শিশুদের জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে জানেন না ৭৫ শতাংশ অভিভাবক

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
  • 34 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশে শিশুদের ৭৫ শতাংশ অভিভাবক, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিভাবক তাদের সন্তানদের লক্ষ্য সম্পর্কে জানেন না। ১২৪ জন শিশুর মধ্যে মাত্র ৩৯ জন বড়দের সাহায্য চায়। ৫৫ জন উদ্বেগ ভাগ করে। ক্যারিয়ার নিয়ে পরামর্শের অভাব শিশুদের লক্ষ্য অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে।

এডুকো বাংলাদেশ এবং ইন্সপায়রা অ্যাডভাইজরি অ্যান্ড কনসাল্টিং লিমিটেডের ‘চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং সিচুয়েশন এনালাইসিস রিপোর্ট ২০২৪’-এ এসব তথ্য ওঠে এসেছে।

—————————————————————————————–

চাইল্ড রাইটস অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং সিচুয়েশন অ্যানালাইসিস রিপোর্ট

—————————————————————————————–

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে এডুকো বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস আব্দুর রহিম গবেষণার উদ্দেশ্য তুলে ধরে জানান, শিশু ও কিশোরদের অধিকার এবং তাদের পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতার মূল্যায়ন করা এই গবেষণার উদ্দেশ্য।

এ ছাড়াও শিশু ও কিশোরদের স্বপ্ন পূরণে তাদের নিজেদের পরিবার, শিক্ষক এবং সমাজের সক্ষমতা যাচাই, শিশুদের অধিকার এবং সার্বিক কল্যাণ নিয়ে এডুকো বাংলাদেশ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা বোঝার উদ্দেশ্যে এ গবেষণা পরিচালিত হয়।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ইন্সপায়রা অ্যাডভাইজরি অ্যান্ড কনসাল্টিং লিমিটেডের পোর্টফোলিও ম্যানেজার মোহাম্মদ আদনান রহমান।তিনি জানান, চলতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ১১টি জেলা থেকে এই গবেষণার প্রাথমিক তথ্য সংগৃহীত হয়েছে। জেলাগুলো হলো—রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, ঢাকা, শরীয়তপুর, বরিশাল, বরগুনা, সাতক্ষীরা, মৌলভীবাজার এবং কক্সবাজার।

বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, পথশিশু, তাদের পরিবার, শিক্ষক এবং এলাকার মানুষদের সঙ্গে ২৫টি ফোকাস গ্রুপ আলোচনা, ৬৫টি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। ১২৪ জন শিশু এবং প্রায় ১০০ জন অভিভাবক এতে অংশ নেন। গবেষণার পদ্ধতি দুটি প্রধান দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচালিত হয়েছে—প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ এবং মাধ্যমিক গবেষণা পর্যালোচনা।

ইউনিসেফ, বিবিএস, ব্যানবেইসসহ কিছু সংস্থার জরিপের তথ্য উল্লেখ ধরে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে যায় না, যা কুসংস্কার, অবকাঠামোগত ঘাটতি এবং অভিভাবকদের অজ্ঞতার কারণে ঘটে। যারা স্কুলে ভর্তি হয়, তারা হয়রানি, সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হয়। আত্মহত্যার ঘটনার ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশই প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাত্র ৩ শতাংশ শিক্ষক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। পাঁচ জন শিক্ষকের মধ্যে চার জন স্কুলে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান করেন না। ৬৪ শতাংশ শিশু অভিভাবকদের কাছ থেকে হালকা বা গুরুর শারীরিক শাস্তির শিকার হয়। ৬৬ শতাংশ কিশোর শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চায়।

————————————————————————————————————–

কিন্তু তারা মূলত ইন্টারনেটের ওপর নির্ভর করে, যা ভুল তথ্য পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। শিক্ষক বা পরিবারের সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিষয়ে আলোচনা বিরল। সহপাঠীরাই তাদের তথ্যের প্রধান উৎস। শ্রমে নিয়োজিত শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার সম্ভাবনা ছয় গুণ বেশি দেখা গেছে| প্রায় অর্ধেক পথশিশু কিশোর অপরাধ ও মাদক সরবরাহ চেইনের সঙ্গে জড়িত।

————————————————————————————————————–

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মমতাজ আহমেদ বলেন, আমার মন্ত্রণালয় কিশোর-কিশোরী ক্লাবসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এ সব কার্যক্রমে আমি আজকের রিপোর্টের তথ্য ও সুপারিশগুলো অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করব।

বিশেষ অতিথি এনজিও এফেয়ার্স ব্যুরোর ডিরেক্টর জেনারেল আনোয়ার হোসেন বলেন, শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে চাইলে পরিবার থেকেই প্রথমে সুরক্ষা দিতে হবে। চাচা, মামা, খালু শিশুদের নিপীড়ন করে থাকে। মা-বাবাকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

সমাপনী বক্তব্যে এডুকো বাংলাদেশের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার হালিমা আক্তার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জায়গায় যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এই হয়রানি প্রতিরোধে আমরা একটা আইন চাই।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!