প্রকাশ্য ধুমপান : বাতাসে উড়ে আইন ও জরিমানা !

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২২, ২০২১
  • 818 পাঠক

দিশারী রিপোর্ট, নোয়াখালী

————————

প্রকাশ্যে ধুমপানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করার বিধান থাকলেও বিগত সময়ে এর ধারাবাহিকতা না থাকায় নোয়াখালীতে প্রকাশ্য ধূমপায়ীর পরিমাণ ও চৌহদ্দি সীমানা পেরিয়ে চলছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

জানা যায়, তামাক সেবন স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ২০১৬ সালে ঢাকায় ইন্টার পার্লামেন্টারী ইউনিয়নের সম্মেলনে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করে সুরক্ষিত বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সরকার। কিন্তু নিয়মিত অভিযান না হওয়াতে সরকারের এ প্রত্যয় উপেক্ষিত হচ্ছে বলে নোয়াখালীর অভিজ্ঞমহল মনে করছেন।

এদিকে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার একাধিক গবেষণা মতে, সারাবিশ্বে করোনাভাইসারে মৃত্যুর ৭০% এর বেশি পুরুষ। ভারতের ফুসফুস বিশেষজ্ঞ পার্থ প্রমিত বোস ডয়চে ভেলেক বলেছেন, যারা ধুমপান করে তাদের ফুসফুস এমনিতেই দূর্বল। একই তথ্য দিয়েছে এবং ইতালির চিকিৎসকেরাও।

বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয় বলে করোনার প্রার্দুভাব শুরুর প্রাক্কালে চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যাদের বয়স ৬০ বা ৬৫ বছরের উর্ধ্বে তাদের মধ্যে যারা আগে থেকেই ধুমপান করে আসছে তাদের হার্ট অত্যন্ত দূর্বল হওয়াতে তারা মৃত্যুবরণ করছেও বেশি।

তা সত্বেও, প্রকাশ্যে ধূমপানের বিরুদ্ধে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন সমন্বয়ে এখনও কোন অভিযান পরিচালনা করেনি। প্রকাশ্যে ধুমপানে জরিমানা ৫০ টাকা থেকে ২০০৮ সালে আইন সংশোধন করে ৩০০ টাকার বিধান করা হয়েছে।

প্রশাসন থেকে নিয়মিত অভিযান না থাকায় এবং আইন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে না পারায় নোয়াখালীতে প্রকাশ্যে হাট-বাজার, বাস টার্মিনাল, চায়ের দোকান, কোর্ট প্রাঙ্গন, পার্ক স্পর্ট ছাড়াও একশ্রেণীর রাজনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস কক্ষে বসেই প্রকাশ্যে সিগারেট পান করছে।

যাতে ক্যান্সারসহ ৬ টি মারাত্বক রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ধুমপানের কারণে মানবদেহে করোনার জীবাণু বহনসহ এ শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গও মৃত্যুর মুখে ঢেলে পড়ছে।
প্রকাশ্যে ধুমপানের জরিমানা সম্পর্কে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন ধুমপায়ীকে জানতে চাইলে জরিমানার বিষয়ে তাদের জানা নেই বলে জানান।

তারা বলেন, সিগারেট পুলিশ ও প্রশাসনের বড়-বড় কর্মকর্তারা, চিকিৎসক এমনকি সাংবাদিকরাও পান করেন প্রকাশ্যে। তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে এমন অনেক আইন আছে প্রশাসনের বড় কর্তারা পালন না করার কারণে আইন ও জরিমানা বাতাসে উড়ে এবং বাস্তবায়নও নেই !
তথ্যসূত্রে, তামাক ও তামাকজাতদ্রব্যগুলোর উৎপাদনকারি এমনকি সিগারেট কোম্পানীগুলো ধুমপায়ি চিকিৎসকদের হাতে দামি সিগারেট ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়।

এ বিষয়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ জেলা কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মোদক বলেন, প্রকাশ্যে ধুমপানের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান জেলা সিভিল সার্জন অফিস পরিচালনা করবে। অন্য দপ্তরের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।

আইন থাকা সত্তে¡ও কেন প্রকাশ্যে ধুমপানের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ নিয়মিত অভিযান করা হয় না এমন প্রশ্নে জেলা সিভিল সার্জন মো. মাসুম ইফতেখার বলেন, এটি জরুরি। এ বিষয়টি আপনি আগেও অবহিত করেছেন।
তাছাড়া তামাকের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের একটা সম্পৃক্ততা রয়েছে। জরিমানা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে করতে পারে। সিভিল সার্জন করতে পারে না।

সিভিল সার্জন অফিস থেকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে এ বিষয়ে নিয়মিত অভিযানের কেন লিখিত আবেদন নেই ? এমন প্রশ্নে সিভিল সার্জন বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সামনে তামাক নিয়ন্ত্রণ বৈঠকে নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাঁন প্রকাশ্য ধুমপানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!