চীনা টিকা নিয়ে বিপাকে সৌদি প্রবাসীরা : বুস্টার ডোজের অপেক্ষা

  • আপডেট সময় সোমবার, নভেম্বর ১, ২০২১
  • 589 পাঠক

                ——————————————————

                  শেষ হচ্ছে ভিসার মেয়াদ, সিদ্ধান্ত জানাতে পারছে না কেউ

                                                                  ——————————————————

নিজস্ব প্রতিনিধি

————–

নোয়াখালী সদর উপজেলার ধর্মপুরের নিজাম উদ্দিন আবুধাবী থেকে দেশে এসেছেন প্রায় এক বছর আগে। সে সময়ে তিনি সেদেশে নিয়েছেন চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের দুই ডোজ টিকা। টিকা পেয়ে এক সময় খুশি হওয়া নিজাম উদ্দিন এখন পড়েছেন বিপাকে। কারণ সৌদি আরবে শুধু চীনা টিকা নিয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না তিনি।

তার প্রয়োজন অন্য কোনো টিকার বুস্টার ডোজ। নভেম্বরের শেষে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে, কিন্তু এখনো জানেন না কবে পাওয়া যাবে বুস্টার ডোজ। একই ধরনের সংকটে পড়েছেন সৌদী যাওয়ার প্রত্যাশি তার মতো অনেকেই। প্রতিদিনই সম্ভব সব জায়গায় খোঁজ নিচ্ছেন কবে পাওয়া যাবে বুস্টার ডোজ।

ক্ষুব্ধ নিজাম বলছেন, আমরা সৌদি প্রবাসীরা দুই মাস ধরে শুনছি বুস্টার ডোজ দেয়া হবে। শুধু আশ্বাসই দেয়া হচ্ছে। ভিসার মেয়াদ শেষ হলে এই বুস্টার ডোজ দিয়ে কী হবে? শুধু নিজামই নন, বুস্টার ডোজের অপেক্ষায় আছেন সৌদি আরব যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা প্রায় ৩০ হাজার প্রবাসী কর্মী। কেউ জানেন না তারা কবে পাবেন বুস্টার ডোজ।

জানা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত চারটি ভ্যাকসিন- ফাইজার বায়োএনটেক, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কভিশিল্ড, মডার্না ও জনসনের সঙ্গে সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাককে যুক্ত করেছে সৌদি আরব সরকার। চীনের ভ্যাকসিন নিলে দেশটিতে যাওয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, তারা সিনোফার্মের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা ব্যক্তিদের সে দেশে প্রবেশের সুযোগ দিতে পারে।

তবে সেক্ষেত্রে দেশটিতে ইতোমধ্যে অনুমোদিত হয়ে থাকা চারটি ভ্যাকসিনের যে কোনো একটির বুস্টার ডোজ হিসেবে নিতে হবে। অর্থাৎ এখন যারা সৌদি আরব যাবে তাদের এই চারটির যে কোনো একটির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে বুস্টার ডোজ নিতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সবার আগে সৌদি প্রবাসীদের বুস্টার ডোজ দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের কোথায় কীভাবে এই ডোজ দেয়া হবে তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে সিনোফার্মের টিকা বেশি দেয়া হয়েছে তাই তাদের পাসপোর্ট, টিকিট এবং ভ্যাকসিন কার্ড সঙ্গে নিয়ে বিএমইটিকে আবেদন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুস্টার ডোজের জন্য আগের নির্ধারিত ঢাকার সাতটি কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। ঢাকার সাতটি কেন্দ্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দেওয়া হবে তা ঠিক করা হয়েছে।

আইসিটি মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে টিকা সার্টিফিকেটের বিষয়ে কাজ করার জন্য। কিন্তু সব কিছুই নির্ভর করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কবে টিকা দেয়া হবে তার সিদ্ধান্তের ওপর। জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, টিকা দেয়ার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে পরামর্শ দেয় ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ (নাইট্যাগ) ।

কাদের টিকা দিতে হবে তারা সেটা সুপারিশ করে আমরা তখন সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা বাস্তবায়ন করি। সৌদি আরব প্রবাসীদের বুস্টার ডোজ দেয়ার ব্যাপারে নাইট্যাগ এখন পর্যন্ত আমাদের কিছু জানায়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা মেনে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো বুস্টার ডোজের বিষয়ে নির্দেশনা দেয়নি।

সৌদি আরবে যেতে বুস্টার ডোজের জন্য ডব্লিউএইচওর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের নির্দেশনা পাওয়া গেলে টিকার মজুদের ওপর ভিত্তি করে ফাইজারের টিকা দেয়া হবে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!