———————
৯ অক্টোবর, (আজ) বিশ্ব ডাক দিবস। ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়নের (ইউপিইউ) সমন্বিত উন্নয়ন সূচকে ডাকসেবায় বাংলাদেশের অবস্থান এবারও নিচের দিকে।
গত শুক্রবার প্রকাশিত ওই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ধাপে। এই ধাপে বাংলাদেশের সঙ্গী আফগানিস্তানসহ ৪৮টি দেশ।
চলতি বছরের ইন্টিগ্রেটেড ইনডেক্স ফর পোস্টাল ডেভেলপমেন্ট (২ আইপিডি) প্রতিবেদনে ডাকসেবার মান বিচারে ১৭২টি দেশকে ১০টি ধাপে ভাগ করা হয়।
গত বছর ২০২১ সালের ডাকসেবার মূল্যায়ন করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। এতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০-এর মধ্যে ১৩.৯। আফগানিস্তানের ১২.৬। আর সর্বোচ্চ সপ্তম থেকে দশম ধাপে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জাপান, চীনসহ ৩২টি দেশ। সুইজারল্যান্ড আগের পাঁচবারের মতো এবারও শতভাগ স্কোর নিয়ে সবার শীর্ষে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ৫৭.৩ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ ধাপে এবং পাকিস্তান ২৩.০১ স্কোর অর্জন করে পঞ্চম ধাপে উন্নীত হয়েছে।
প্রতিবেদনে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ডাকসেবায় নির্ভরযোগ্য দেশ হিসেবে ফিলিপাইন, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, ইরান ও ইন্দোনেশিয়াকে চিহ্নিত করে জানানো হয়েছে, এ দেশগুলোর ডাকসেবার মান দ্রুত উন্নতির দিকে।
এই প্রতিবেদন সম্পর্কে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ওরা আমাদের কাছ থেকে, সরকারের কাছ থেকে কোনো তথ্য নেয় না। সে কারণে ডাকঘর বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য তাদের অজানা থেকে যায়। নেতিবাচক অবস্থাগুলোই গুরুত্ব বেশি পায়। ’
গত বছরের ‘২ আইপিডি’ প্রতিবেদনেও বার্ষিক র্যাংকিংয়ে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৫ ধাপ পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ।
গত বছর ১৬৮টি দেশের মধ্যে ১০.০২ পয়েন্ট পেয়ে বাংলাদেশ ছিল ১৪৩ নম্বরে। প্রতিবেশী ভারত ৪৭.১৬ পয়েন্ট নিয়ে ছিল ৫০ নম্বরে। এ ছাড়া পাকিস্তান ৬২, শ্রীলঙ্কা ৬০ ও নেপাল ১২৯ নম্বরে ছিল। ‘২ আইপিডি’ প্রতিবেদনে এবার নম্বরভিত্তিক র্যাংকিং না করে ধাপভিত্তিক করা হয়েছে।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. ফয়জুল আজিম এ বিষয়ে বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিমান চলাচলে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় বিদেশ থেকে এবং দেশ থেকে দেশের বাইরে পার্সেলে বিভিন্ন পণ্য পাঠানো এবং আনার ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়ি। এ কারণে হয়তো ইউপিইউর র্যাংকিংয়ে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। ’
এসব বিষয় সম্পর্কে আঞ্চলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার সিনিয়র রিসার্স ফেলো আবু সাঈদ খান বলেন, ‘ডাক বিভাগের দুর্নীতির মূল-উৎপাটন না করে এর উন্নয়ন সম্ভব নয়। গ্রামীণ ডাকঘরগুলো অস্তিত্ব সংকটে। ই-কমার্সের যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে তা আমাদের ডাক অধিদপ্তর কাজে লাগাতে পারছে না। সাধারণ নাগরিক এবং খোদ সরকারের অনেক দপ্তর ডাক বিভাগের সেবার ওপর আস্থা রাখতে পারে না। সার্বিক এ অবস্থায় ডাক বিভাগকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে না পারলে দেশে এর সেবার উন্নয়ন হবে না। ’
Leave a Reply