দিশারী ডেস্ক। ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪।
মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে নোয়াখালীর বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্কুল-কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি করা হয়। এ লক্ষ্যে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তবে ম্যুরাল নির্মাণে ব্যয়ের হদিস মিলছে না।
ম্যুরাল নির্মাণের নাম করে কতেক কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতা লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মাধ্যমে ম্যুরাল নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও কোথায়, কখন, কতটি ম্যুরাল নির্মাণ হয়েছে সেই হিসেবের কোনো তথ্য বা ডকুমেন্টস পাওয়া যায়নি নোয়াখালীতে। তবে এ বিষয়ে কেউ মুখও খুলছে না।
——————————————————————————————-
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কাজ করেছেন। সে সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দেখভাল করেছেন। আমরা শুধু টেন্ডার করেছি। আমাদের সেখানে কোনো কর্তৃত্ব ছিল না।
——————————————————————————————-
জানা যায়, নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করার ব্যবস্থা করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাস জানানোর জন্য ম্যুরালটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন।
এ ছাড়া নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্কুল-কলেজে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের মাধ্যমে এসব ম্যুরাল নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
কিন্তু দৈনিক দিশারীর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের নাম করে একশ্রেণির আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকারি কর্মকর্তার যোগসাজসে ব্যয় দেখিয়ে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক চত্বরে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়।
এ ছাড়া জেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণ করা হয় আরেকটি ম্যুরাল। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব কটি ম্যুরাল ভেঙে দেয়া হয়। এসব ম্যুরাল নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে নোয়াখালী সরকারি দপ্তরে সেগুলোর হদিস মিলছে না। শহরের কয়েকটি বিদ্যালয়, সোনাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন, উপজেলা পরিষদ চত্বরেও নির্মাণ করা হয় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। এখন এই বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালগুলোর কোনো চিহ্ন নেই।
কিন্তু রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের নামে অর্থ লুটপাট করা হলেও তার কোনো হিসাব রাখা হয়নি। এ বিষয়ে শহরের এক শিক্ষার্থী আলী জাকের জানান, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখার নাম করে যারা লুটপাট করেছে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। একে তো নিজেদের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত তার সঙ্গে আবার লুটপাট করে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করেছে।
ইতিহাস জানার জন্য বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করা ঠিক হয়নি। সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য প্রথমে সঠিক ইতিহাস লিখা জরুরি ছিল। সেটি না করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করার কোনো যুক্তি ছিল না। শুধু রাষ্ট্রের অপচয় করা হয়েছে।
Leave a Reply