, অগ্রহণযোগ্য আচরণ প্রকাশ করে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ।

এছাড়া লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়া ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ, সোশাল মিডিয়ায় আসক্ত ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ, বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ, মেজাজ দেখানো ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ, সহিংস আচরণ ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুর।

সরকারের জন্য সুপারিশ

গবেষণা প্রতিবেদনে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, শিশু সুরক্ষা আইন (২০১৩) যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা, শিক্ষক-প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয় অন্তর্ভুক্ত করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ট্রমা কাউন্সেলিং কর্মসূচি আয়োজন করা, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসমস্যা নিরূপণের জন্য শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের খোলার মাঠ ব্যবহারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় পর্যাপ্ত সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মতে সরকারের করণীয়

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ও সরঞ্জাম চেয়েছেন ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ ; বিনোদন কার্যক্রম গ্রহণ করার কথা বলেছেন ২২ দশমিক ২ শতাংশ ; শিশু সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের কথা বলেছেন ৭ দশমিক ৯ শতাংশ ; চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ ; টিভিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানের নিয়মিত আয়োজনের কথা বলেছেন ১১ দশমিক ৮ শতাংশ ; শিশুদের দলীয় রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার কথা বলেন ১০ দশমিক ৩ শতাংশ ; বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ব্যবস্থা করার কথা বলেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ; শিশুদের নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ এবং শিশুদের নৈতিক মূল্যবোধ বিকাশ কার্যক্রম হাতে নিতে বলেছেন ৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।

এছাড়া গবেষণা প্রতিবেদনে শিশুদের সহায়তা করার সুপারিশ, এনজিও বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুপারিশ, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সুপারিশ, অভিভাবকদের জন্য সুপারিশ, বিদ্যালয়গুলোর জন্য সুপারিশ এবং সরকারের করণীয় নিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিচার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হক। গবেষণা প্রণয়ন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক আব্দুর রউফ।