নিজস্ব প্রতিনিধি
—————
প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর নোয়াখালীর মাইজদী শাখায় গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতসহ নানাবিধ প্রতারনার অভিযোগ ওঠেছে। এতে করে গ্রাহক পর্যায়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এমন অভিযোগের তীর জাকের হোসেন নামের এক উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি সেলিম উদ্দিন নামের এক গ্রাহকের মেয়াদপূর্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটি গণমাধ্যমের নজরে আসে।
ভুক্তভোগী সেলিম উদ্দিনের বোন নাজরিন আক্তার জানান, ২০০৮ সালের তার ভাই সেলিম উদ্দিন ১২ বছর মেয়াদে বার্ষিক ১২,৮০০ টাকার একটি বীমা পলিসি গ্রহণ করে। বীমা চুক্তি অনুযায়ী বীমা মেয়াদের মধ্যেবর্তী সময়ে তথা ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে বোনাস হিসেবে ৩৭,৫০০ টাকা উত্তোলনের সুযোগ থাকলে অভিযুক্ত জাকের হোসেন তাদের অমতে ও জোরপূর্বক বোনাসের টাকা তুলতে না দিয়ে পুনরায় ২০১৩ সালে ওই টাকায় ৮ বছর মেয়াদী আরেকটি বীমা করিয়ে দেয়।
উভয় বীমা পলিসির মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হলে গ্রাহক মেয়াদ পূর্তির টাকা উত্তোলনের জন্য অভিযুক্ত জাকের হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি গ্রাহকের টাকা প্রদানের জন্য কোম্পানীর নিয়মানুসারে গ্রাহকের ব্যাংক একাউন্ট নম্বর চায়। গ্রাহক নিজ ব্যাংক একাউন্ট নম্বর প্রদান করলেও উন্নয়ন কর্তা জাকের হোসেন তার পরিচিত জনৈক সেলিম উদ্দিনের ব্যাংক একাউন্ট নম্বর ব্যবহার করে গ্রাহকের প্রথম পলিসির টাকা উত্তোলন করে নিজেই আত্মসাত করেন। টাকা প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ায় গ্রাহক বারবার জাকের হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নিজের কৃতকর্মের দায় এড়াতে গ্রাহককে কোম্পানীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের ভুলভাল তথ্য দিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকে।
একপর্যায়ে গ্রাহক ঘটনাটি জানতে পেরে টাকার জন্য জাকের হোসেনকে চাপ দিলে তিনি গ্রাহককে নিজের ব্যাংক একাউন্টের একটি চেক প্রদান করেন। যাতে এ পর্যন্ত ওই ব্যাংক একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় গ্রাহক তাহা উত্তোলন করতে পারেননি। ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে প্রতিষ্ঠানটির মাইজদী কার্যালয়ে ভুক্তভোগী সেলিম উদ্দিনের পলিসির তথ্য চাইলে কর্তব্যরত কম্পিউটার অপারেটর অপর আরেক কম্পিউটার অপারেটরের অনুপস্থিতির অজুুহাতে তথ্য প্রদান করেনি। এতে করে প্রাথমিকভাবেই দুর্নীতির গন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়।
গ্রাহকের টাকা একই নামের অন্য একাউন্টে চলে যাওয়ার মতো এতো বড় ভুলের কারণ জানতে চাইলে জাকের হোসেন জানান, এটি হেড অফিসের বিষয়। এর দায়ভার হেড অফিস নেবে। অথচ একাধিক বীমা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেয়াদ পূর্তিতে বা মধ্যবর্তী সময়ে যে কোন টাকা উত্তোলনে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্থানীয় অফিসের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে একটি নির্বাহী রশিদ প্রেরণ করা হয়। যে রশিদটিতে গ্রাহকের ব্যাংক একাউন্ট নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। আর এ কাজটি করে থাকেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট বীমা কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি।
জাকের হোসেনের ভাষ্যমতে এতো বড় ভুলের বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টাকালে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন রেখে দেন। অথচ এর পর বহুবার তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি তার আর রিসিভ করেন নি। এ বিষয়ে গ্রাহকের পক্ষ থেকে গত ১০ মে ২০২৩ তারিখে রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরে একটি অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply