শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার বেশি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২, ২০২৪
  • 107 পাঠক

————————————————-

বিবিএসের জরিপ 

————————————————-

দিশারী ডেস্ক। ০২ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অর্থাৎ প্রতি পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে এ তথ্য ওঠে এসেছে। গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রংপুর বিভাগের মানুষ। এটি প্রায় ৩০ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে, ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্যদিকে সিলেট বিভাগের মানুষ সবচেয়ে বেশি তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়। এই হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। তবে সবচেয়ে কম তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে রাজশাহী বিভাগে, দশমিক ৫১ শতাংশ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘ফুড সিকিউরিটি স্ট্যাটিস্টিকস প্রজেক্ট -২০২২’ প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।

বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্য পরিকল্পনা এবং পর্যবেক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের চিফ খান মো. নুরুল আমিন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিবিএসের যুগ্ম সচিব ড. দিপংকর রায়সহ অন্য কর্মকর্তারা। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হালিম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি ১০০ জনে ২১ দশমিক ৯১ জন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এর মধ্যে রংপুরে সবচেয়ে বেশি। এই জেলায় প্রতি ১০০ জনে ২৯ দশমিক ৯৮ জন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ ছাড়া বরিশালে ২২ দশমিক ৮৩, চট্টগ্রামে ১৯ দশমিক ৬৬, ময়মনসিংহে ২৬, রাজশাহীতে ২৫ দশমিক শূন্য ১ ও সিলেটে ২৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অন্যদিকে দেশে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন সিলেট বিভাগে ১০০ জনে ১ দশমিক ৪২ জন। আর কম হচ্ছে রাজশাহীতে দশমিক ৫১ শতাংশ।

এ ছাড়া বরিশালে শূন্য দশমিক ৬৭, চট্টগ্রামে ১ দশমিক ১৬, ঢাকায় শূন্য দশমিক ৬৪, খুলনায় ১ দশমিক শূন্য ৯, ময়মনসিংহে শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী দেশের মানুষের ক্যালরি গ্রহণের হার বেড়েছে।

অনুষ্ঠানে আব্দুল হালিম জানান, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আটটি প্রশ্নের মাধ্যমে এই জরিপ করা হয়। ২৯ হাজার ৭৬০টি পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই জরিপ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার বেশি। গ্রামে ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, আর শহর এলাকায় এ হার ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ মানুষও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চরম বা তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষের অধিকাংশই গ্রামেই থাকেন। গ্রামে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ মানুষ, শহরে এ হার তার চেয়ে কম। শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ। সিটি করপোরেশনে আরও কম শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ।

খাদ্য অধিদপ্তরের শহিদুল আলম বলেন, খাদ্য বলতে শুধু ডাল ও ভাত বোঝায়, তা নয়।। এর বাইরেও মানুষ ফলমূলসহ আরও অনেক কিছু খান। তাই খাদ্যের সংজ্ঞার পরিবর্তন করতে হবে। ফুড সিস্টেমে ড্যাসবোর্ড থাকার দরকার। এটা করা হলে বাংলাদেশে কী পরিমাণ খাদ্য আছে তা জানা যাবে। কারণ ২১ শতাংশ খাদ্য শুধু উৎপাদন পর্যায়ে নষ্ট হয়। এ ছাড়া রান্না পর্যায়েও খাদ্য নষ্ট হয়। তাই ড্যাসবোর্ড করা হলে সঠিক তথ্য জেনে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব বলেন, খাদ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও খাদ্য সিস্টেমের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। কারণ প্রত্যেকটা শব্দ ক্রিটিক্যাল বা জটিল। তিনটা উদ্দেশ্য নিয়ে এই জরিপ করা হয়েছে। জরিপ প্রক্ষেপণ ডাটা দেয়, অ্যাকচুয়াল বা প্রকৃত ডাটা দেয় না।

এই জরিপের মাধ্যমে যে প্রক্ষেপণমূলক ডাটা পাওয়া গেছে নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে তার ওপর কাজ করা হবে। এখানে ভুল বুঝার কিছু নেই।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!