পুষ্টিহীনতার ঝুঁকিতে ৬৫ শতাংশ প্রবীণ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
  • 34 পাঠক

দিশারী ডেস্ক। ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

দেশে পুষ্টিহীন লোকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তবে এর মধ্যে প্রবীণদের সংখ্যাই বেশি। দেশে প্রতি ১০০ জন প্রবীণের মধ্যে পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন ২৫ জন। আর পুষ্টিহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছেন ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবীণ। পুরুষের তুলনায় অপুষ্টিতে ভোগা নারী প্রবীণের সংখ্যা বেশি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্য ওঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতিকে খুবই উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছেন।

—————————————————————————–

গবেষণায় প্রবীণ জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক

——————————————————————————

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মুহূর্তেই সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে অদূর এটা গোটা জাতির জন্য একটা বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর এক-চতুর্থাংশই অপুষ্টিতে ভুগছেন। ফলে তাদের মধ্যে বাড়ছে নিরাময় অযোগ্য ব্যাধি। দেশের প্রবীণরা কী কী কারণে অপুষ্টিতে ভোগেন তা খুঁজতেই এই গবেষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়টির পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগ।

——————————————————————————————–

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিষণ্নতায় ভোগা প্রায় ৪০ শতাংশ প্রবীণ অপুষ্টিতে ভুগছেন। স্বাভাবিকের তুলনায় বিষণ্নতায় ভোগা প্রবীণদের অপুষ্টিতে ভোগার আশঙ্কা ১৫ দশমিক ৬ গুণ বেশি। জীবনসঙ্গীবিহীন (বিধবা, বিপত্নীক, অবিবাহিত) প্রবীণদের মাঝে অপুষ্টির হার ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ ও পুষ্টিহীনতার ঝুঁকি ৬৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

——————————————————————————————-

অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২ শতাংশ প্রবীণ বাত-ব্যথায় ভুগছেন, যাদের অর্ধেকের বেশি মাঝারি মাত্রায় শাররিকভাবে অক্ষম। পুরুষদের মধ্যে এই হার ৪৩ দশমিক ৪ এবং নারীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

জেরিয়াট্রিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সামনুন এফ তাহার মতে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে প্রবীণদের জন্যে দুইটি টিকা বাধ্যতামূলক। এগুলো হলো—ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন ও নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতির উন্নয়নে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে একবার দেয়া জরুরি। কেননা, প্রতি বছর ফ্লুর ধরন বদলে যায়। বয়স্কদের আরেকটা সমস্যা বেশি হয়, তা হচ্ছে নিউমোনিয়া। নিউমোনিয়া থেকে বাঁচতে নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন নিতে হয়। এই ভ্যাকসিন জীবনে একবার নিলেও চলে, আবার কিছু আছে পাঁচ বছরে একবার নিতে হয়।

এই চিকিৎসক বলেন, বাচ্চাদের যেভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ হয়, বয়স্কদের ক্ষেত্রে তা ঠিকমতো হয় না। ফলে বয়স্কদের সমস্যা বেশি হয়। প্রবীণদের এই দুই ভ্যাকসিন না নেয়ার কারণে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া এ ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যাগুলো বেশি দেখা দেয়। তাই এই দুই টিকা অতিদ্রুত পঞ্চাশোর্ধ্বদের জন্য বাধ্যতামূলক করে দেয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, শীতের সময় বয়স্কদের অস্টিয় আর্থ্রাইটিস, হাড়ের সমস্যার কারণে সারা শরীরে ব্যথা বেড়ে যায়। বয়স্কদের আরও সমস্যা রয়েছে। গ্রামে সব বাসায় টয়লেট দূরে থাকে, বয়স্কদের রাতে কয়েকবার ওঠতে হয় টয়লেটে যাওয়ার জন্য, এটা একটা বিশাল সমস্যা। টয়লেট যাওয়ার সময় তারা অনেক ক্ষেত্রে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!