কৃতজ্ঞ বান্দারা আল্লাহর কাছে প্রিয়

  • আপডেট সময় বুধবার, নভেম্বর ২০, ২০২৪
  • 4 পাঠক

আবদুর রহমান তাশরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪

আল্লাহ তাআলার প্রতি বান্দার কৃতজ্ঞতা অনেক বড় ইবাদত। বান্দার কৃতজ্ঞতা বা শোকর গুজারিতে আল্লাহ তাআলা অনেক খুশি হন। অকৃতজ্ঞতায় অত্যন্ত নারাজ হন। কৃতজ্ঞতা মুমিনের গুণ।

এটা নবীদের শিক্ষা ও পথ। ঈমান ও ঈমানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা আল্লাহ তাআলার শোকর ও কৃতজ্ঞতার বিভিন্ন পর্যায় ও রূপ। পক্ষান্তরে কুফর, শিরক ও পাপাচার হচ্ছে আল্লাহ তাআলার অকৃতজ্ঞতার বিভিন্ন পর্যায় ও রূপ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়ার আদেশ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘ যদি তোমরা আমাকে স্মরণ করো আমি তোমাদের স্মরণ করব। আর তোমরা আমার কৃতজ্ঞতা আদায় করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৫২)

বান্দার কৃতজ্ঞতাকে আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে কৃতজ্ঞ বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভ ও তার শাস্তি থেকে মুক্তির উপায় বলা হয়েছে।

———————————————————————————————-

ইরশাদ হয়েছে, ‘ তোমাদের শাস্তিতে আল্লাহর কি কাজ, যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও এবং ঈমান আনো ? আল্লাহ পুরস্কারদাতা, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৪৭)

———————————————————————————————-

শোকরের প্রতিদান শুভ, কিন্তু না-শোকরির পরিণাম অশুভ। শোকর আদায় করলে নিয়ামত আরো বাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘ তোমরা কৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমি তোমাদের বাড়িয়ে দেব আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি কঠোর।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৭)

কৃতজ্ঞদের পরকালে বিশাল প্রতিদানের ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ। ইরশাদ হয়েছে, ‘ অবশ্যই আল্লাহ কৃতজ্ঞদের প্রতিদানে ভূষিত করবেন। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৫)

মহানবী (সা.)-এর জীবনে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা

আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ ও সিরাতে আল্লাহ তাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতার যে শিক্ষা আছে, তা অতুলনীয়। নবীজি (সা.) নিজেও ছিলেন আল্লাহর শ্রেষ্ঠ কৃতজ্ঞ বান্দা। উম্মতকেও তিনি আল্লাহর কৃতজ্ঞতার সর্বোত্তম শিক্ষা দান করেছেন।

মুগিরা ইবনে শোবা (রা.) বলেন, নবী (সা.) এত দীর্ঘ নামাজ পড়তেন যে তার পদযুগল ফুলে যেত। এ সম্পর্কে তাকে বলা হলে তিনি বলতেন, আমি কি আল্লাহর অতি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না ? (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৩০; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭১২৫)

—————————————————————————-

আবু বাকরা নুফাই ইবনুল হারিস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কোনো আনন্দের বিষয় এলে বা আনন্দের সংবাদ দেয়া হলে তিনি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সিজদায় লুটিয়ে পড়তেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৭৪)

—————————————————————————-

আল্লাহর সাহায্য ও তাওফিক ছাড়া তার কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়া সম্ভব নয়। তাই আল্লাহর রাসুল (সা.) উম্মতকে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ হওয়ার তাওফিক প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন।

মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) তার হাত ধরে বললেন, হে মুয়াজ ! আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে ভালোবাসি। আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে ভালোবাসি। এরপর বললেন, তোমাকে অসিয়ত করছি হে মুয়াজ, তুমি প্রতি নামাজের পর এই দোয়া করতে ভুলে যেয়ো না।

তিনি শেখান, ‘ আল্লাহুম্মা আইন্নি আলা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিক’। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার জিকির, শোকর ও উত্তম ইবাদতের বিষয়ে আমাকে সাহায্য করুন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২২; সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৩০৪)

নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়াগুলোর একটি বিরাট অংশ এমন, যেখানে আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার তাওফিক প্রার্থনা করা হয়েছে। আল্লাহ আমাদের তার কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!