চট্রগ্রাম অফিস
————–
মধ্যবয়সীদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে মানসিক রোগ। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অধিকাংশ মানসিক রোগীই মধ্যবয়সী।
চাকরির অনিশ্চয়তা, দাম্পত্য কলহ, আর্থিক অক্ষমতা ও নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়ার কারণে তাদের মধ্যে মানসিক রোগ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চমেক হাসপাতালের মানসিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৫০ জন মানসিক রোগী চিকিৎসা নেন।
এদের মধ্যে প্রায় ৩৫ জন মধ্যবয়সী রোগী। যাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এছাড়া রয়েছেন বয়স্ক ও শিশু রোগীও।
হাসপাতালটিতে বর্তমানে মানসিক রোগীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১৫টি শয্যা। তাই অধিকাংশ রোগীই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চমেক হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সহাকারী রেজিস্ট্রার ডা. তারেক আবেদীন বলেন, আমাদের বিভাগে প্রতিদিন ৫০ জনের মত রোগী চিকিৎসা নেন।সব বয়সী রোগী থাকলেও মধ্যবয়সী রোগীর সংখ্যা বেশি। এদের সংখ্যা ৩০ থেকে ৩৫ জন।
করোনা ওয়ার্ড স্থাপনের কারণে মানসিক রোগীদের জন্য বরাদ্দ করা শয্যা সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। বর্তমানে ১৫টি শয্যায় মানসিক রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে চাকরির অনিশ্চয়তা, প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া, দাম্পত্য কলহ ও আর্থিক অক্ষমতাসহ বিভিন্ন কারণে মধ্যবয়সীদের মধ্যে মানসিক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বিপ্লব কুমার দে।
তিনি বলেন, একটা যুবক যখন ২৫-২৬ বছর বয়সে লেখাপড়া শেষ করেন, তখন তার মধ্যে অনেক চাপ থাকে। পরিবার থেকে চাপ দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য।
বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য ও সাংসারিক নানা বিষয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফলে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াসহ নানা অনাকাক্সিক্ষত আচরণের প্রভাব গিয়ে পড়ে শিশুদের উপর। এ কারণে শিশুদের মধ্যেও মানসিক রোগ হতে পারে।
তিনি বলেন, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ানো, পারস্পরিক সহমর্মিতা ও আলোচনার মাধ্যমের মানসিক সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষকে সব সময় নিজের প্রতি ইতিবাচক থাকতে হবে। তার দ্বারা যে কাজটি করা সম্ভব, সেই বিশ্বাস নিজের মধ্যে রাখতে হবে। কোনোভাবেই আশাহত হওয়া যাবে না। এতে মানসিক সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে।
অন্যদিক সন্তান জন্মের পর থেকে মা-বাবার আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে। যাতে মা-বাবার আচরণের কারণে শিশুদের মানসিক সমস্যা সৃষ্টি না হয়। এতে করে শিশুদের মানসিক সমস্যাও অনেকটা কমে আসবে।
Leave a Reply