নোয়াখালীর উপকূলীয় তীর রক্ষা প্রকল্পে বেঙ্গলের এ কেমন প্রতারনা ?

  • আপডেট সময় বুধবার, মার্চ ৫, ২০২৫
  • 68 পাঠক

নিজস্ব প্রতিনিধি ।৫ মার্চ,২০২৫ খ্রিস্টাব্দ।

নোয়াখালীর মেঘনা নদীর উপকূলীয় নলের চরে জিও ব্যাগ ফেলে স্থানীয় অবকাঠামো রক্ষা প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বেঙ্গল বিল্ডার্স এন্ড কন্সট্রাকশন লিমিটেড। এছাড়া এক ঠিকাদারের অর্থ আত্মসাতের চেষ্টায় লিপ্ত থাকাসহ নানান অভিযোগ ওঠেছে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ২০২৩ সালে ৩৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের ১৩ প্যাকেজের প্রতিটিতে ৩৭৭ মিটার দৈঘ্যের ভাঙ্গন এলাকায় জিও ব্যাগ স্থানান্তরের দরপত্র আহবান করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ওই প্যাকেজের কাজগুলো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পক্ষে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড বরাদ্ধ পেয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সেসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সাথে চুক্তবদ্ধ হয়।

প্রকল্পের বাস্তবতায় ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি  থেকে কাজটি শুরু করে চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার কথা। এরমধ্যে খুলনা শিপ ইয়ার্ড লিমিটেডের সাথে ১১ নম্বর প্যাকেজের অংশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বেঙ্গল বিল্ডার্স এন্ড কন্সট্রাকশন লিমিটেড।

অত:পর ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই বেঙ্গল বিল্ডার্স থেকে ওই প্যাকেজের কাজ বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন আল খায়ের ট্রেডিং এন্ড কনস্ট্রাক্টিংয়ের স্বত্বাধিকারী প্রকৌশলী খালেদুজ্জামান।

তিনি যথারীতি কাজটির পুরো অংশে ডাম্পিং মেশিন দিয়ে ব্যাগ ফেলানোর উপযোগীতায় রুপান্তর করেন। এরপর বেশ কয়েক লাখ টাকার জিও ব্যাগ ফেলেন। যাতে আপাতপক্ষে, ভাঙ্গনরোধের সফলতার মুখ দেখা দিয়েছিল। এতে খুশির জোয়ারে বইতে থাকে উপকূলীয় বাসিন্দাদের মন।

কিন্তু, ইতোমধ্যে, বেঙ্গল ট্রেডার্স প্রকৌশলী খালেদুজ্জামানের সমুদয় পাওনা পরিশোধ না করে বর্তমানে অতিব লোভ-লালসার বশবর্তী হয়ে নিজেরা বাদ-বাকী কাজের বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়ে খালেদকে ওই কাজের বাস্তাবায়ন থেকে সরিয়ে দেয়।

খালেদ অভিযোগ করেন, তিনি এ কাজ করতে গিয়ে ভাঙ্গন এলাকায় ব্যাগ রাখার উপযোগী করাসহ কয়েক লাখ টাকার ব্যাগ ফেলেছেন। যাতে বেঙ্গল ট্রেডার্স তার পাওনা পরিশোধ না করে নিজেরাই বর্তমানে বাদ-বাকী কাজ করে খালেদকে ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারনা করছেন। এতে বেশ কয়েক লাখ টাকার দায় দেনার শিকার হচ্ছেন খালেদ। একইসঙ্গে তার ব্যবসায়িক সুনাম ও সুখ্যাতিও নষ্ট করছেন তারা।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় শফি নেতা, আজম খান, রুবেল, নিজাম জানান, ঠিকাদার প্রকৌশলী খালেদুজ্জামান এ কাজের হাত দেয়ার পর কাজটি সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে চলছিল। অত:পর বেঙ্গল ট্রেডার্স নিজেরাই বর্তমানে লোভ ও লালসার বশবর্তী হয়ে নিজেরাই হাত করার দায়িত্ব নেয়ার ফলে কাজটি একদিকে ধীর-গতিতে চলছে।

অন্যদিকে, অত্যন্ত নিম্মমানের বালুর সাথে স্থানীয় নিম্মমানের মাটি মিশ্রণ করে এসব ব্যাগ ভর্ত্তি করা হচ্ছে। এতে সামান্য জোয়ারের পানিতে দেশীয় মাটি ধুয়ে ব্যাগের প্রায় অংশই খালি হয়ে যায়। এছাড়া একটি জিও ব্যাগে যে পরিমাণ বালু থাকার কথা তাও নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এ বিষয়ে প্রকৌশলী খালেদুুজ্জামান বলেন, বেঙ্গল বিল্ডার্স আমার পাওনা টাকা আত্মসাত করাতে নানামুখী গল্প সাজাচ্ছে। তাদের প্রতারনার বিষয়ে দেশের বিভিন্নমহলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, মাত্র কিছু দিন পরেই মেঘনার শুরু হবে বর্ষার তর্জন, গর্জন।তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বর্ষার আগেই এ কাজটি সম্পন্ন করা না গেলে ফের হাজার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মেঘনার ভাঙ্গনে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালীর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, তাঁরা অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের লোকজন নিয়মিত কাজটি তদারকি করছেন।

১১ নম্বর প্যাকেজে নদীর তীর সংলগ্ন মসজিদটি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।

—————————————————————————————–

 

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!