দিশারী রিপোর্ট : জেলার প্রায়স্থানে সরকারী সড়কের দৃষ্টি নন্দনের পাশে শতশত একর কৃষি জমি ভরাট করে গড়ে ওঠছে আবাসন প্রকল্প। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এসব আবাসন করা হলেও কোনটিরই নেই আইনগত কোন বৈধতা।
নোয়াখালীর প্রায় আবাসন প্রকল্পই অনুমোদনহীন বলে অভিযোগ ওঠেছে। কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইনে স্পষ্ট বলা আছে যে, কৃষি জমি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। যদি অন্য কাজে ব্যবহার করা হয় তাহলে ওই জমি সরকারের অধীনে ন্যস্ত হবে। এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠছে একের পর এক এ সব আবাসন প্রকল্প।
বাহারি সাইনবোর্ড আর বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে এসব প্রকল্পের জমি কিনতে আকৃষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অপরিকল্পিতভাবে আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা ধরনের সমস্যার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, নোয়াখালীতে নোয়াখারী পৌরসভা ছাড়াও অনেক এলাকা জেলা প্রশাসনের মাস্টার প্ল্যানের আওতায় রয়েছে। ১৭৭২ সালে সৃষ্ট হওয়া নোয়াখালী জেলায় দাপে দাপে বিভিন্ন সরকারী কর্মপরিকল্পনার কথা মাথায় রেখে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়। এরই মধ্যে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় জেলার কিছু এলাকা পরিকল্পিত নগরায়নের আওতায় এসেছে।
জেলার পৌর এলাকায় কোনো ধরনের আবাসিক প্রকল্প গড়ে তুলতে পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এসব এলাকার কোনো আবাসন প্রকল্প আজ পর্যন্ত সরকারীভাবে কোন অনুমোদন নেয়নি।
সূত্র জানায়, এ জেলায় বর্তমানে শতাধিক আবাসন প্রকল্প বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পৌর এলাকার মধ্যে ৫ একর এবং বাইরে ১০ একর জমি থাকার বিধান থাকলেও কোন কোন প্রতিষ্ঠানের জমি রয়েছে নামমাত্র। যদিও অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানগুলো দেদারছে প্লট বিক্রি করছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, আইন লঙ্ঘন করে এ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠেছে। এ ছাড়া এসব এলাকায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক অনেক আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠেছে। যারা কিছু জমি কিনে বা নিজের নামে পাওয়ার নামা করে আবাসিক প্লট ব্যবসা করছে।
এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মানুষকে আকৃষ্ট করতে ব্যবহার করছেন বাহারি সাইনবোর্ড এবং প্যানা, ফেস্টুন। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কাছে ২, ৩, ৫, ৭ ও ১০ কাঠার প্লট বিক্রি করছে। এসব প্রকল্পে সরকারের অনুমোদন আছে কিনা, তা না জেনেই প্লট কিনছেন। এক প্রপার্টিজ’র কর্ণধার বলেন, আমরা নিজেদের বৈধ টাকায় জমি কিনে প্লট আকারে বিক্রি করছি। এত সরকারের কি!
অনুমোদনহীন আবাসন প্রকল্পের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা চাই যে সবাই আইনকে শ্রদ্ধা করে সরকারের আইন মেনে চলুক। তাহলে সুন্দর নগরায়ন হবে। যারা এই আইন মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই অবস্থান নেবো।
জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার চাইলে অবৈধ আবাসন প্রকল্প উচ্ছেদ অভিযানও করতে পারি। যাতে নোয়াখালী সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে ওঠে । ভবিষ্যতে আইন অমান্যকারীদের বিরূদ্ধে আরো কঠোর হওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।
Leave a Reply