যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
  • 20 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

গত দশ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫০.৭৯ শতাংশ। একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে- বাংলাদেশের পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।

মোট রপ্তানি আয়ের ২০ শতাংশের মতো আসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দেশ থেকে। সমপ্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড গার্মেন্টসের (ওটেক্সার) একটি প্রতিবেদনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করে এমন দশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম ও প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। তবে ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত (১০ বছর) যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ওই পরিসংখ্যান বলছে, চীন প্রথম অবস্থানে থাকলেও এক দশকে তাদের পোশাক শিল্পের রপ্তানি কমেছে প্রায় অর্ধেক। আর সে জায়গায় ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ অবস্থান তৈরি করেছে।

————————————————————————

ওটেক্সার তথ্য অনুযায়ী প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গত দশ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৫০.৭৯ শতাংশ।

————————————————————————

২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৪.৮৩ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২২ সালে এই রপ্তানি উন্নীত হয় ৯.৭৩ বিলিয়ন ডলারে। অবশ্য ২০২৩ সালে আকস্মিকভাবে এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রায় এক চতুর্থাংশ হ্রাস পেয়ে রপ্তানি দাঁড়ায় ৭.২৯ বিলিয়ন ডলারে। যদিও এ সময় সামগ্রিকভাবেই কমে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক পণ্যের চাহিদা।

২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি হ্রাস পেয়েছিল ২২.০৪ শতাংশ, যার প্রভাবটাই মূলত পড়েছিল বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ওপর। আর প্রথম অবস্থানে থাকা চীনের ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ছিল ২৯.৭৯ বিলিয়ন ডলার। সেখানে ২০২৩ সালে এই রপ্তানি হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৬.৩২ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ এক দশকের মধ্যে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৪৫.২৪ বিলিয়ন ডলার।

আর দ্বিতীয় অবস্থা মনে থাকা ভিয়েতনামের ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ছিল ৯.২৭ বিলিয়ন ডলার। সেখানে ২০২৩ সালে এই রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.১৮ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনামের রপ্তানি বেড়েছে ৫২.৯৬ শতাংশ। একইসঙ্গে ভারত, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোরও রপ্তানি বেড়েছে।

————————————————————————

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পোশাক রপ্তানি ছিল ৩.৪০ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে এই রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৬৯ বিলিয়ন ডলারে। আর ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের পোশাক রপ্তানি ছিল ১.৪৬ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.০২ বিলিয়ন ডলারে।

————————————————————————

অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার পোশাক রপ্তানি গত এক দশকে বেড়েছে ৩৩.৯৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে যেখানে দেশটির রপ্তানি ছিল ২.৪৮ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২৩ সালে এই রপ্তানি উন্নীত হয় ৩.৩২ বিলিয়ন ডলারে।

বিপরীতে গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পাশাপাশি হ্রাস পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস এবং ইন্দোনেশিয়ার পোশাক রপ্তানিও। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি ১৩.৩১ শতাংশ, মেক্সিকোর ২৪.৬৬ শতাংশ, হন্ডুরাসের ৬.০৮ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ১৭.৯৯ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, গত এক দশকে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। এ সময়ে বাংলাদেশ তার সাশ্রয়ী উৎপাদন ক্ষমতা, উচ্চমানসম্পন্ন পোশাক এবং দক্ষ শ্রমশক্তির মাধ্যমে ভারতের মতো দেশকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সাফল্য ধরে রাখতে হলে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন, শ্রমিক কল্যাণ এবং নতুন বাজার প্রসারে মনোযোগ দিতে হবে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!