কোনটা রেখে কোনটা সামলাবেন ?

  • আপডেট সময় শনিবার, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৪
  • 62 পাঠক

——————————————————

চাপে সাধারণ মানুষ
——————————————————

দিশারী ডেস্ক। ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

যেন পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সামগ্রীর দাম। কোনটাই থেমে নেই। মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের দাম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বাসস্থানের ব্যয় অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় চাপে দিশেহারা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা। জীবনযাপনের ব্যয় যেভাবে বেড়েছে, সেই হারে বাড়েনি আয়-রোজগার। শিগগিরই এসব সমস্যা সমাধানের কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিকল্প ভাবছেন অনেকেই।

নিত্যপণ্য কেনাকাটায় কৃচ্ছ্রতাসাধন, গুরুতর অসুস্থ না হলে চিকিৎসা না নেয়া, সন্তানদের নামিদামি ও দূরবর্তী স্কুল-কলেজ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাড়ির আশপাশের সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা এবং উচ্চ ভাড়ার ফ্ল্যাট ছেড়ে শহর থেকে দূরে কমভাড়ায় বাসা নেয়ার প্রবণতাও লক্ষ করা গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সব মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে সরকারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

‘ নির্বাচনের পর গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। কোনো সবজি ৮০ টাকার নিচে পাই না। মুরগির দামও বেশি। বাচ্চারা শুধু মাংস খেতে চায়। খুব অসহায় লাগে। সবজি দিয়ে কোনোমতে দিন চালাচ্ছি।’

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালেন একজন রফিকুল ইসলাম। প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করা রাজধানীর কাজীপাড়ার রফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বলেন, ‘ ছোট সাইজের একটি লাউয়ের দাম ৮০ টাকা। বেগুন যদিও আজ ৮০ টাকা দিয়ে কিনেছি। দুদিন আগে কেজি ১০০ টাকায় কিনেছি। একজন বিক্রেতা আমাকে জানালেন শালগমের দাম বেশি, তাই বিক্রিই করছেন না। মাছ কেনার কথা তো বাদই দিলাম।’

নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করতে গিয়ে রফিকুল আরও বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী না হয় অভাবটা বুঝি, তাই মেনে নিই। কিন্তু বাচ্চারা তো মানতে চায় না। তারা শুধু মাংস খেতে চায়। এই কষ্টের কথা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’

আরেকজন বেসরকারি চাকরিজীবী আইনুল হক বলেন,  অবস্থা এমন হয়েছে যে বাজার করতে গেলে সংসারের অন্যান্য খরচে কুলায় না। বাসা ভাড়া, চিকিৎসা ও শিক্ষাব্যয় বহন করা যায় না। বাধ্য হয়ে পুষ্টির সঙ্গে আপস করতে হচ্ছে। বাচ্চাদের ডিম ছাড়া অন্য কোনো প্রোটিন দিতে পারি না। অথচ তারা চায় মাংস।

আইনুল বলেন, সরকার পদক্ষেপ না নিলে মধ্যবিত্তের ন্যূনতম পুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। কৃচ্ছ্রতাসাধন করেও কোনোমতে খেয়েপরে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে গেছে।

এমন অবস্থা স্বল্প আয়ের সব মানুষের। জীবনযাপনের ব্যয়ের সঙ্গে তারা আর পাল্লা দিতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের চাপে দিশেহারা সবাই। কবে কীভাবে সমাধান হবে তার উত্তরও খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,  জাতিসংঘের বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি (ফাও) বাংলাদেশে একটি সার্ভে করেছিল। সেখানেও তারা দেখিয়েছে, মানুষ বেঁচে থাকার জন্য খরচ কাটছাঁট করছে। পুষ্টি চাহিদা মেটাতে পারছে না। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির শিকার। স্থিতিশীলতা যতক্ষণ না আসবে ততক্ষণ এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। আমরা যদি আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারতাম তাহলে ব্যয় বাড়লেও অবস্থার অবনমন রোধ করতে পারতাম। আয়বর্ধক কর্মসূচি না থাকায় মানুষের ওপর চাপ পড়ছে। এর সঙ্গে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব ও বাজার কারসাজি।

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাসাভাড়া বাড়ে, এটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। নতুন বছরেও বাসা ভাড়া বাড়ছে। এরই মধ্যে বেশির ভাগ বাড়িতে ভাড়া বাড়ানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। অনেক বাড়ির মালিক কৌশলের আশ্রয় নিয়ে বিদ্যুৎসহ সব বিল আলাদা করে দিয়ে বলছেন আমি বাসা ভাড়া বাড়াচ্ছি না। আর এতে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাওয়া সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে। ভাড়াটিয়াদের অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, বছর তিনেক বেতন বাড়ে না। অথচ সব কিছুরই খরচ বেড়েছে। বাড়তি ভাড়া কোথা থেকে দিব ?

আমাদের দেশে বাড়ির মালিকরা ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়িয়ে থাকেন। তারা ভাড়াটিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে ভাড়া নির্ধারণ করেছেন, এমন নজির নেই বললেই চলে। বেশির ভাগ বাড়ির মালিকদের ভাবটা এমন থাকে, ভাড়া দিতে না পারলে বাসা ছেড়ে দেন। অন্য কোথাও যান।

বেসরকারি চাকরিজীবী মোখলেসুর রহমান। কারওয়ান বাজারে ১৫ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, গত বছর দেড় হাজার টাকা এবং তার আগের বছর দেড় হাজার টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ বছর আবার ২ হাজার টাকা ভাড়া বাড়ানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আমার চাকরিতে বেতন বাড়ে না দুই বছর। চাল, ডাল, তেলসহ সব কিছুরই দাম বেড়েছে। প্রতি মাসেই ধারদেনা করি। পাড়ার দোকান থেকে বাকিতে জিনিস কিনি। এখন এই বাড়তি ভাড়া কোথা থেকে দেব ?

মোখলেসুর রহমান বলেন, ভাড়া না বাড়ালে বাড়িওয়ালা বাসা ছেড়ে দিতে বলেছেন। অথচ বাসার পাশেই ছেলের স্কুল। আমার অফিস। নতুন বাসার খোঁজ করেছি। এখন তিন রুমের বাসায় থাকি। অথচ এই ভাড়ায় এখন দুই রুমের বাসাই হয় না। কী করবে? বুঝতে পারছি না।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়েছে। সব কিছুরই দাম বেশি। এমন সময়ে বাড়ির মালিক হিসাব ছাড়া ভাড়া বাড়ালে ভাড়াটিয়াদের পক্ষে তা জোগাড় করা সম্ভব হবে না। ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অমানবিক।

বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে, ভাড়া নির্ধারণে ভাড়াটিয়াদের মতামত নেয়া বাধ্যতামূলক। বাড়ির মালিক প্রতি দুই বছর পর পর যৌক্তিক পরিমাণে ভাড়া বাড়াতে পারবেন। অগ্রিম হিসাবে এক মাসের ভাড়ার বেশি নেয়া যাবে না। বাড়িওয়ালা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে ধার্যকৃত ভাড়ার সঙ্গে বেশি জামানত, প্রিমিয়াম অথবা কোনো সালামি গ্রহণ করতে পারবেন না।’ কিন্তু এ আইন সুরক্ষা দিতে পারছে না ভাড়াটিয়াদের।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক প্রতিবদনে, গত ২৫ বছরে নিত্যপণ্যের দামের তুলনায় রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির হার প্রায় দ্বিগুণ, বাড়ি ভাড়া বেড়েছে গড়ে ১০ শতাংশ। এর মধ্যে বস্তির ঘর ভাড়া বেড়েছে ১১ শতাংশ এবং মেস রুমের ভাড়া গড়ে ৮ শতাংশ।

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘ভাড়াটিয়াদের ভাড়া পরিশোধের রশিদ দেওয়া হয় না বললেই চলে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ বাড়ির মালিকরা প্রভাবশালী। ভাড়াটিয়াদের ওপর যে ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা তাই মেনে নিয়ে থাকেন। তারা এসব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো কথা বলতে পারেন না।’

মৃত স্বামীর পেনশনের টাকায় দুই সন্তানকে নিয়ে চলেন মাগুরার রওশন আরা বেগম। অনেক দিন থেকেই তার হাত, কাঁধ ও কোমরে ব্যথা। এখন সে ব্যথা এমন পর্যায়ে গেছে যে মাথা ব্যথাও হয় হাত ও কাঁধের ব্যথার সঙ্গে। সহ্য করতে না পেরে গত সপ্তাহে গিয়েছিলেন ডাক্তারের কাছে। যথারীতি ডাক্তার এক্সরেসহ বেশ কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন তাকে। পরীক্ষা করাতে গিয়ে জানতে পারলেন এসব পরীক্ষার জন্য মোট ৮ হাজার টাকা খরচ হবে। টাকার পরিমাণ শুনে পরীক্ষা না করিয়েই বাড়ি ফেরেন রোশন আরা বেগম।

তিনি বলেন, পেনশন আর সন্তানদের অল্পকিছু আয় দিয়ে কোনো রকমে চলে তার সংসার। মাস শেষ হতেই টাকা শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় এত টাকা দিয়ে তিনি টেস্ট করাবেন কীভাবে ?

রওশন আরও জানান, ছেলেমেয়েরা যখন একটু ইনকাম শুরু করলেন তখন ভেবেছিলেন এবার হয়তো একটু চিন্তামুক্তভাবে চলতে পারবেন। কিন্তু নিত্যপণ্যের এই বাড়তি দামে এখনো তার সেই নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। তাই চিকিৎসা করানোর বাড়তি টাকা জোগাড় করতে পারছেন না। ব্যথানাশক ওষুধ খেয়েই থাকতে হচ্ছে।

অন্যদিকে সাদিক আহমেদ ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একটু বেতন বাড়িয়ে নতুন চাকরিতে ঢুকেছেন। গত কিছুদিন ধরে শাররিকভাবে একটু অসুস্থবোধ করাসহ ডান হাতের বুড়ো আঙুলের চোট নিয়ে গিয়েছিলেন সরকারি হাসপাতালে। তবে চিকিৎসা ভালো না পেয়ে যান একটি মধ্যমমানের বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু ডাক্তারের কাছে যাওয়ামাত্রই বেশ কিছু ওষুধ আর টেস্ট দিয়েছেন।

সাদিক বলেন, ডাক্তার দেখানো আর ওষুধ কিনতেই আমার প্রথম দিন গেছে ২ হাজার ৪০০ টাকা। আর সব টেস্টের খরচ পড়বে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। টেস্টের পেছনে আর টাকা খরচ করা সম্ভব হবে না। ভেবেছিলাম নতুন চাকরিতে যে বেতন বেড়েছে তা দিয়ে সঞ্চয় করতে পারব, যা চিকিৎসাসহ জরুরি কাজে ব্যবহার করতে পারব। কিন্তু বাড়ি ভাড়া, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল, জিনিসপত্রের দাম সবকিছুই এমন হু হু করে বাড়ছে যে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যেভাবে কিছুদিন পরপরই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে সেভাবে তো আর বেতন বাড়ে না। তাই খেয়েপরে বাঁচাই এখন বড় বিষয় হয়ে গেছে। চিকিৎসার এই খরচ এখন অনেকটাই বাড়তি বোঝা আমার কাছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাপনের ব্যয় গত বেশ কয়েক বছর ধরেই বেড়ে চলেছে। বলা চলে করোনার সময় থেকেই। কিন্তু মানুষের আয় অতটা বাড়েনি। বরং করোনার কারণে কমেছে। ফলে মানুষের এখন সঞ্চয় করার ক্ষমতা কমে এসেছে। যার কারণে অসুখের মতো হঠাৎ কোনো খরচ এলে সে যে সঞ্চয় থেকে খরচ করবে, তা পারছে না। ফলে ধারদেনা করতে হয়।

আবার সেই দেনাও পরিশোধ করতে পারছে না তারা। কারণ বাড়তি আয় তো নেই। এর ফলে একসময় নিজের নিত্যদিনের খরচ কমিয়ে বিশেষ করে খাবারের খরচ কমিয়ে এনে ধারের টাকা পরিশোধের চেষ্টা করেন তারা। এর ফলে আবার তাদের অন্য অসুখ বা স্বাস্থ্যহানি ঘটে, যা উদ্বেগজনক।’

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সঙ্গে হু হু করে বাড়ছে শিক্ষার ব্যয়ও। নতুন বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি ফি ও বেতন বাড়ানোর কারণে বিকল্প ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন অভিভাবকরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নীলক্ষেতের স্টেশনারি দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসকে কেন্দ্র করে প্রতিটি শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুধু কাগজের দামটা স্থিতিশীল আছে। তবে করোনার মধ্যে কাগজের দাম দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়া কলম, পেনসিল, রাবার, স্কেল, রংপেনসিল, স্ট্যাপলার, পিন, স্কুলের ব্যাগসহ সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের দাম নতুন বছরে ১০ শতাংশ করে বেড়েছে। নতুন বছরের প্রতিটি শ্রেণির গাইড বইয়ের দামও দ্বিগুণ হয়েছে।

নীলক্ষেতের ‘ আলমাস বই বিতান ’ এর মালিক আলমাস হোসেন বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির গাইড বই আমরা গতবার বিক্রি করেছি ১১০০-১২০০ টাকার মধ্যে। এবার তা দ্বিগুণ হয়েছে। ২০০০-২২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বইয়ের দামও বেড়েছে।

বকুল স্টেশনারি ও বই স্টলের মালিক মো. কাউছার উদ্দিন বলেন, জানুয়ারি মাসকে কেন্দ্র করে কাগজ ছাড়া সব শিক্ষা উপকরণের দাম ১০ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। আগের চেয়ে বিক্রি কমে গেছে। প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক বা পরিমাণে খুব কম পণ্য কিনছেন ক্রেতারা।

অপরদিকে গত বছরের তুলনায় স্কুল-কলেজে ভর্তি ফি আর মাসিক বেতনও বেড়েছে অনেক। খরচ মেটাতে না পেরে অনেকে স্কুল পরিবর্তন করছেন। রাজধানীর রয়্যাল স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবক আবুল হাসনাত বলেন, কেজি-টুতে এখানে মাসিক বেতন ছিল ৬৫০০ টাকা। প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সে কারণে এখন ছেলেকে কদমতলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি ভার্সনে দিয়েছি। বেতন মাত্র ১৫০০ টাকা।

আবার অনেকে আগামী বছর স্কুল পরিবর্তন করে কম খরচের স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করানোর বিষয়ে ভাবছেন। এ বিষয়ে অভিভাবক মিজানুর রহমান বলেন, আমার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে আর মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। দুজনের জন্য এখন আগের চেয়ে দ্বিগুণ খরচ লাগছে। কিন্তু আমার ব্যবসায় তো সেভাবে বিক্রি বাড়েনি। এ জন্য এখন আগের চেয়ে চাপ বাড়ছে। এ বছর কোনোভাবে পার করে আগামী বছর কম খরচের স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করাব।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!