নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : পরিবেশ আইন অমান্য অমান্য করে নোয়াখালীর সর্বত্র এখনও চলছে প্লাস্টিকের বস্তায় ধান ও চালের বিপণন। চাল ও ধান বাজারজাত করণে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও অনেকেই এই আইন মানছে না।
অথচ সরকারের কড়া নির্দেশ এই দুটি পণ্যের মোড়কে কোন প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু সরকারের নির্দেশ মানছেন না নোয়াখালীর কোন কোন চাল ব্যবসায়ীরা। তারা এখনও প্লাস্টিকের বস্তায় অবাধে পণ্যবাজারজাত করছেন প্রশাসনের নজরদারির অভাবে।
নোয়াখালীতে বেশ কয়েকবার চাল বাজারজাতকরণে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার বন্ধে প্রশাসনের পক্ষে অভিযান পরিচালিত হয়েছে, তারপরও চাল মার্কেটগুলোতে ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যাগ ফের ফিরে এসেছে। ফলে পরিবেশ দূষণের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরজমিনে জেলার প্রধান বাণিজ্যিক নগরী চৌমুহনীর বিভিন্ন মার্কেটসহ অন্যান্য বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান চাল মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানে ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যাগে বিক্রি হচ্ছে চাল। অন্য মার্কেটেও দেখা যায় একই অবস্থা। মার্কেটের বেশিরভাগ দোকানগুলো থেকে উধাও হয়ে গেছে পাটের বস্তা। প্রশাসনের ধারাবাহিক নজরদারি না থাকায় মার্কেটগুলোতে ফের প্লাস্টিকের বস্তায় সয়লাব হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে পাটের বস্তার দাম ৪৫-৫০ টাকা। অন্যদিকে একই ওজন বহনে সক্ষম প্লাস্টিকের বস্তা বাজারে কিনতে পাওয়া যায় মাত্র ১৫-২০ টাকায়। ফলে এক শ্রেণির অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা মুনাফা লুটতে অবৈধ প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করছে।
জেলার কয়েকটি বাজারের চাল মার্কেটের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চালকল ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের বস্তায় চাল সরবরাহ করায় তাদের প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করতে হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন চালকল মালিক জানান, সরকারের যেহেতু নির্দেশ আছে, আমরাও নির্দেশ মানতে বাধ্য। তবে ঢালাওভাবে সবই একাজ করেন না। প্লাস্টিকের বস্তা বাজাওে যেমন সহজে পাওয়া যায়, পাটের বস্তা তেমন সহজে পাওয়া যায় না। দামও বেশি। তাই সরকারকেও এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।
নোয়াখালীর একজন বিশিষ্ট নাগরিক এডভোকেট জামাল উদ্দিন ভূঁঞা বলেন, অনেক ব্যবসায়ীরা মুনাফাকে বড় করে দেখে, ফলে সরকারের মহতি উদ্যোগ অনেক সময় ভেস্তে যায়। তিনি পাটের বস্তা ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নজরদারির দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিকর প্লাস্টিকের ব্যাগ পরিবেশ দূষন ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে ওঠেছে। এটি ছাড় দেয়ার বিষয় নয়।
নোয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সেরাজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে হাট বাজারগুলোয় দীর্ঘদিন ধরে অভিযান বন্ধ রয়েছে। তারপরেও আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে প্লাস্টিক বস্তায় চাল বাজারজাকরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
এ ব্যাপারে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply