নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : পরিবেশ আইন ও খামারনীতি না মেনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যত্রতত্র গড়ে ওঠেছে পোলট্রি খামার। ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে মারাত্বকভাবে।
উপজেলাজুড়ে দেখা গেছে, কারও ভবনের ছাদে, বসতবাড়ির আঙিনায়, পুকুর পাড়ে, ফসলি জমিতে, খালের পাড়ে, রাস্তার গাঁঘেষে গড়ে তোলা হয়েছে পোলট্রি ফার্ম। পোলট্রি খামার করার ক্ষেত্রে প্রাণি সম্পদের ছাড়পত্র ও গঠনপদ্ধতি অনুযায়ী করার কথা থাকলেও এসব খামার নির্মাণে তা মানা হয়নি।
এসব খামারের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের লাইসেন্স। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি বা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে নিবন্ধিত হতে হবে। নিয়মবহির্ভূত এসব পোলট্রি খামার গড়ে ওঠায় এর প্রভাব পড়েছে পুরো উপজেলাজুড়ে।
এতে ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে এখানকার মানুষের জীবন যাত্রা। কৃষি জমিতে পড়েছে এর মারাত্মক প্রভাব।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার চর হাজারি, চর এলাহি, সিরাজপুর,চর কাঁকড়া অঞ্চলের ৯৫ শতাংশ খামারের বর্জ্য পরিবেশ দূষিত করছে। এসব খামারের ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলার কারণে জমিতে পানি দেয়াসহ দেখা দিচ্ছে বিশুদ্ধ পানি সংকট। পরিবেশ হয়ে যাচ্ছে দুর্গন্ধময়।
জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন ২০০৮ নীতিমালায় বলা হয়েছে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, শহর এলাকা ও মানুষের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না। এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশে গড়ে তোলা হয়েছে এসব পোলট্রি ফার্ম। নীতিমালা অনুযায়ী একটা বাণিজ্যিক পোলট্রি খামার স্থাপনের ক্ষেত্রে একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব ২০০ মিটার থাকলেও এখানে একটির পাশাপাশি আরেকটি রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জে ব্রয়লার , লেয়ার, সোনালি খামারের যে সংখ্যা দেখানো রয়েছে , বাস্তবে উপজেলাজুড়ে রয়েছে তার চেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, দৈনন্দিন মানুষের ডিমের চাহিদা মেটানো ও জীবন জীবিকা তথা কর্মসংস্থানের জন্য এসব খামারের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তবে নিয়মনীতি মেনে খামার করতে গেলে একটি খামারও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। সুবিধা অসুবিধা সবকিছুকে সঙ্গে নিয়েই সমন্বয় করে চলতে হয়।
Leave a Reply