কোর্ট চত্বরে ভুয়া কাজী, অবাধে হচ্ছে বাল্যবিয়ে!

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, মে ২৭, ২০২১
  • 657 পাঠক

নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : নোয়াখালীর কোর্ট চত্বরে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বাল্যবিয়ের ছড়াছড়ি। একশ্রেণির দালাল ভুয়া নোটারীর সীল তৈরি করে কাবিননামার নকল বইয়ে দেদারছে বাল্যবিয়ের রেজিস্ট্রি করছেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও ঘর পালানো প্রেমিক-প্রেমিকা এবং পরকীয়ায় আসক্তদের বিয়ে করিয়ে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

জানা যায়, নোয়াখালী জেলা জজকোর্ট চত্বর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড । ওই ওয়ার্ডের তালিকাভুক্ত মুসলিম বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন কাজী বাকী বিল্লাহ। কিন্তু, আদালত চত্বরে কতেক ব্যক্তি কাজী না হয়েও দেদারছে বিয়ে রেজিস্ট্রি করে যাচ্ছেন।

জানা যায়, কোর্ট চত্বরে কাজীদের বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি চক্র দীর্ঘদিন ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে নকল কাবিননামায় জাল সিল-স্বাক্ষর দিয়ে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রি করে আসছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অব্জল থেকে আসা অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ভুয়া নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে প্রাপ্তবয়স্ক বানিয়ে এবং ব্যাকডেটে তালাক ও বিয়ে নিবন্ধন করে আইনকে ফাঁকি দেয়ার ঘটনা ঘটছে।

অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও ঘর পালানো প্রেমিক-প্রেমিকা এবং পরকীয়া প্রেমে আসক্তে জড়িতরা কোর্ট চত্বরে এলেই ওই দালালরা নানাভাবে ভুল বুঝিয়ে হাত করে নেয়। পরে প্রয়োজন মাফিক নকল কাবিননামা, তালাকনামা এবং বয়স প্রমাণের এফিডেভিটের ঘোষণা করে দেয়। ফলে জেলায় সংক্রামক ব্যাধির মতো অবাধে হচ্ছে বাল্য এবং পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিয়ে।

এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন আতঙ্কে রয়েছে, তেমনি পরকীয়ার প্রভাবে প্রবাসীদের সংসারও ভেঙে যাচ্ছে সহজে। অনেক সময় প্রবাসীদের স্ত্রীরা বিদেশে স্বামীর কষ্টার্জিত অর্থ-স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে এবং সন্তান রেখেই ঘর বাঁধছেন পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে।

বাল্যবিয়েকে নিরুৎসাহিত করে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা থাকলেও এর তোয়াক্কা করছে না প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকা এই চক্রটি। কোর্ট চত্বরে প্রতিনিয়তই তারা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের এ অপকর্ম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নোয়াখালী সদর উপজেলার এক ভুক্তভোগী জানান, আমার মেয়েটা সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। আমাদের না জানিয়ে আদালত চত্বরে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আমার একমাত্র মেয়ে এহেন কাজে পরিবারের মধ্যে শান্তি হারিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার আবদুল খালেক বলেন, জেলার কাজীদের তালিকা অনুযায়ী ৪ নং ওয়ার্ডের নিয়োগপ্রাপ্ত কাজী ব্যতীত অন্য কাজীদের বিয়ে, তালাক নিবন্ধন বেআইনি।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!