দিশারী ডেস্ক। ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত কলেজগুলো থেকে স্নাতক শিক্ষার্থীর ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশই বেকার। বাকিদের মধ্যে অধিকাংশই স্বল্প আয়ের চাকরিতে নিযুক্ত। এছাড়া নারী ও
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত কলেজগুলো থেকে স্নাতক শিক্ষার্থীর ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশই বেকার। বাকিদের মধ্যে অধিকাংশই স্বল্প আয়ের চাকরিতে নিযুক্ত।
এছাড়া নারী ও গ্রামের শিক্ষার্থীর মধ্যে বেকারত্বের হার তুলনামূলক বেশি বলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় ওঠে এসেছে। বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনে সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক এসএম জুলফিকার আলী এ তথ্য তুলে ধরেন।
———————————————————————————
বিআইডিএসের গবেষণা
———————————————————————————
বিআইডিএসের গবেষণায় বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোয় বিজ্ঞান বিভাগের তুলনায় ব্যবসা শিক্ষা এবং সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
এর মধ্যে বিএ (পাস কোর্স), পলিটিক্যাল সায়েন্স, লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, বাংলা ও ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের বেকারত্বের হার বেশি। তবে ইংরেজি, অর্থনীতি, অ্যাকাউন্টিং, সমাজবিজ্ঞান, ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের তেমন বেকার থাকতে হয় না।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ দশমিক ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থীই সরকারি চাকরি করতে আগ্রহী বলে গবেষণায় ওঠে এসেছে। যারা কর্মে নিয়োজিত তাদের প্রায় ৩৬ শতাংশ শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত এবং অনেকেই অফিসার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার পদে কর্মরত। উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ স্নাতক।
গবেষণায় সারা দেশের ৬১টি কলেজের ১ হাজার ৩৪০ স্নাতক, অধ্যয়নরত ৬৭০ শিক্ষার্থী, ৬১ অধ্যক্ষ ও ১০০ নিয়োগদাতার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। তাতে ওঠে আসে, কলেজগুলোর মানের ঘাটতি, শিক্ষার্থীদের কম উপস্থিতি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার অভাব এবং চাকরির বাজারমুখী শিক্ষার অভাব সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
এছাড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও নারী শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগোপযোগী পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়।
বিআইডিএসের সম্মেলনে ‘ আউট অব পকেট কস্ট অব কিডনি ডায়ালাইসিস ইন বাংলাদেশ ’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক সরকার। তার উপস্থাপনায় বলা হয়, কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের পকেট খরচের বাইরে ডায়ালাইসিসের মাসিক খরচ গড়ে ৪৬ হাজার ৪২৬ টাকা। রোগীভেদে সর্বনিম্ন খরচ ৬ হাজার ৬৯০ ও সর্বোচ্চ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা।
বার্ষিক হিসেবে এ ব্যয় দাঁড়ায় ৮০ হাজার ২৮০ থেকে ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এ ব্যয়ের মধ্যে সরাসরি চিকিৎসাসংক্রান্ত ব্যয় মোট ব্যয়ের ৭৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এর মধ্যে ডায়ালাইসিস ফি ৩৫ দশমিক ৩০ ও ওষুধে খরচ হয় ২৩ শতাংশ। এ ব্যয় নির্বাহে ৯২ দশমিক ৮৭ শতাংশ পরিবার আর্থিক সংকটে ভোগে।
———————————————————————————————–
গবেষণাপত্রে আরো বলা হয়, অর্থের অভাবে ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ রোগী চিকিৎসকের পরামর্শের চেয়ে কম ডায়ালাইসিস সেবা নেয়। দরিদ্র রোগীদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৩১ দশমিক ২১ শতাংশ। ৯৫ দশমিক ২৯ শতাংশ রোগী মনে করে, ডায়ালাইসিসের উচ্চ ব্যয় কম সেবা নেয়ার জন্য দায়ী।
———————————————————————————————-
এ কারণে জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় ডায়ালাইসিস ও নির্বাহযোগ্য রোগ নির্ণয় সুবিধা নিশ্চিতের পরামর্শ দিয়েছেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক সরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ব্যয়ে ভর্তুকি দিতে হবে, যেন দরিদ্র রোগী সুবিধা পায়। সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে অধিক দামি ওষধগুলো উৎপাদন করারও পরামর্শ এ গবেষকের।
Leave a Reply