ট্রেনে আয়ের শীর্ষে একতা এক্সপ্রেস

  • আপডেট সময় বুধবার, নভেম্বর ৬, ২০২৪
  • 86 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ৬ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে গত সেপ্টেম্বরে চলাচল করা আন্তঃনগর ট্রেনগুলোয় যাত্রীর গড় অকুপেন্সি ছিল ১১০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ আসনের বিপরীতে যাত্রী পরিবহন করা হয় ১১০ জন। অন্যদিকে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে প্রতি ১০০ আসনের বিপরীতে ছিল ৯৪ যাত্রী।

দুই অঞ্চল মিলিয়ে বছরের নবম মাসে সর্বোচ্চ আয় করা ট্রেন একতা এক্সপ্রেস। ওই মাসে ট্রেনটি থেকে ৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা আয় করেছে রেলওয়ে। তবে একতা এক্সপ্রেস পরিচালনায় কত টাকা ব্যয় হয়েছে, সে তথ্য প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।

একতা এক্সপ্রেস পঞ্চগড়-ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে চলাচল করে। ঢাকার কমলাপুর ও পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামসহ ট্রেনটি সব মিলিয়ে ২৪টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। আপ-ডাউন মিলিয়ে গড় আসন সংখ্যা ১ হাজার ২৪২। যদিও গত সেপ্টেম্বরে ট্রেনটি প্রতি ট্রিপে গড়ে ১ হাজার ৪৫৯ যাত্রী পরিবহন করেছে।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একতা এক্সপ্রেসের কোনো সাপ্তাহিক বন্ধ নেই, যা ট্রেনটির আয়ে প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া আয় বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘ রুটেরও ভূমিকা রয়েছে। প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে চলাচল করে ট্রেনটি।

প্রশাসনিক ও পরিচালনার সুবিধার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের কার্যক্রম দুই অঞ্চলে বিভক্ত। এর মধ্যে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল। এ অঞ্চলে পরিচালনা করা হয় ৫৮টি আন্তঃনগর ট্রেন। এর মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে কম আয় করেছে সান্তাহার-বুড়িমারী রুটে চলাচল করা করতোয়া এক্সপ্রেস। ট্রেনটি থেকে ওই মাসে আয় হয়েছে ৩২ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

———————————————————————————–

সৌজন্যে : ভিন্ন দৈনিক।

———————————————————————————-

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে আসন সংখ্যার বিপরীতে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করেছে বরেন্দ্র, তিতুমীর ও ঢালারচর এক্সপ্রেস। সেপ্টেম্বরে এ তিন ট্রেনে প্রতি ১০০ আসনের বিপরীতে চলাচল করেছে ১১৮ যাত্রী। অন্যদিকে সবচেয়ে কম যাত্রী ছিল বনলতা এক্সপ্রেসে। ঢাকা-রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচল করা ট্রেনটিতে প্রতি ১০০ আসনের বিপরীতে গত সেপ্টেম্বরে যাত্রী ছিল ৯৮ জন।

পূর্বাঞ্চলে মোট ৫৪টি আন্তঃনগর ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ নিয়ে গঠিত এ অঞ্চলে গত সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি আয় করা ট্রেন কক্সবাজার এক্সপ্রেস। ওই মাসে ট্রেনটি থেকে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর চালুর পর থেকেই কক্সবাজার এক্সপ্রেস যাত্রী চাহিদায় শীর্ষে থেকেছে। রেলওয়ের বাণিজ্যিক ও মার্কেটিং বিভাগের হিসেবে অনুযায়ী, চালুর পর থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রেনটি থেকে আয় হয়েছে মোট ৩৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একটি ট্রেন পরিচালনা করতে রেলের পরিচালন ব্যয় প্রায় ৫ লাখ টাকা। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে প্রতিটি ট্রিপে আয় হয় গড়ে ৭-৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে প্রতি ট্রিপে ২-৩ লাখ টাকা মুনাফা হয়।

পূর্বাঞ্চল রেলের সবচেয়ে কম আয় করা ট্রেন ঢাকা-মোহনগঞ্জ-ঢাকা রুটের হাওর এক্সপ্রেস। ট্রেনটি গত সেপ্টেম্বরে ৫০ লাখ টাকার মতো আয় করেছে। একই মাসে পূর্বাঞ্চল রেলে সবচেয়ে বেশি যাত্রী ছিল ঢাকা-কিশোরগঞ্জের মধ্যে চলাচল করা এগারসিন্দুর গোধূলি ট্রেনে।

প্রতি ১০০ আসনের বিপরীতে যাত্রী পরিবহন হয়েছে ১০৯ জন। আর সবচেয়ে কম যাত্রী ছিল চট্টগ্রাম-জামালপুর রুটের বিজয় এক্সপ্রেসে। সেপ্টেম্বরে ট্রেনটি প্রতি ১০০ আসনের বিপরীতে ৬৭ যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে।

রেল ভবনে গতকাল অনুষ্ঠিত রেল রুট র‍্যাশনালাইজেশন শীর্ষক এক সভায় সেপ্টেম্বরের ট্রেন চলাচলের এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। তবে সভায় শুধু ট্রেনগুলোর আয়ের তথ্য দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সভায় উপদেষ্টা বলেন, ট্রেনগুলোর আয়ের পাশাপাশি পরিচালন ব্যয়ের তথ্যও তুলে আনতে হবে।

দেশের অনেকগুলো রুটে পর্যাপ্ত চাহিদা না থাকলেও ট্রেন চলে। আবার অনেক রুটে যাত্রী চাহিদা থাকলেও ট্রেনের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এমন প্রেক্ষাপটে যাত্রীর চাহিদা অনুযায়ী রুটগুলো পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্যে রুট র‍্যাশনালাইজেশনের উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

সভায় মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে রেখে এর জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। এ কমিটি ট্রেনের রুট র‍্যাশনালাইজেশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো এগিয়ে নেবে।

এর আগে রেল ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোডের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা করেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন,  বিগত সময়ে চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক ও ব্যক্তি পর্যায়ের আগ্রহের কারণে বিভিন্ন রুটে ট্রেন চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ট্রেনের স্টপেজ দেয়া হয়েছে। আমরা এসব ট্রেন পুনর্বিন্যাসের উদ্যোগ নিয়েছি। এতে যাত্রীর চাহিদাকেই আমরা একমাত্র প্রাধান্য দেব।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!