দিশারী ডেস্ক। ২ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।
কঠিন সময় পার করছে নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড । প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিদ্যুতের অভাবে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠছে নাগরিক জীবন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন, চাহিদানুপাতে সরবরাহ না পাওয়ায় কথায়-কথায় লোডশেডিং দেয়া ছাড়া উপায় নেই।
জেলা শহরের প্রায় গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, রমজানের শেষ পর্যায়ে বিদ্যুতের এমন অসহনীয় যন্ত্রণা ক্রমাগত যেন আরো বেড়ে চলছে। বিদ্যুতের অভাবে কাজ-কর্মে ওষ্ঠাগত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হা-হুতোশ করছেন অনেকে।
জেলা শহরের এক ব্যবসায়ী বলেছেন, গড়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টাও নাগরিকেরা পাচ্ছেননা প্রত্যাশিত বিদ্যুতের ছোঁয়া। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিমাসেই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে নিচ্ছেন। অথচ, সরবরাহ দিতে পারছেননা।
আরেকজন বলেন, আগে বিলের কাগজ দেখে ব্যবহারের পরিমাণ অনুমান করা যেতো। হালে ডিজিটাল নামে শুরু হয়েছে আরেকটি বিড়ম্বনা। তিনি বলেন, ডিজিটাল মিটারে টাকা ডুকাতে না ডুকাতে অনেক টাকা বিভিন্ন অজুহাতে কেটে নেয়া হয়। যেটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করাটাও সহজ নয়।
বিশেষত সেহরী ও ইফতার সময়েও চলে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের এমন গন্ডগোল। দেখা মেলেনা আলোর আর ঘর্মাক্ত দেহের শান্তিময় সুবাতাস। বাসা-বাড়ি হতে শুরু করে অফিস-আদালত, হাসপাতাল, কোথাও দেখা মেলেনা বিদ্যুতের। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য হতে শুরু করে কর্মময় সময় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষের। ব্যাহত হচ্ছে কল-কারখানার উৎপাদন ও বিপনন।
সূত্র জানায়, জাতীয় গ্রীডে উৎপাদন কম থাকায় প্রায় জেলায় প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ কোনভাবেই সম্ভব হয়না কর্তৃপক্ষের। ফলে সীমিত মেগওয়াট দিয়েই চলছে নোয়াখালীসহ প্রায় জেলার বিদ্যুৎ বিপনন।
নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জাতীয় গ্রীড থেকে নোয়াখালীতে আগে যেখানে ৩০ মেগাওয়াট দেয়া হতো বর্তমানে মাত্র ১৩ থেকে ১৪ মেগওয়াট দেয়া হচ্ছে। তবুও মাঝে মধ্যে ভাগ্য ভাল হলে এর চেয়ে সামান্য কিছু বেশি পাওয়া যায়।
জাতীয় পর্যায়ে উৎপাদনের উন্নয়ন ধারা শুরু না হলে নাগরিক জীবনের সামনের দিনগুলোতে আরো ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিকেরা।
জানা যায়, বেসরকারী পর্যায়ের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ জ্বালীন সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কোন ধরনের বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় জাতীয় গ্রীডেও যোগ হচ্ছেনা কোন ধরনের উন্নয়ন।
এদিকে বিদ্যুতের এমন অনটনের দিনেও নোয়াখালীর বেশ কিছু সরকারী দপ্তর-উপদপ্তর, শপিং মল, দোকান-পাট ও হোটেল রেঁস্তোরায় অতিরিক্ত আলোক সজ্জার খবর রয়েছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট জেলার নাগরিকদের অসুবিধার কথা ভেবে এসব দপ্তর-উপদপ্তর, শপিংমল, দোকান-পাট, হোটেল রেষ্টুরেণ্টে অতিরিক্ত আলোক সজ্জা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন জেলার সচেতন নাগরিকেরা।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুল বাহার বলেন, সাধারণ গ্রাহকদের এমন অসুবিধার জন্যে এ মূহুর্তে আন্তরিকভাবে দু:খ প্রকাশ করা ছাড়া উপায় নেই। তিনি বিদ্যুতের এমন অসুবিধা সাময়িকভাবে সামাল দিতে সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধনের অনুরোধ করেন। এ সময় নোয়াখালী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে প্রয়োজনীয় জনবলের সংকটের কথাও বলেন তিনি।
Leave a Reply