——————
জীবন ঘনিষ্ঠতায় শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালবাসায় স্কুল জীবন ধরে তাঁর জীবনী শুনা। কলেজ জীবনে ধীরে-ধীরে অনেক বেশি চেনা-জানা। ১৯৯৬ এর পর অতি বেশি আপনজনের মতোই গড়ে ওঠেছিল সম্পর্কের চিন্তা-চেতনা।
তিনিই গণমানুষের প্রিয় নেতা মো. শাহজাহান। আপাদমস্তক রাজনীতিক। মানবতার বিচারে সভ্য, ভদ্র, শান্ত, অহিংস ও শিষ্টাচারে পরিপূর্ণ একজন রাজনীতিক। চলনে-বলনে পুরোদস্তোরই একজন সাংগঠনিক কর্মকান্ডের আঁধার।
জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখে কথার চলে অনবরত, সত্য ও স্পষ্ট ভাষায় বক্তব্য তাঁর। গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের জীবন নিবিষ্ট প্রেরণাদায়ক রাজনীতিক মো. শাহজাহান। কথা আর কাজে এক থাকার মানুষ।
নোয়াখালীর বিএনপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের অভিব্যক্তি তাদের রাজনীতির অঙ্গনের প্রিয় প্রচ্ছদ মো. শাহজাহান। কর্মীদের চোখে সাংগঠনিক দক্ষতা, বিচক্ষণতা আর কর্মময় অবয়বের একনিষ্ঠ অধ্যায়ে পরিস্ফূটিত তাঁদের নেতা।
জেলার রাজনৈতিকবোদ্ধাদের ভাষায়, মো. শাহজাহান সততায় নিষ্ঠাবান। চরিত্রে পরিচ্ছন্ন।সাধারণ মানুষের জীবন পরিক্রমায় এক মিশুক প্রকৃতির স্বভাব তাঁর।
সদর বিএনপির সাংগঠনিক রাজনৈতিক ত্যাগ, তিতিক্ষা, সংগ্রাম ও বিচক্ষণতায় পথ ধরে এ মানুষটি বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান। জাতীয় পরিসরে যুগ্ম মহাসচিব পদেও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন পদ যোগ্যতার খাতায়।
চারদিকে খবর রচেছে, সাংগঠনিক, গণতান্ত্রিক, গঠনতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক কর্মকান্ডের প্রভাবে হয়তোবা বিএনপির স্থায়ী কমিটিতেও সহসাই বসবে তাঁর নাম।
মো. শাহজাহান এক সুদীর্ঘকাল নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি ছাড়াও চট্রগ্রাম বিভাগীয় পর্ষদে ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০০১ সালের নির্বাচনে গঠিত জাতীয় সংসদের একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। কিন্তু, ক্ষমতার দৌরাত্ম্য তাঁকে কোনকালেই অমানুষ করেনি। আচার-আচরণে শিষ্টাচারিতা হারাননি তিনি।
নোয়াখালী সদর ও সুবর্ণচরে সংসদ সদস্য পদে তাঁর দায়িত্বকালীন সময়ে কোন বিরোধী শক্তিও অহেতুক কোন মামলা, হামলার শিকার হয়েছেন এমন কথা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষতার দায়ে বলা গেলেও সত্যতার বিচারে এ খতিয়ান অতিব সত্য নয়।
মো. শাহজাহানের ব্যক্তিগত জীবনী বলতে গিয়ে বিএনপির এককর্মী আবেগঘন হৃদয়ে বলেন, একনাগাড়ে মানুষের সাথে আপাদমস্তক ভালবাসায় সিক্ত মো. শাহজাহানের পুরোটা জীবন। রাজনীতির চিরাচরিত ধরণ পাল্টে এ সমাজে অনেকেই জনপ্রতিনিধির খাতায় নাম ওঠিয়েছেন। কিন্তু, ক’জনাই-বা সাধারণ মানুষ দুরে থাক, কর্মীর সাথেও ভাল আচরণ করেছেন ! সর্বসাধারণের জন্যে ক’জনারই-বা বাসগৃহের সদর দরজা থাকে সার্বক্ষণিক খোলা। এমন উদাহরণ মো. শাহজাহান বিনে কমই মেলে ইতিহাসের পাতায় আর সত্যিকার জনপ্রতিনিধির নান্দনিক জীবনের সাধারণ খাতায়।
রাজনীতির সমৃদ্ধময় জীবনে কোন নেতা, কর্মী কিংবা সমর্থক তাঁর হৃদয় মন্দিরের ভালবাসা বঞ্চিত হয়েছেন এমনটা ঠিক খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। যে কারণে কোন কর্মী, সমর্থকের রাজনৈতিক জীবনের নগদ কোন প্রাপ্তির হিসেব না মিললেও মো. শাহজাহানের ওপর বিরুপ হয়েছেন এমন কর্মীও সচরাচর মেলেনা।
বিএনপির এক কর্মী বলেন, মো. শাহজাহান সংসদ সদস্য পদে দায়িত্বকালীন সময়ে সদর ও সুবর্ণচরের অনেকেরই সরকারী চাকুরি হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা প্রশাসনের কর্মরত এমন কোন ব্যক্তির স্বাক্ষ্য পাওয়া যাবেনা ; যে বিনিময়ে তিনি কারো কাছ থেকে কোন সুবিধা নিয়েছেন।
ওই কর্মী শতভাগ চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেন, শুধু তাই নয়, তাঁর সময়ে দলীয় কোন আচার-অনুষ্ঠান আয়োজনের নামেও কোন সরকারী দপ্তর থেকে নুন্যতম কোন সুবিধা লুটেছেন এমন কথারও অস্তিত্ব আজো খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
জীবন সংগ্রামে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়েছেন মো. শাহজাহান। জীবনে অনেক ঝড়, ঝঞ্চার গ্লানি হাসির বদনে ভুলে গেছেন। রাজনৈতিক জীবনে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাছে টেনে নিয়েছেন যেখানে-সেখানে। তাঁর সেই প্রেরণা অনেক কর্মীই বিএনপির রাজনীতিতে আপ্লুত।
মো. শাহজাহান ১৯৯১ সালে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর সদর ও সুবর্ণচরের গণমানুষের সুখ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সহযাত্রায় নিজেকে অংশীদারিত্ব করেন।
এক সময়ের ভাঙ্গাচুরা সেই মেঠোপথ সোনাপুর হতে হাতিয়া ঘাট, সোনাপুর হতে আক্তার মিয়ার হাট, মাইজদী হতে নোয়া হাট, দত্তবাড়ির মোড় হতে ওদার হাট পাকাকরণে নিজের অবদান অবিস্মরনীয় করে রেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শী আর ভুক্তভোগীদের কাছে।
২০০১ সালে বিএনপি সরকারকালে সেসব সড়কে বিদ্যুতায়নের কথা কেউ ভুললেও সচেতন সমাজের অনেকের মুখে আজো উচ্চারিত মো. শাহজাহানের অবদান। জেলা শহরের নাগরিকদের জন্যে পৌরব্যবস্থাপনায় বিশুদ্ধ পানির জলাধার স্থাপন, শিল্পকলা একাডেমি ভবন, জেলা জজকোর্ট ভবনের উন্নয়ন, মা ও শিশু হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালকে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, সুবর্ণচর উপজেলা কমপ্লেক্স, চরজব্বর থানা ভবন, শতাধিক কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো রেজিষ্ট্রার্ডসহ গাঁও- গেরামে কমিউনিটি ক্লিনিক সবই তো তাঁর সময়ের উন্নয়ন।
শিক্ষানুরাগী মো. শাহজাহানের সময়ে সদর ও সুবর্ণচরে একাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, চরমটুয়া ও চরজব্বর কলেজসহ অনেকগুলো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। তাঁর আন্তরিক চেষ্টায় নোয়াখালী সরকারী কলেজ পুরানো ক্যাম্পাস ছেড়ে অনার্স, মাস্টার্স নিয়ে নতুন ক্যাম্পাসে প্রাণ পেয়েছে।
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক।
Leave a Reply