মতলব হাসিলের রাজনীতির অধ:পতন জরুরী

  • আপডেট সময় বুধবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪
  • 45 পাঠক

আকাশ মো. জসিম । ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

সরকার ব্যবস্থায় পেছনের দিনগুলোর কিছু অন্যায়, অবিচার ও অন্যায্যতার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসায় উতরে ওঠছেন সমাজের কিছু হিংস্রপ্রবণ মানুষ। রাজনীতির গড্ডালিকা প্রবাহে মতলব হাসিলে গা ভাসাতে চলছেন তারা।

আওয়ামীরা ১৫ বছরে যেটা করেছে ১৫ দিনেই তারাই সেসবের প্রতিবাদে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠছেন যেন। তাদের এমন হিংস্রলীলায় শামিল হচ্ছেন সমাজের কিছু অচ্ছুৎ প্রকৃতির মানুষ নামের দানবেরাও।

একেকজন, একেককভাবে ব্যক্তিগত ক্রোধ, প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠছেন। অথচ, ৫ আগষ্টের আগেও এমন সমাজব্যবস্থার রুপরেখা দেয়নি ছাত্র-জনতা। তাঁদের একটাই দাবি ছিল, একটি ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার নিশ্চয়তা।
যেখানে রাষ্ট্রটাই পরিচালিত হতে পারে একটি ন্যায্যতা আর নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার নিশ্চয়তায়। কিন্তু, ৫ আগষ্টের পর সব যেন ভুলে চলছি আমরা।

ইতোমধ্যে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শামিল থাকা প্রায় ছাত্ররাও ছাত্রত্ব না পেরিয়ে রাজপথে প্রতিদিনই ব্যস্ত সময় পার করছেন নিজেদের ব্যক্তিগত ভবিষ্যৎ বির্নিমাণের আরেকটি উদ্যমতায়। জাতীয় নাগরিক কমিটি সর্বশেষ তার বর্হিপ্রকাশ।
গত ক’দিন ধরে দেশের বিভিন্ন থানায়, আদালতে একের পর এক মামলা হয়েছে। সবগুলোর আসামী তালিকায় শুধুমাত্র পেছনের বয়ানে, পেছনের সরকারেরাই।

অথচ জানামতে, পেছনের প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিষয়ে থানায় একটি ফিরিস্তিও প্রতিটি সংরক্ষিত রয়েছে। কিংবা নিশ্চয় থাকারই কথা। যদি কেহ মনে করেন, তিনি সে ফিরিস্তির বয়ানের অশুদ্ধতায় ন্যায় বিচার পাননি, তাহলে নতুনভাবে একই ঘটনায় অন্য কেহ বাদী হয়ে পেছনের ফিরিস্তির বিরুদ্ধে পুন:তদন্ত চেয়ে ঘটনার বিচার চাওয়াই ছিল উত্তম ও যুক্তিযুক্ত।

কিন্তু, তা না করে একেকজন একেকজনকে ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে শায়েস্তা করার রাজনৈতিক অভিপ্রায়ে যেসব অভিযোগ দায়ের হয়েছে আর হচ্ছে নিশ্চয় তা নিন্দনীয় ছাড়া প্রশংসনীয় কাজ নই। একটি হিংসার পরণতি প্রকৃত সত্যতাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে বলে তা ন্যায় বিচারেরও পরিপন্থিীর চেয়ে কম কি !

তাছাড়া, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গেলে কোথাও না কোথাও ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে থেকেও প্রতিবাদের পথ সহজ, সুন্দর ও স্বাভাবিক চর্চা জননন্দিত হয়না। কোথাও না কোথাও নিয়তির মতিতেই ভুলের গতির পদচিহ্নটা পরিস্কারভাবে অংকুরিতও হয়। এটাই প্রকৃতির বিধি-বিধান। সুতরাং, একটি অসত্যের চর্চা করতে গিয়ে যেন আরেকটি মিথ্যের বেসাতি রচিত হয়।

আমাদের জানান রয়েছে, ২০১৩ সালে নোয়াখালাীর দত্তেরহাটে শ্রমিক দলের এক কর্মী , আওয়ামী লীগের কতেক উচ্ছৃঙ্খল কর্মী ও পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়। এ ঘটনায় সে সময়ে নিহতের বাবা নোয়াখালীর আদালতে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন। আবার, থানায়ও এ ঘটনার বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে পুলিশের আরেকটি আমলনামা।

একটা পর্যায়ে আওয়ামীদের চাপে নিহতের বাবার অভিযোগটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন থানা থেকেই নিষ্প্রয়োজন নিয়ে আদালতে নিষ্পন্ন হয়। ইতোমধ্যে, নিহতের বাবা ফের একই ঘটনায় আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে সে সময়ের অভিযোগনামায় এখানকার মতো এতো ধরনের অজানা, অচেনা কিংবা ঘটনায় সম্পৃক্ত নই ধরনের বিবাদীর নাম অর্ন্তভুক্ত হয়নি বলে জানা যায়।

মনে রাখা দরকার, একটি সত্যের বিচার চেয়ে অন্যায্য, উদ্দেশ্যপ্রবণ ও অন্যায়ভাবে কেহ যেন আরেকটি হয়রানি আর নির্মমতার শিকার না হয়। এটি সভ্য সমাজব্যবস্থায় কোনভাবেই কাম্য নই।

বিগত আওয়ামীরা কথায় কথায় গায়েবী মামলা, তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে সাজা, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় ও নিপীড়নমূলকভাবে হয়রানি কিংবা বাড়ি ছাড়া, জামাতীদের মিথ্যে মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রদান, গণতন্ত্র নিয়ে নানান তামসা করেছে বলেই তো জনগণ আওয়ামীদের প্রত্যাখ্যান করে জনপ্রত্যাশাকে করেছে বিজয়। আমরা যেন সে বাস্তবতা সহজে ভুলে প্রতিহিংসার সাগরে নিমজ্জিত না হই। একটি ঘৃণ্য ইতিহাস আরেকটি ঘৃণ্য ইতিহাসের জনক হয়।

আওয়ামীরা রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যক্তিগত ক্রোধ, প্রতিহিংসা চরিতার্থ আর খায়েসপুরণে ব্যবহার করেছিল। আর বিভিন্ন বাহিনীরাও আওয়ামীদের অবৈধ খায়েসপূরনে ব্যবহৃত হয়েছিল বলেই তো একটা পর্যায়ে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আওয়ামীর বিরোধী হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধেও আস্থা হারায়। সুতরাং, আগামী দিনগুলোয় রাষ্ট্রের কোন শৃখলাবাহিনীও কারো ব্যক্তিগত স্বার্থ, সুবিধায় ব্যবহৃত হবেন বলে আমরা মনে করছিনা।

একইসঙ্গে, কোন রাজনৈতিক দলও সরকার ব্যবস্থায় পুলিশকে ব্যক্তিগত চাকর বাকরের ন্যায় ব্যবহার করে নিজের দেশ ও দলকেও বিপর্যস্ত, সর্বনাশ কিংবা সর্বশ্বান্ত করবেননা বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। অতএব আমরা যেন, সততায়, সত্যতায়, ন্যায়পরায়ণতায় আর একটি সামাজিক সভ্য বিচার ব্যবস্থার চরম উদার হই। সাধুতাই শৃঙ্খলিত হই।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!