ছয় মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত ৩৮৯ শ্রমিক

  • আপডেট সময় সোমবার, জুলাই ৩, ২০২৩
  • 82 পাঠক

————————————————–

সেইফটি অ্যান্ড রাইটসের জরিপ

————————————————–

নিজস্ব প্রতিবেদক। সোমবার। জুলাই ০৩, ২০২৩

দেশে চলতি বছরের প্রথমার্ধে কর্মক্ষেত্রে ২৮৭টি দুর্ঘটনায় ৩৮৯ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা বেশি। ২০২২ সালে ২৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৩৩ জন নিহত হন। সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ওপর ভিত্তি করে এই জরিপ পরিচালনা করেছে বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি (এসআরএস)।

রোববার (২ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানায় এসআরএস।

১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন পরিবহন খাতে ১২৮ জন। নির্মাণ খাতে নিহত হয়েছেন ৮৬ জন। এর পরেই রয়েছে ওয়ার্কশপ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ৮৫ জন, কল-কারখানা ও অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে এই সংখ্যা ৫০ জন এবং কৃষি খাতে ৬২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৩ জন, বিস্ফোরণে ৫০ জন, বজ্রপাতে ৪০ জন, মাচা বা ওপর থেকে পড়ে মারা গেছেন ৩২ জন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩০ জন, শক্ত বা ভারী কোনো বস্তুর আঘাত বা তার নিচে চাপা পড়ে ২২ জন, রাসায়নিক দ্রব্য, সেপটিক বা পানির ট্যাঙ্কের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ১২ জন, আগুনে পুড়ে আটজন ও পানিতে ডুবে পাঁচজন মারা গেছেন। পাহাড় বা মাটি, ব্রিজ, ভবন বা ছাদ, দেয়াল ধসে চারজন ও বাকি আটজন অন্যান্য কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।

জরিপের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবস্থা, আইন প্রয়োগে বাধা, বেপরোয়া যান চলাচল ও অদক্ষ চালক ইত্যাদি পরিবহন দুর্ঘটনার মূল কারণ।

সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন বিস্ফোরণে নিহতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে এসআরএস দেখেছে, কেমিকেল সংরক্ষণে অদক্ষতা ও অবহেলা, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকা, কারখানার ভবনে জরুরি বর্হিগমন পথ না থাকা, বহির্গমন পথ তালাবদ্ধ করে দেয়া, কারখানা নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতি না নেয়া, সেইফটি বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ না দেওয়া ও নিয়মিত অগ্নিনির্বাপন মহড়া না করা।

কোনোরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়েই বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ দেয়া, ভেজা হাতে মোটর চালু করা, মাথার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বিদ্যুতের লাইনের নিচে কাজ করা, ভবনের পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক তারের পাশ দিয়ে লোহার রড উঠানোকে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দেখা গেছে। তাছাড়া ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার না করার কারণেও কিছু দুর্ঘটনা ঘটছে।

জরিপ তথ্য প্রকাশকালে এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। বিভিন্ন ছোট-বড় বিস্ফোরণের ঘটনাও এই ছয় মাসে পরিলক্ষিত হয়েছে। বজ্রপাতে কৃষি খাতের শ্রমিকদের মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে ও সেই সঙ্গে নির্মাণ খাতের নিরাপত্তা ঘাটতি রয়েছেন। কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!