দিশারী ডেস্ক । ১৭ নভেম্বর, ২০২৪
ম্যালেরিয়ার জীবন রক্ষাকারী ওষুধ প্রথমবারের মতো কাজ করছে না বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।আফ্রিকান শিশুদের মধ্যে ওষুধটির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি গুরুতর সংক্রমণও দেখা দিয়েছে, যাকে উদ্বেগজনক হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা। এতে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
————————————————————————————————
গবেষণা প্রতিবেদন
———————————————————————————————–
উগান্ডায় হাসপাতালে ম্যালেরিয়া চিকিৎসা করানো শিশুদের নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ রোগীর মধ্যে একজনের শরীরে ম্যালেরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ আর্টেমিসিনিন প্রতিরোধের লক্ষণ পাওয়া গেছে।
অণুজীববিরোধী প্রতিরোধ্যতা বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান একটি উদ্বেগের কারণ। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তখনই ঘটে যখন পরজীবী, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের মতো ক্ষতিকারক জীবাণুগুলো তাদের মারার জন্য ব্যবহৃত ওষুধের প্রতিরোধের উপায় খুঁজে পায়। এর মাধ্যমে ২০৫০ সালের মধ্যে ৩ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। প্রতি বছর সাব-সাহারান আফ্রিকায় পাঁচ বছরের কম বয়সী সাড়ে চার লাখ মানুষ এ রোগে মারা যায়। গবেষণায় প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে ১১টি শিশু চিকিৎসায় আংশিক প্রতিরোধ দেখিয়েছে। এদের মধ্যে সবাই জেনেটিক মিউটেশন বহনকারী ম্যালেরিয়া পরজীবী দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল, যা আর্টেমিসিনিন প্রতিরোধের সঙ্গে সম্পর্কিত।
গবেষণা প্রতিবেদনের একজন সহলেখক ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. চ্যান্ডি জন বলেন, গবেষণাটির মাধ্যমে আফ্রিকায় প্রথম দেখা গেল যে ম্যালেরিয়া ও গুরুতর রোগের স্পষ্ট লক্ষণযুক্ত শিশুরা আর্টেমিসিনিনের আংশিক প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে।
গবেষণায় আরো ১০ শিশুকে পাওয়া যায় যাদের ম্যালেরিয়া থেকে নিরাময় হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এক মাসের মধ্যে একই ধরনের ম্যালেরিয়ায় তারা আবার আক্রান্ত হয়। যে ফল পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, আর্টেমিসিনিনের সঙ্গে ‘লুমফ্যানট্রিন’ নামে ম্যালেরিয়ার আরেক ওষুধের সমন্বয়ে শিশুদের ‘গোল্ড-স্ট্যান্ডার্ড’ যে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে তা যতটা কার্যকরভাবে কাজ করা উচিত ছিল ততটা কার্যকর হয়নি।
জন বলেন, একটি প্রকল্পে পর্যবেক্ষণে থাকা কম বয়সী ম্যালেরিয়ায় গুরুতরভাবে আক্রান্তদের চিকিৎসায় সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগছিল। তা জানার পর এ গবেষণা শুরু করা হয়। এমনকি আমরা নির্দিষ্টভাবে অনুসন্ধান শুরু করার আগেই ওষুধে প্রতিরোধের প্রমাণ পেতে শুরু করি, যা উদ্বেগজনক লক্ষণ।
তিনি আরো বলেন, আমরা আরো অবাক হই যখন আমরা ওষুধে প্রতিরোধের দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করি, তখন আমরা এমন রোগীদের আবিষ্কার করি যারা পুরোপুরি নিরাময় হয়ে গেছে বলে মনে করার পর আবার তারা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল।
Leave a Reply