প্রতিনিধি, দৈনিক দিশারী
———————
দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্ত হয় না নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অধিদপ্তর। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। হয়রানিও কমে না। আছে দালালদের দৌরাত্ম্যও। এ নিয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর চরম ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষও।
সম্প্রতি নোয়াখালী পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ভেতরের বাইরের সার্বিক খোঁজখবর নিতে গিয়ে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। এ সময় প্রায়জনই প্রকাশ্যে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। আর এর সাতটি কারণ চিহ্নিত করেন তারা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, দালালদের দৌরাত্ম্যে পাসপোর্ট করতে আসা ব্যক্তিরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে দালালরা পাসপোর্ট করে দিচ্ছেন।
ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে বলা হয়; দালালদের ‘বিশেষ চিহ্ন’ ছাড়া আবেদন গ্রহণে অনীহা, আবেদন শতভাগ সঠিক থাকলেও টাকা না দেয়ায় কর্মকর্তাদের দ্বারা ইচ্ছাকৃত ভোগান্তি সৃষ্টি, রোহিঙ্গা পরীক্ষার মাধ্যমে হয়রানি, নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়া, সার্ভার ডাউন-জাতীয় সংকট এবং পাসপোর্ট কার্যালয়ে স্থান ও জনবল সংকট। এর বাইরে পাসপোর্ট পেতে যে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয়, সেখানেও টাকা ছাড়া সেবা মেলে না বলেও অংশীজনরা অভিযোগ করেছেন।
জনৈক ভুক্তভোগী জানান, সম্প্রতি তার এক স্বজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য যেতে পাসপোর্ট করতে নগদ ২০ হাজার টাকা ‘উৎকোচ’ দিয়েছেন। পাসপোর্ট কার্যালয়ের দুর্নীতির কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নাম হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
রাজনৈতিক দলের একজন নেতা বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৩শত মানুষ পাসপোর্ট কার্যালয়ে গিয়ে সেবা নেন। একেকজন গড়ে দুই হাজার টাকা দিলেও ৬ লাখ টাকার অবৈধ লেনদেন পাসপোর্ট কার্যালয়ে হয়ে থাকে।
অংশীজনদের অভিযোগ প্রসঙ্গে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের উপপরিচালক মহের উদ্দিন সেখ বলেন, পাসপোর্টের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে তার কিছু করার নেই। কারণ, পাসপোর্টগুলো ঢাকা থেকে প্রস্তুত করা হয়। এ ছাড়া সার্ভারজনিত সমস্যার সমাধানও তার হাতে নেই।
তবে পাসপোর্ট কার্যালয়ের ভেতরে দালালদের তৎপরতা নেই বলে তিনি দাবি করেন। তবে সাধারণ মানুষ মনে করেন , দেশে বেকার সমস্যায় জর্জরিত জনগোষ্ঠীর হাতকে কর্মশক্তিতে পরিণত করতে অবশ্যই পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ভেতরের বাইরের বিরাজমান সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করতে হবে।
ভুক্তভোগীদের সমস্যা দূর করতে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
Leave a Reply