মাইমুনা আক্তার । ২০ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।
দেউলিয়া মানে হলো দেনা আদায়ে অক্ষম বা নিঃস্ব। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দেশ যখন পাওনাদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয়, তখন ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়।
মানুষের এমন কিছু অভ্যাস আছে, যেগুলো কারো মধ্যে বিদ্যমান থাকলে কিয়ামতের দিন বহু নামাজ, রোজা, জাকাত ইত্যাদি আমলনামা নিয়ে উঠেও শেষমেশ তাদের দেউলিয়া হয়ে জাহান্নামে চলে যেতে হবে। তাই নবীজি (সা.) তাঁর উম্মতদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জানো, দেউলিয়া কে ? তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোনো সম্পদও নেই।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার উম্মাতের মধ্যে সেই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া, যে কিয়ামত দিবসে নামাজ, রোজা, জাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সঙ্গে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল থেকে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে।
এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেয়ার আগেই তার সৎ আমল নিঃশেষ হয়ে গেলে তাদের গুনাহসমূহ তার ওপর চাপিয়ে দেয়া হবে, তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৮)
তাই আমাদের উচিত গুরুত্ব সহকারে নেক আমল করার পাশাপাশি এ বিষয়েও সতর্ক থাকা যে আমাদের মাধ্যমে যাতে কারো কখনো ক্ষতি না হয়, কাউকে যেন আমাদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর আদালতে কখনো দাঁড়াতে না হয়।
হাদিসে উল্লেখিত সব পাপ ব্যাপকভাবে সবাই না করলেও, গালি দেয়া ও মিথ্যা অপবাদ দেয়ার কাজে যে কেউ লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। এবং এগুলোকে তো আজকাল অপরাধই মনে করা হয় না, যা আমাদের জন্য আরো ভয়ংকর ; কারণ অপরাধ মনে করা হলে মানুষ কখনো না কখনো আল্লাহর ভয়ে তাওবা করবে, যাকে গালি দিয়েছে বা অপবাদ দিয়েছে, তার কাছে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু অপরাধ না মনে করলেও তো এই পাপ নিয়েই দুনিয়া থেকে চলে যাবে।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে অন্যের কষ্টের কারণ হওয়া থেকে বিরত রাখুন। আমিন।
Leave a Reply