শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়ম

  • আপডেট সময় সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩
  • 270 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হচ্ছে। নানান অনিয়ম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বেসরকারি শিক্ষা প্রকিষ্ঠানগুলো। বলা যায়, এগুলোতে অবাধে চলছে লুটপাট। প্রায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষক-কর্মচারির দুর্নীতিবাজ অংশ মিলে তৈরি করে সিন্ডিকেট। খোদ সরকারি সংস্থার জরিপে বেরিয়ে এসেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির উদ্বেগজনক তথ্য।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক থেকে শুরু করে দেশের প্রায় সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই অনিয়ম-দুর্নীতি, প্রভাব বিস্তার ও ক্ষমতার অপব্যবহার ব্যাপকভাবে জেঁকে বসেছে। দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ৩৮ হাজার। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০ হাজার।

এছাড়া প্রায় এক হাজার সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষায়িত সংস্থা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) পরিচালিত জরিপে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির চিত্র ভেসে ওঠেছে। তদন্তে যেসব বিষয় উদ্ঘাটন হয় তার মধ্যে রয়েছে-প্রতিষ্ঠানে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, নিয়োগ ও ভর্তি-বাণিজ্য, টিউশন ও অন্যান্য ফি, খাতা-কলম-কাগজ এবং স্কুল ড্রেস-ডায়েরি ইত্যাদি বিক্রি থেকে লব্ধ আয়ের একটি অংশ হাতিয়ে নেওয়া, অবৈধ ও নিম্নমানের গ্রন্থ পাঠ্যভুক্তি, শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদে চাকরি প্রদান ও এমপিওভুক্তি, প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি-গাড়ি ক্রয়, ভবন নির্মাণ, বিভিন্ন ধরনের সংস্কার ও উন্নয়ন কাজের নামে অর্থ লুট প্রতিষ্ঠানের জমি বিক্রি ও স্থাপনা দখল করা ইত্যাদি।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের গচ্ছিত অর্থ এ ব্যাংক থেকে ও ব্যাংকে এফডিআর করে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে। অসাধু শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের জিম্মি করে কোচিং-প্রাইভেটে বাধ্য করার ঘটনা পুরনো। আবার পরিচালনা কমিটির অনেকের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি গিলে খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কেবল উল্লিখিত ডিআইএ’র তদন্তেই ৮৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩১৬ একর জমি বেহাত হওয়ার তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

অনেক সময় দুর্নীতি নির্বিঘ্ন করতে এই দুর্নীতিবাজরা প্রতিবাদি শিক্ষক-কর্মচারির ওপর নিপীড়ন শুরু করে। কাউকে বরখাস্ত, কাউকে শোকজ বা বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়।

এছাড়া, এমপিওভুক্তি, নিয়োগ, বদলি, পাঠদানের অনুমতিসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ দিতে হয় সরকারি দপ্তর, বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, রাজনৈতিক নেতা, প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। এমপিওভুক্তির কাজে চার স্থানে ‘হাদিয়া বা সম্মানি’ দিতে হয়।

যখন সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দিবো কোথা ’এই অবস্থা হয়,তখন আসলেই কিছুই করার থাকে না। শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে শুরু করে অসাধু শিক্ষক, পরিচালনা কমিটি, রাজনৈতিক নেতা-সবাই কমবেশি জড়িত দুর্নীতির সঙ্গে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট বন্ধ না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বিচারহীনতা। অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করার সময় এসেছে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!