মাইমুনা আক্তার
————–
ঠাট্টা-বিদ্রুপ মানুষকে নিন্দিত করে তোলে, মানুষের ব্যক্তিত্বকে হালকা করে দেয়। বিদ্রুপকারীরা পরিবারে, সমাজে, কর্মক্ষেত্রে, সর্বত্রই মানুষের চোখের কাঁটা হয়ে ওঠে। কারণ সব মহলে এই অভ্যাস অত্যন্ত জঘন্য হিসেবে বিবেচিত। অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা কোনো সুশিক্ষিত, ভদ্র মানুষের কাজ নয়।
পবিত্র কোরআনেই এ ধরনের কাজকে মূর্খদের কাজ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করো, যখন মুসা তার গোত্রকে বলল, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন যে তোমরা একটি গাভি জবাই করবে। ’ তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের সঙ্গে উপহাস করছ?’ সে বলল, ‘আমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৬৭)
অনেকে ঠাট্টা-বিদ্রুপকে এতটাই হালকা বিষয় মনে করে যে কখনো কখনো ধর্ম নিয়েও বিদ্রুপাত্মক উক্তি করে বসে, কোনো ধার্মিক বা আলেমকে পেলে ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন বিদ্রুপাত্মক উক্তি করে বসে, যা অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয়। এ ধরনের লোকেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজেরাও ধর্মে বিশ্বাসী হয়; কিন্তু তারা যেহেতু মজা করতে পছন্দ করে তাই না জেনে ধর্ম নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করে মজা নেওয়ার চেষ্টা করে, যা মানুষকে কঠিন শাস্তির যোগ্য করে তোলে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতাবশত আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদের জন্য আছে অবমাননাকর শাস্তি। ’ (সুরা লুকমান, আয়াত : ৬)
নাউজুবিল্লাহ। ঠাট্টা-বিদ্রুপ এতটাই নিকৃষ্ট কাজ যে মহানবী (সা.) এই কাজকে ‘দূষণ সৃষ্টিকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘কোনো এক সময় মহানবী (সা.)-কে আমি জনৈক ব্যক্তির চালচলন নকল করে দেখালাম। তিনি বলেন, আমাকে এই পরিমাণ সম্পদ প্রদান করা হলেও কারো চালচলন নকল করা আমাকে আনন্দ দেয় না।
আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! সাফিয়্যা তো বামন নারী লোক, এই বলে তিনি তা হাতের ইশারায় দেখালেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তুমি এমন একটি কথার দ্বারা বিদ্রুপ করেছ, তা সাগরের পানির সঙ্গে মেশালেও তা উক্ত পানিকে দূষিত করে ফেলত। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫০২)
তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত ঠাট্টা-বিদ্রুপের অহেতুক ও নিন্দনীয় কাজ পরিহার করা। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
Leave a Reply