একদিকে প্রবাসী আয় করমুক্ত, অন্যদিকে বৈধ পথে তা পাঠালে ২ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা পাওয়া যাচ্ছে, সে কারণেও অনেকে বৈধ পথে টাকা পাঠাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে প্রবাসী আয় বেড়েছে, এমন সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
এ ছাড়া আরেকটি প্রবণতা হলো, দেশে পরিবার সংকটে পড়লে অনেক প্রবাসী বেশি বেশি টাকা পাঠান। আবার তাঁরা যেসব দেশে থাকেন, সেসব দেশেও সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সে কারণে তাঁরা বেশি বেশি টাকা পাঠিয়েছেন।
অনেকে আবার এ সুযোগে বিদেশে গচ্ছিত কালোটাকা সাদা করতে বৈধ পথে টাকা পাঠিয়েছেন। এ রকম নানা ব্যাপার এখানে কাজ করেছে বলেই মনে করি। তবে মোদ্দাকথা হলো, এ সংকটের সময় প্রবাসী আয় আসা কমেনি। অর্থনীতিতে তার প্রভাব আছে।
এখন পর্যন্ত প্রবাসী আয়প্রবাহ কমেনি, কিন্তু মহামারি যেভাবে দীর্ঘায়িত হচ্ছে, একের পর এক ঢেউ আসছে, তাতে ভবিষ্যতে প্রবাসী প্রবাহে টান পড়বে না, এমন কথা হলফ করে বলা যাবে না। যেসব দেশে আমাদের দেশের শ্রমিকেরা যাচ্ছেন, সেই দেশগুলোও সংকটে আছে।
ফলে তারা কত শ্রমিক নেবে, সেটা নির্ভর করবে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ওপর। এ পরিস্থিতিতে সেই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ বৃদ্ধি করা উচিত। এ যোগাযোগ থাকলে শ্রমিক পাঠানো সহজ হয়। এর সঙ্গে আছে স্বাস্থ্যবিধির শর্ত।
এ ছাড়া শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় একটি বাধা হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ফি। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যত টাকা দাবি করে, তাতে অনেকের পক্ষেই বিদেশে যাওয়া সম্ভব হয় না। আমাদের সানেমের জরিপে এ তথ্য ওঠে এসেছে।
জরিপে জানা গেছে, শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়ার খরচ বেড়েছে ২৩ শতাংশ। আমাদের এ জরিপে দেখা গেছে, করোনার সময় ২০ শতাংশ প্রবাসী শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন এবং ৫ শতাংশ দেশে ফেরত এসেছেন।
এ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার বিকল্প নেই। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সেই সক্ষমতা দেখা যাচ্ছে না।
মহামারির আগে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের গতি শ্লথ ছিল। করোনার প্রাদুর্ভাবে এ সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে।
ফলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া নির্ভর করছে শ্রমবাজার কত দ্রুত পুনরুদ্ধার করা যায় তার ওপর।এ পরিস্থিতিতে সরকারের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা দরকার।
Leave a Reply