শুল্ক ফাঁকির বিদেশি সিগারেট সরাসরি চলে আসে নোয়াখালীর বাজারে

  • আপডেট সময় সোমবার, জুন ১২, ২০২৩
  • 159 পাঠক

নিজস্ব প্রতিনিধি

—————

জেলার অলিগলির পান সিগারেটের দোকানে হাত বাড়ালেই মিলছে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের বিদেশি সিগারেট। এসব সিগারেট চট্রগ্রাম বিমান বন্দর কিংবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় নিয়ে আসে এক শ্রেণীর অসাধু আমদানিকারক।

এরপর আমদানিকৃত সিগারেট সরাসরি চলে যায় চট্রগ্রাম হয়ে নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনীর বাজারে। সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা সংগ্রহ করে বিক্রি করেন। এসব সিগারেট এক প্রকার প্রকাশ্যে বিক্রি হলেও প্রশাসন নির্বিকার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অভিযান না থাকায় অসাধু আমদানিকারক চক্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সিগারেট আনতে উৎসাহী হচ্ছে। ফলে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক অসাধু আমদানিকারক কাস্টমস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বিদেশি সিগারেটের চালান খালাস করে নিয়ে যায়। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যে পরিমাণ সিগারেটের চালান জব্দ করে তা অত্যন্ত নগণ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী, আমদানিযোগ্য সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে বাংলায় সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ স্পষ্টভাবে লিখা থাকতে হবে।

এছাড়া বিভিন্ন ডিপ্লোম্যাটিক বন্ডেড ওয়্যার হাউস কর্তৃক সিগারেট আমদানির ক্ষেত্রে সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ বাংলায় ছাড়া অন্য যেকোনো ভাষায় লিখা থাকতে হবে। তবে বন্ডেড ওয়্যার হাউসের আমদানি করা সিগারেট খোলা বাজারে বিক্রির সুযোগ নেই। তাই খোলা বাজারের বাংলা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লেখা ছাড়া সিগারেট অবৈধভাবে আনা হচ্ছে এটি সহজেই বলা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নোয়াখালীর কতেক বাজারের বিভিন্ন দোকানে ডানহিল, বেনসন এন্ড হেজেজ, ৫৫৫, মোর, ইজি– লাইট, ইজি স্পেশাল গোল্ড, মার্লবোরো, ওরিস, বø্যাক, মন্ড, ৩০৩ সহ নানা ব্র্যান্ডের সিগারেট অনেকটা প্রকাশ্য বিক্রি হচ্ছে। এসব সিগারেট প্রবাসী ও অসাধু আমদানিকারকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন চট্রগ্রামের চোরাই সিগারেটকেন্দ্র্রিক সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের হাত ঘুরে বিভিন্ন মোড় এবং পাড়া মহল্লার পান সিগারেটের দোকানে চলে যাচ্ছে সিগারেটগুলো।

জানতে চাইলে নোয়াখালীর একটি বড় বাজারের বণিক সমিতির এক নেতা বলেন, নোয়াখালীর বাজারে শুধুমাত্র সিগারেট না অনেক পণ্যই চোরাই পথে আসছে। আসলে চট্রগ্রামের সাথে সংযোগ রেখে নোয়াখালীর বাজারে একটি অসাধু সিন্ডিকেট কাজ করছে। এসব সিন্ডিকেটের কাজই হচ্ছে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া। এখন প্রশাসন যদি এসব বন্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে, আমরা প্রকৃত দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীরা সাথে থেকে প্রশাসনকে সহায়তা করবো।

অবশ্য এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি হলে আমরা এখন দ্বিগুণ জরিমানা করছি। এ ব্যাপারে কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা সচেষ্ট রয়েছে। আমরা বিভিন্ন বিমান বন্দর কিংবা চট্টগ্রাম সমদ্র বন্দর দিয়ে আসা সিগারেটের চালান আটক করছি। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসা সিগারেট বাইরে বিক্রি হলে সেটি প্রশাসনের দেখা উচিত।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ বলেন, আমরা কাস্টমসের বিষয়টি দেখি। খোলা বাজারে শুল্ক ফাঁকির সিগারেট বিক্রি হলে সেটি পুলিশ– ও র‌্যাব দেখতে পারে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!