সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

  • আপডেট সময় বুধবার, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
  • 154 পাঠক

প্রতিনিধি, দৈনিক দিশারী

———————-

নোয়াখালীর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে একশ্রেণির দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। দলিল লেখক, স্ট্যাম্প ভেণ্ডার ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত এ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে সাব-রেজিস্ট্রার নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন।

সিন্ডিকেটের সাথে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন দেখিয়ে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবাবিল এওয়াজ, অসিয়ত নামা, ঘোষণাপত্র, আমমোক্তার নামা দলিল রেজিষ্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

তিনি এ অফিসে যোগদানের পর থেকে এ দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি দলিল থেকে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা সেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ টাকা দলিল লেখক সমিতি, মসজিদ ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসের চাঁদা ছাড়া বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ দলিল হেবাবিল এওয়াজ, আমমোক্তার নামা, দানপত্র ও ঘোষণাপত্র দলিল। এতে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। গত ক’ বছরের রেজিস্ট্রি করা দলিল পরীক্ষা করলে এর সন্ধান পাওয়া যাবে বলে মনে করেন অনেকেই।

রোববার সরেজমিন গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দলিলের ফি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করলেও সেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার কোনো দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। তার চাহিদা মতো টাকা না পেলে বিভিন্ন কাগজপত্রের অজুহাতে হয়রানি করা হয়। আবার টাকা পেলে সব বৈধ হয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, সেরেস্তা না দিলে জমি রেজিস্ট্রি তো দূরের কথা সীমাহীন হয়রানির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। তাই বাধ্য হয়েই সেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হয়। তবে কাগজপত্রে ঝামেলা থাকলে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রত্যেক দলিল থেকে সেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলেও সিন্ডিকেটের ভয়ে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না।

সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির এক নেতার দাবি, অফিসে কোনো সেরেস্তা আদায় করা হয় না। দলিল লেখকরা চুক্তি করে কিছু টাকা অতিরিক্ত নিতে পারে।

এ বিষয়ে সদর সাব-রেজিস্ট্রার জানান, অফিসে কোনো সিন্ডিকেট নেই। দলিল লেখকের মাধ্যমে আমার কাছে দলিল আসে। সেরেস্তা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অফিসে কোনো সেরেস্তা আদায় করা হয় না। দলিল লেখকরা চুক্তি করে দলিল রেজিস্ট্রি সরকারি মূল্যের বেশি টাকা নিয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি আমার জানা নেই।অবশ্য অফিসের বিবিধ খরচ বাবত সামান্য টাকা রাখা হয় বলে তিনি স্বীকার করেছেন। তবে কারোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে নয়।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!