ফেনী : জনবল সংকটে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত

  • আপডেট সময় শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১
  • 507 পাঠক

ফেনী প্রতিনিধি

—————-

ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণে ভোক্তা অধিকার প্রতিপালন ও ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনজনিত বিরোধ নিষ্পত্তিকরণে আইনের বিধিবিধান প্রতিফলিত করতে সারাদেশের মতো ফেনীতেও কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার পরে ২০০৯ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অধিদপ্তরের কার্যক্রমের সূচনা হলেও ফেনীতে এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৫ সালের মার্চে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জেলার ১৬ লাখ নাগরিকের অধিকার নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাচ্ছে অধিদপ্তরটি।

জেলা পর্যায়ে এ অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অন্তত ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রয়োজন হলেও একজন সহকারী পরিচালক আর একজন অফিস সহায়ক দিয়ে পরিচালনা করতে হচ্ছে পুরো জেলার কার্যক্রম। নেই কোনো উপশাখা কিংবা উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

স্বল্প জনবল নিয়েও ফেনীতে ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে অধিদপ্তরটি। চলতি অর্থবছরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অন্তত ২৭টি অভিযান পরিচালনা করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন, পণ্যে মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সরবরাহ করা, ধার্যকৃত মূল্যের চাইতে অধিক মূল্য গ্রহণ করা, খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ ও পরিমাপে কারচুপিসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ছোটবড় ৬৯টি প্রতিষ্ঠানকে অন্তত তিন লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করে সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ১৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা করেছে ফেনী জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সবশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর ফেনীর শহরতলীর বারাহীপুর এলাকার রিয়াজ উদ্দিন সড়কের জমজম বেকারি নামে একটি খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে মোড়কে লেভেল না থাকা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের দায়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে অধিদপ্তরটি।

একই মাসের ১৩ সেপ্টেম্বর শহরের কলেজ রোডে স্থাপিত লা ইটালিয়া রেস্টুরেন্টকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য প্রস্তুতকরণের দায়ে ১০ হাজার, একই অপরাধে ৮ সেপ্টেম্বর মহিপালের গাউছিয়া হোটেলকে ১০ হাজার ও ১ সেপ্টেম্বর পচাবাসী খাদ্য রাখার দায়ে ট্রাংক রোডের রহমানিয়া হোটেলকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এর আগে গত ২৫ আগস্ট অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের দায়ে বালিগাঁওর পরান আইসক্রিম ফ্যাক্টরিকে ৩০ হাজার, ১৮ আগস্ট একই অপরাধে সোনাগাজী উপজেলার মনগাজীর শততা বেকারিকে ৩০ হাজার, ১১ আগস্ট মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়ে ছাগলনাইয়া উপজেলার ইকবাল মেডিকেল হলকে ২০ হাজার ও ৪ আগস্ট একই অপরাধে বক্স বাজারের ঝর্ণা ফার্মেসিকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় অধিদপ্তরটি।

এছাড়া ভোক্তাদের অভিযোগের নিমিত্তে অভিযোগ আমলে নিয়ে দ্রুত তা নিষ্পত্তি করে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে তারা।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে অনলাইনে লিখিত ও মৌখিকভাবে কর্তৃপক্ষ বরাবর দায়ের করা হয়েছে অন্তত ২০টি অভিযোগ। এর মধ্যে ৯টি অভিযোগ এরই মধ্যে নিষ্পত্তি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সোহেল চাকমা বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের মাধ্যমে সব ভোক্তার জন্য নিরাপদ পণ্য ও সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, সব ভোক্তার স্বার্থে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ এবং ভোক্তা অধিকারবিরোধী কার্যাবলি প্রতিরোধে কার্যালয় কর্তৃক আইন অনুযায়ী ও অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক অর্পিত দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পাদনা করতে আমরা অনড়।

এছাড়া ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বাস্তবায়ন, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ও প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ড দ্বারা জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা সময় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসার কথা জানান সোহেল চাকমা।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!