দান-ছাদাকা না করলে পরকালে কঠোর শাস্তি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, মে ১১, ২০২১
  • 645 পাঠক

দিশারী ডেস্ক
———–
দান ও সেবা মহত কাজ। দুস্থ ও অসহায়ের মুখে হাসি ফুটানো গেলে সামাজিক বৈষম্য কমে আসবে। দান করার ক্ষেত্রে স্বধর্ম-বিধর্ম তফাত করার প্রয়োজন নেই। যিনি জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া সবার নৈতিক দায়িত্ব। মাহে রমজান আমাদেরকে ক্ষুধার যন্ত্রণায় যারা সারা বছর কাতরায় তাদের মর্ম বেদনা উপলদ্ধি করার সুযোগ এনে দিয়েছে।

হাদিস শরীফে আছে, “রমজান হচ্ছে গরিবদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের মাস”। রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরিব অন্নবস্ত্রহীন মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য সবসময় উপদেশ দিয়েছেন। কুরআনে অসংখ্য জায়গায় দান-ছাদাকার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, “আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচার দিবসকে মিথ্যা বলে, সে সেই ব্যক্তি যে এতিমকে গলা ধাক্কা দেয় এবং মিসকিনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।” (সুরা আল মাউন-১-৩)

ধন-সম্পদ নিজের আরাম-আয়েশ এবং পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণের জন্য ব্যয় করার অনুমতি ইসলামে রয়েছে এবং অনাগত সন্তানের জন্য সঞ্চিত করে রাখাও পাপের কিছু নয়। কিন্তু অন্যায় হচ্ছে, সম্পদে গরিব-দুঃখীর হক আদায় না করা। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “এবং তাদের সম্পদে নির্দিষ্ট হক রয়েছে। ভিক্ষুক এবং বঞ্চিত (অভাবী অথচ লজ্জায় কারো কাছে হাত পাততে পারে না) সকলের হক রয়েছে।” (সূরা আল মা‘আরেজ:২৪-২৫) সূতরাং যার যা সম্পদ আছে তার থেকে অন্ততপক্ষে এক দশমাংশ সম্পদ অভাবীদের অভাব মোচনে খরচ করা ধর্মীয় দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

নিজে পেট পুরে খেয়ে পাড়া-প্রতিবেশী দরিদ্রের কোন খোঁজ খবর না নিলে তাকে শেষ বিচারের দিনে কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের সমাজে দেখা যায়, অনেকে দান-ছাদাকা করতে চায় না, ধনীরা আরো ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে। তাদের সম্পর্কে মহানবী বলেছেন, “মানুষ বলে আমার সম্পদ, আমার সম্পদ অথচ তিনটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সম্পদই শুধু তার। যা সে খেয়ে শেষ করেছে, যা পরিধান করে নষ্ট করেছে এবং যা দান করে জমা করেছে-তাই শুধু তার। আর অবশিষ্ট সম্পদ সে ছেড়ে যাবে এবং মানুষ তা নিয়ে যাবে”- ( মুসলিম শরীফ)।

উপরোক্ত আয়াতে কারীমা ও হাদীস শরীফের বক্তব্য দ্বারা সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়, দীন হীন নিস্ব মানুষের অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানের যোগান দানে আমাদের সবাইকে উদারহস্তে এগিয়ে আসতে হবে নচেত, আল্লাহ পাকের শাস্তি অবধারিত। শেষ করছি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দু‘ছত্র কবিতা দিয়ে “মৃত্যুর আর দেরি নেই তব-ফিরে চাও ফিরে চাও/পরম ভিক্ষু মোর আল্লাহর নামে/দরিদ্র-উপবাসীদের ভিক্ষা দাও!

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!