ক্যান্সার ! চিকিৎসার নামে প্রতারণা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, জুন ৩, ২০২১
  • 584 পাঠক
দিশারী রিপোর্ট
—————
দেশে এখন হোমিও-হারবাল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের যেন রমরমা অবস্থা। বাহারি নামের ও অদ্ভুত সব চিকিৎসা ব্যবস্থা এসব প্রতিষ্ঠানের।
রীতিমতো গ্যারান্টি সহকারে নানা প্রকার ছোট-বড় প্রায় সব রোগের নিরাময় হয়।
এমনকি তারা ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিরও চিকিৎসা করতে পারে বলে দাবি করে থাকে। এক রোগ সারাতে গিয়ে তারা নানা জটিল রোগে আক্রান্ত করছে।হাজারও অভিযোগ সত্ত্বেও মানুষকে প্রতারণা করা ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পদক্ষেপ নামমাত্র।
No description available.আজকাল বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্র-পত্রিকাতে নানা সময়ে বিজ্ঞাপন প্রচার বা প্রকাশিত খবর ও দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কগুলো একটি নিজস্ব চ্যানেল প্রচার করে থাকে। এমন চটকদার বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত হয়ে রোগীরা কম টাকায় রোগ উপশমের আশায় এসব হোমিও-হারবাল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।

হোমিও-হারবাল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রতারিত এক যুবক বলেন, টেলিভিশন চ্যানেলে রোগের সমাধান পাবার আশায় একটি হারবাল প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আমার মতো অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। এসব হারবাল প্রতিষ্ঠানে মূলত রোগীরা চিকিৎসা পায় না। তারা উল্টা-পাল্টা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা দেয়, ফলে কোনো উপকার আমরা পাই না বরং পার্শ্বপ্রতিক্রায় হিতের বিপরীত হয়।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এগুলোর অধিকাংশই ভুঁইফোড় এবং নামসর্বস্ব একেকটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো রাজধানীর বেশিরভাগই গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শনিরআখড়া, মালিবাগ, ফার্মগেট ও মিরপুরসহ সারা বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই দেখা যায়। এসব বাহারি নামধারী ভুয়া চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসার টার্গেট হলো মূলত সহজ সরল মানুষরা।

এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় কিছু নারীকর্মী থাকে যাদের কাজ হলো যানবাহনে লিফলেট বিতরণ করা। যাতে লেখা থাকে, চর্ম ও যৌন রোগ থেকে শুরু করে ক্যান্সারসহ সর্ব রোগের রোগের সমাধান। লিফলেটে এমন শব্দ বা বাক্য লেখা থাকে যা দেখে কোমলমতি বাচ্চারা, ছাত্র-ছাত্রী ও বিবেকবান মানুষরা লজ্জায় ও বিভ্রান্ত অবস্থায় পড়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হারবাল প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক বলেন, আমরা মূলত সিটি করপোরেশন, বিএসটিআই ও থানায় নিয়মিত চাঁদা দিয়ে শান্তিতে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে আসছি। আমরা এই চিকিৎসা সেবা রপ্ত করেছি আমার কবিরাজ গুরুর কাছ থেকে। তিনি নিয়েছেন তার গুরুর কাছ থেকে।

No description available.তিনি উল্লেখ করেন, আমার মতো প্রায় ৯৮ শতাংশ চিকিৎসকের সনদপত্র নেই। আমরা চটকদারী বিজ্ঞাপন দিয়ে রোগীদের কাছে টেনে সেবা করে থাকি। যার মূলত কোনো উপকারই রোগীরা পায় না। মাঝে মাঝে কোনো রোগী কাকতালীয়ভাবে উপকার পেয়ে থাকে। হারবাল ও হোমিও চিকিৎসার ওষুধপত্র গুলিস্তান থেকে ক্রয় করি। কিছু কিছু ওষুধ আমরা বাসায় প্রস্তুত করি যা খুশি তা দিয়ে।’

দেশে যত্রতত্র হারবাল চিকিৎসা ও তার বৈজ্ঞানিক গ্রহণ যোগ্যতার সম্পর্কে জানতে চাইলে এক  স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানান, দেশে যত্রতত্র চলছে হারবাল চিকিৎসা সেবার মহাউৎসব। অনেকেরই হারবাল চিকিৎসার সনদ নেই।

প্রায় সব হারবাল ওষুধে এক ধরনের বিষ ব্যবহার করা হয়, আর তা যদি সঠিক পরিমাণে ব্যবহার না করা হয়। তার ফলে একজন সুস্থ মানুষের লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি সবাইকে আরও সচেতন হয়ে সঠিক হারবালের চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করেন।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!