নিজস্ব প্রতিনিধি
————-
বিশ্লেষকরা বলেছেন, চোখের সামনে ঠিকাদারির নামে মিঠু, জিকে শামীম, মানিক, সম্রাট, খালেদ, বরকত-রুবেলদের মতো কয়েকশ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ এখন ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’। তারাই আজ সমাজ, দল, রাষ্ট্রীয় নানা অনাচার ও বিশৃঙ্খলার অদম্য শক্তি। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দুর্নীতি দমন কমিশন এদের কাউকে কাউকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনছে। তবে আইনের ফাঁকফোকর ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে বেশিরভাগই থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা দেশের সম্পদ পাচার করছেন বিদেশে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।
দেশে রাতারাতি বিত্তশালী বনে যাওয়ার একটি সহজ পথ ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ। এই পথে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছেন অনেকেই। আবার দ্রুত সিঁড়ি বাইতে গিয়ে ধপাস করে পড়ে যাওয়ার নজিরও আছে। পুরোটাই রাজনৈতিক আশীর্বাদের ওপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রভাবে কাজ ভাগিয়ে নিজেই ঠিকাদারি করছেন। আবার অনেকে পেশাদার ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের কমিশন। ঠিকাদারিতে যারা দলীয় প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছেন, তারাই অল্প সময়ে গড়েছেন ধনসম্পত্তির পাহাড়। তাদের অর্থনৈতিক উত্থানে কাছের লোকজনরাও হতবাক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আইনবিদ শাহদীন মালিক বলেন, ইদানীংকালে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক হাতিয়ার দিয়ে কখনো দুর্বৃত্তদের ঘায়েল করা যায় না। দ্বিতীয়ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোয় আইন জানা কর্মকর্তা নেই বললেই চলে। ফলে তাদের মামলায় অনেক দুর্বলতা থেকে যায়। তৃতীয়ত, শত শত কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা প্রশাসনের অগোচরে অসম্ভব। তাই প্রশাসনের আশীর্বাদের বিষয়টিও তলিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিলেই এ প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন তিনি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ঠিকাদারি নামের ‘অলৌকিক জাদুর কাঠি’ নেড়ে দেড় দশকের ব্যবধানে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। ঠিকাদারির আড়ালে স্বাস্থ্যখাতের নিয়ন্ত্রকও বলা হয় তাকে। স্বাস্থ্যখাতে তার অপ্রতিরোধ্য দৌরাত্ম্যরে বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’। কিন্তু এরপরও রহস্যজনক কারণে তিনি বরাবরই থেকেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ঘোষিত ‘কালো তালিকাভুক্ত ১৪ ঠিকাদারের’ মধ্যে তার নাম নেই। অনেক প্রভাবশালী রাজনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তা তার ‘বিজনেস পার্টনার’ বলে কথিত আছে। আর এ কারণেই নাকি তিনি সব সময় থাকেন অধরা। এর আগে দুদক তার বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সেগুলো স্থগিত আছে। বর্তমানে তিনি বিদেশে বসেই ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দুর্নীতি দমন কমিশনে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ে সম্পদের হিসাব না-দেয়ায় ২০১৬ সালে মিঠুর বিরুদ্ধে ‘নন-সাবমিশন’ মামলা করেছিল দুদক। স্বাস্থ্যখাতে মিঠুর যাবতীয় কর্মকাণ্ড ও তার নামে-বেনামে থাকা ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠিও পাঠানো হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে মিঠুকে তার সহায়-সম্পদের বিবরণ দাখিল করতে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এরপর রহস্যজনক কারণে তদন্তের ধারাবাহিকতা থেমে যায়।
২০১৬ সালে দুনিয়া তোলপাড় করা পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি সংশ্লিষ্টতায় বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারকারী হিসাবে যে ৩৪ বাংলাদেশির নাম এসেছিল, তাদের একজন মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। এ কারণে মিঠুর ব্যাপারে দুদকের তথ্যানুসন্ধান ও তদন্তের বিষয়টি শুরুতে বেশ গুরুত্ব পায়।
২০১৬ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে দুদক যে চিঠি পাঠিয়েছিল তাতে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন উন্নয়ন, সেবাখাতে যেসব কাজ বাস্তবায়ন করেছে, চলমান আছে এবং ওষুধ-মালামাল-যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে সেগুলোর প্রশাসনিক অনুমোদন, বরাদ্দপত্র, প্রাক্কলন-টেন্ডার, কোটেশন, দাখিলকৃত টেন্ডার, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির কার্যবিবরণী, কার্যাদেশ, কার্যসমাপ্তি প্রতিবেদনসহ প্রাসঙ্গিক সব রেকর্ডপত্র ২০১৬ সালের ৩০ মে-র মধ্যে জমা দিতে বলা হয়।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে কয়েক দফা তাগিদ দেয়ার পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এসব রেকর্ড আর দুদককে দেওয়া হয়নি; বরং চিঠি চালাচালিতে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায় বলে অভিযোগ আছে। রংপুরে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা মিঠুর অর্থনৈতিক উত্থানে বিস্ময়ে হতবাক তার এলাকার মানুষ। নামে-বেনামে ২০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিঠু।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন যদি কাজ না-করে, আদালত যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে এ পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। ক্ষমতাধররা অন্যায় করলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দরকার হলে নিয়মনীতির পরিবর্তন আনতে হবে। তা না-হলে দেশ যতটুকু এগিয়েছে তা ধরে রাখা যাবে না।
আর টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের দুর্নীতিগুলো এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। যারা রুই-কাতলা তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন কিছু করতে পারে না বা করার সৎ সাহস নেই। সংশ্লিষ্ট সবার সদিচ্ছা থাকলেই এ ধরনের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
গণপূর্তের ঠিকাদারি : গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান জিকে শামীম। তিনি ছিলেন এ খাতের হাজার হাজার কোটি টাকা টেন্ডারের একক নিয়ন্ত্রক। সরকারি দলের প্রভাবশালীদের সঙ্গে ছিল তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। নারায়ণগঞ্জের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা জিকে শামীমের বাবা স্কুলশিক্ষক ছিলেন। সেখান থেকে উঠে এসে দুবাইয়ে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সহযোগিতায় গণপূর্তের ঠিকাদারির একক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন জিকে শামীম। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানির মাধ্যমে গত এক দশকে কয়েক হাজার কোটি টাকার কাজ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কমিশন নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুজনের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে। এরপর যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের শেল্টালে ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। এখান থেকে বড় অঙ্কের কমিশন পেতেন সম্রাট। অবশ্য দুজনেরই শেষ রক্ষা হয়নি। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে দুজনই র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন কারাবন্দি। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলাও হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
আর জিকে শামীমের সঙ্গে সখ্য ও ঘুস নিয়ে কাজ দেয়ার অভিযোগে গণপূর্তের ১৪ জন প্রকৌশলীকে এরইমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ঠিকাদারি খালেদকে করেছিল বেপরোয়া : একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের বহিষ্কৃত আরেক নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। কুমিল্লার মধ্যবিত্ত পরিবারের খালেদ বেড়ে ওঠে মোহাম্মদপুরে। পুরস্কার ঘোষিত পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ মানিকের ‘শিষ্য’ হিসাবে এক সময় স্থায়ী হয় খিলগাঁও, শাহজাহানপুর এলাকায়। তখনও খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার এলাকার চাঁদা তুলেই চলতেন তিনি। কিন্তু যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পাওয়ার পর পেয়ে যান ঠিকাদারি নামের ‘জাদুর কাঠি’। নিজেই গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী। রেল ভবন, বিদ্যুৎ ভবন ও ক্রীড়া পরিষদের টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন তিনি। তবে যুবলীগের আরেক নেতা মিল্কী হত্যাকাণ্ডে ফেঁসে গিয়ে যুবলীগ উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল আমেরিকায় পালিয়ে যান। আর র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান আরেক নেতা তারেক। এই সুযোগে পুরো মতিঝিল এলাকার সব সরকারি ভবনের ঠিকাদারির নিয়ন্ত্রণ যায় খালেদের হাতে। আর এতেই অস্বাভাবিক দ্রুততায় শত শত কোটি টাকার মালিক হন তিনি। বিনিয়োগ করেন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ব্যাংককে। খালেদ এখন কারাবন্দি। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংসহ একাধিক মামলা চলমান।
ফরিদপুরের দুই সহোদর : ফরিদপুরের ঠিকাদারির নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছিলেন স্থানীয় নগর আওয়ামী লীগ নেতা, আলোচিত সহোদর সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল। ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তারা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে আরও আটজন এ মামলায় অভিযুক্ত। তারাও অঢেল ধনসম্পদের মালিক। গ্রেফতারের পর বরকত-রুবেলের ২৫টি প্যাকেজের ঠিকাদারি কাজ বাতিল করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। বাতিল কাজগুলোর চুক্তিমূল্য ৮৮ কোটি ২১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৮৯ টাকা। তাদের বিরুদ্ধে এখন একাধিক মামলা চলমান। রাজশাহীতেও নগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার এমন উত্থানে বিস্ময়ে হতবাক এলাকার মানুষ। এক সময় নগরীর আলুপট্টি মোড়ে ঘুরে বেড়ানো ওই নেতা এক দশকের ব্যবধানে এখন হাজার কোটি টাকার মালিক।
রাজনীতি-ঠিকাদারি : অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠিকাদারির ‘জাদুর কাঠির’ স্পর্শে টাকার কুমির বনে যাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলেও কিছু চেনামুখ শুধু ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে ধনসম্পদের পাহাড় গড়েছিলেন। যশোরের রাজনীতিতে ঠিকাদারদের অনুপ্রবেশ নিয়ে এক সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলাম। অথচ এক সময় এই নেতার হাত ধরেই যশোরের অনেক নেতা ঠিকাদারিতে জড়িয়ে বিতর্কিত হন। সে সময় তরিকুল ইসলাম ও বর্তমান আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য মিলে অংশীদারি ভিত্তিতে গড়েছিলেন একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর যশোরে ঠিকাদারি-রাজনীতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। অভিযোগ আছে, বিএনপি সরকারের আমলে হাওয়া ভবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গিয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। বর্তমানে তিনি কারাবন্দি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার বিচারকাজ চলছে।
রাজনীতি ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করছে, নাকি ঠিকাদাররা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেন-এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, সব মানুষই কোনো-না-কোনোভাবে পেশাজীবী। রাজনীতি করলে ঠিকাদারি করা যাবে না, এমন তো কথা নেই। ঠিকাদারি করা অপরাধও নয়। সবারই বৈধ আয়ের উৎস থাকা দরকার। যে কেউ ঠিকাদারি ব্যবসা করতে পারেন। তবে ঠিকাদারি করতে গিয়ে কারও বিরুদ্ধে অনৈতিকতার অভিযোগ ওঠলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলেছেন, বিগত দুই দশকের ঠিকাদারিতে পার্থক্য অনেক। আগে রাজনীতিবিদরা ঠিকাদারি করে টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। এখন ঠিকাদাররা আধিপত্য বিস্তারের জন্য রাজনীতিতে আসেন।
Leave a Reply