দিশারী ডেস্ক । ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।
বিএডিসির অর্থলিপ্সু কর্মকর্তা ,কর্মচারীদের যোগসাজসে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় অপরিকল্পিত ও অতিব নিম্মমানের পোল, কালভার্টের নামে বিপুল পরিমাণ সরকারী অর্থের হরিলুট হয়েছে।
বিএডিসির একজন প্রকৌশলী নোয়াখালী কার্যালয়ে সপ্তাহে ১/২ দিন নামখায়াস্ত হাজিরা দিয়ে ঢাকায় বসে বসেই এসব ভুয়া ও বানোয়াট প্রকল্পের কারিগর সেজেছেন।
জানা গেছে, এ প্রকৌশলী বিএডিসির অর্জিত অবৈধ অর্থে ঢাকায় একাধিক বাড়ি, গাড়ির মালিক রয়েছেন। তিনি শুধু নোয়াখালী নন, লক্ষীপুর ও ফেনীরও দায়িত্ব পালন করছেন। সেসব জেলায়ও একশ্রেনীর দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারের সখ্যতাই সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ জলে ভাসিয়ে দিয়েছেন এ প্রকৌশলী।
নোয়াখালীতে বিএডিসির নামে বাস্তবায়িত প্রায় পোল, কালভার্টেই নিম্মমানের কাজ করায় অনেকগুলো ধ্বসে পড়ারও উপক্রম হয়েছে।
এছাড়া, বিএডিসির অর্থায়নে যেসব খালের সংস্কার হয়েছে, তাও ছিল ভাওতাবাজির নামান্তর। সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে দৈনিক দিশারীর অনুসন্ধানে।
এ বিষয়ে জেলার একজন সচেতন নাগরিক বলেন, বিএডিসিতে খাল সংস্কার, কালভার্ট ও পোল নির্মাণের নামে কোটি-কোটি টাকার বরাদ্ধ হয়েছে সত্য। বেশির ভাগই কাজই কেতাবে রয়েছে, গোয়ালে নেই বললেই চলে। এছাড়া যেখানে কোন পোল বা কালভার্ট নির্মানের কোন দরকার নেই, সেখানেও মুষ্টিমেয় কিছু লোকের সুবিধার জন্যে তা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
————————————————————————————————-
বিএডিসির অর্থে নামখাওয়াস্ত পোল, খাল সংস্কার আর কালভার্টের নামে এ দপ্তরের ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টমহল কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেলেও বাস্তবতায় অনেকগুলো খাল, কালভার্ট কিংবা পোলের অসস্তিত্বই অসাড়। কোন কোনটি নেই বললেই চলে।
————————————————————————————————–
সূত্র জানায়, কোন এলাকায় পোল, কালভার্টের জরুরী কোন ধরনের প্রয়োজন না থাকলেও বিএডিসির কর্তাদের সুৃবিধা ধরিয়ে দিলে যে কোন অপ্রয়োজনীয় স্থানেও এ দপ্তরের অর্থায়নে সেসব করা সহজ ও সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে নোয়াখালীর একজন ঠিকাদার বলেন, এখানে যে বা যারাই কাজ করছেন তাদের বেশির ভাগই ছিলেন এ পেশায় নতুন ও অভিজ্ঞতাহীন। তারা শুধুমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তি ও বিএডিসির কর্তাদের প্রতিটি কাজের বিপরীতে নির্ধারিত কমিশন ধরিয়ে দিয়েই ঠিকাদার সেজেছেন। যে কারণে কোন জবাবাদিহিতায় এখানকার কোন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়না।
তবে এখানে ঠিকাদার না হয়েও অঘোষিতভাবে প্রতিটি কাজের ভাগ বাটোয়ারা করে দিচ্ছেন শহর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা। বিনিময়ে ঠিকাদারদের কাছ থেকে তিনি পেয়ে যান মোটা অংকের নগদ কমিশন। এভাবেই চলছে মূলত এ দপ্তরের রকমারী রোজনামচার উন্নয়ন।
সম্প্রতি এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিএডিসির নোয়াখালীর কার্যালয়ে গেলে দায়িত্ব প্রকৌশলী নুরনবীর কক্ষটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়।
এ সময় কার্যালয়ের লোকজন জানান, তিনি নোয়াখালীতে সপ্তাহে ১/২দিনের বেশি থাকেননা। তবে তারা ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কতগুলো প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এমন তথ্য দিতে না পারলেও ধারণা দিয়েছেন যে, এখানে শত-শত কোটি টাকার কাজ হয়েছে।
Leave a Reply