স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাই উন্নত রাষ্ট্রের ভিত্তি

  • আপডেট সময় শনিবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
  • 130 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।

জাপানের ‘ পলিটিক্যাল ফান্ড কনট্রোল ল’ বা ‘ রাজনৈতিক তহবিল নিয়ন্ত্রণ আইন ’ অনুসারে দেশটির আইনপ্রণেতাগণ রাজনৈতিক বিভিন্ন গ্রুপ হতে তহবিল সংগ্রহ করতে পারেন। অর্থ্যাৎ আইন অনুসারে ইহা নিষিদ্ধ নয়।

তবে দেশটির নির্বাচন আইন অনুসারে, নির্বাচনের আগে যদি কোনো গ্রুপ সরকারের সঙ্গে বাণিজ্যে সম্পৃক্ত থাকে, তাহলে তাদের কাছ হতে কোনো তহবিল গ্রহণ করা যাবে না।

এ ছাড়াও জাপানের আইন অনুসারে সংগৃহীত তহবিল ঘোষণা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে অতি সামান্য ব্যত্যয় ঘটেছে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে। ইহা প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি। প্রথমত, ২০২১ সালে তহবিল সংগ্রহের সময় মাত্র কয়েক লাখ ইয়েনের গরমিল ধরা পড়ছে ; ‘ধরা পড়ছে’ না বলে ‘চোখে পড়েছে ’ বললেই উপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করা হবে।

উল্লেখ থাকে, জাপানের ১ লাখ ইয়েনের মূল্য ৬৭০ ডলার মাত্র। আরো একটি অভিযোগ ওঠেছে যে, দাতা সংস্থার নাম সঠিকভাবে উল্লেখ এবং তহবিল প্রদানের তারিখ সঠিকভাবে প্রদর্শিত হয়নি।অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর অফিস বলেছে, ইহা ‘ক্লারিক্যাল’ বা ‘দাপ্তরিক’ ভুল হয়েেছে এবং তা সংশোধন করা হয়েছে। তাহলে কী হবে, জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ার কারণে গত মাসে প্রধানমন্ত্রী কিশিদা তার কেবিনেটের চার জন সদস্যকে ছাঁটাই করেছেন। নূতন কেবিনেট সদস্যরা স্বীকার করেছে, এই তহবিল সংগ্রহ নিয়ে কিছু অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে।

জাপানসহ উন্নত দেশগুলিতে তহবিল সংগ্রহের এই আইনগত বৈধতা রয়েছে। এর কারণ হলো, ওসব দেশ সাধারণত তহবিল সংগ্রহ নিয়ে এতটাই স্বচ্ছ হয়ে থাকে যে, ইহা সম্পর্কে সাধারণ্যের জ্ঞাতসারেই গৃহীত হয়। পক্ষান্তরে উন্নয়নশীল বিশ্বে এই ধরনের তহবিল সংগ্রহে কোনো আইনগত বৈধতা নেই। কিন্তু বাস্তবে তহবিল সংগ্রহের হোলি খেলা চলতে থাকে। কোনো রকমের জবাবদিহিতার বালাই থাকে না।

এসব দেশের ক্ষেত্রে দেখা যায়, কথিত চাঁদা গ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনো ধরনের উচ্চবাচ্য হয় না, কিন্তু ক্ষমতা হতে নেমে গেলেই বের হয়ে আসে থলের বিড়াল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আবার যাদের কাছ হতে চাঁদা গ্রহণ করা হয়, তাদের নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে।

তাই এক কথায় বলা যায়, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য যেই তহবিল সংগ্রহ করে থাকে, যাকে ‘সফট মানি’ বলা হয়; বর্তমানে ইহাকে ‘ননফেডারেল কন্ট্রিবিউশন’ অথবা ‘পেপার মানি’ও বলা হয়ে থাকে। কারণ এই অর্থ ডিজিটাল মুদ্রা, যেমন—বিটকয়েন, ক্রিপ্টোকারেন্সি অথবা কোনো ধরনের ভার্চুয়াল মুদ্রার মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় না।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এমন এক বিষয়—যা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সর্বমহলের সদিচ্ছা থাকিতে হয়। আমরা সম্প্রতি দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটর বব মেনেনডেজ স্বর্ণের বার, ডলার উপহার নিয়ে তার ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের তারই দলের কিছু সদস্য ইতোমধ্যেই তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। কেহ কেহ আগ বাড়িয়ে বলেছেন, তিনি পদত্যাগ না করলে তার কোনো কথাই তারা শুনবেন না। যে কোনো দল কিংবা যে কোনো জনপদে এই নৈতিকতা এবং জবাবদিহিতা তৈরি না হইলে সেখানে যেই তিমির জমে থাকে, তা সেই তিমিরেই থেকে যায়।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!