মোবাইল, লুডু , জুয়ায় আসক্ত হচ্ছে তরুণরা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, আগস্ট ২৪, ২০২১
  • 610 পাঠক

নিজস্ব প্রতিনিধি : লুডু খেলাটি এখন সারাবিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছে। যার একটি হচ্ছে এনালগ ও অন্যটি হচ্ছে ডিজিটাল সংস্করণ। এনালগের বিষয়ে কমবেশি সবাই বুঝি যেটা কাগজের তৈরি কোটে খেলতে হয়।

কথা হচ্ছে ডিজিটাল ভার্সন নিয়ে যেটা খেলাটিকে সহজ করে দিয়েছে। যা স্মার্ট ফোন ট্যাব ও ইলেকট্রনিকস ডিভাইস দিয়ে খেলা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে এ খেলার পাশাপাশি আরেকটি মাত্রা যোগ হয়েছে যার নাম হচ্ছে বাজি নামক জুয়া।

তবে এই জুয়া থেকে নোয়াখালী কিন্তু পিছিয়ে নেই। প্রকাশ্যে জুয়া খেলা যদি একটি সামাজিক অপরাধ হয় তবে যারা বাজি নামক জুয়া খেলে তাদেরকে কোন কাতারে ফেলবেন? শহর থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে বাজি জুয়ার প্রভাব। তবে যুব সমাজ বেশি করে ঝুঁকে যাচ্ছে এর দিকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, তারাও পর্যন্ত এ কাজের সাথে যুক্ত রয়েছে। মোট কথা যুবসমাজ এতে ব্যাপক আসক্ত হয়েছে। পৌর এলাকায় অলিগলি থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে চায়ের দোকানপাটগুলোতে, রাস্তার পাশে সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে লুডু জুয়া চালিয়ে যাচ্ছে।

আবার এ খেলার মধ্যে জালিয়াতি করে অনেকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একদল চক্র। এই চক্রটি ডিজিটাল লুডুর অ্যালগরিদম ও প্রোগ্রাম সম্পর্কে অবগত যে কারণে গুটি কোন অবস্থায় থাকাকালীন কোন চালটি ওঠবে এবং কোনটি ওঠবে না সেটি তারা জানে। যে কারনে হঠাৎ কাউকে বোকা বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতে পারছে।

ধীরে ধীরে যুবসমাজ আসক্তি হয়ে গেছে এই বাজি নামক জুয়ার দিকে। কে গ্যারান্টি দিতে পারে এরা ভবিষ্যতে অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হবে না। বাজি নামক জুয়া যুব সমাজের অবক্ষয়ের অন্যতম একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিভিন্ন গ্রামে প্রায় প্রতিটি চায়ের দোকানে রয়েছে লুডু খেলার ব্যবস্থা। রাস্তার পাশে রয়েছে তাস ও লুডু খেলার আড্ডা।

ছাত্র ও যুবকদের বেশিরভাগ অংশই সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা সেই খেলায় সময় দিচ্ছে। বলা যায়, সময়জ্ঞান নেই বলেই তারা সময়কে বিপথে কাজে লাগাচ্ছে। এই কারণে ধ্বংস নামছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। যুব সমাজ জুয়ার সাথে মিশে যাচ্ছে। বিপর্যস্ত হচ্ছে তারা। বাক-প্রতিবন্ধি মানুষের মতই সমাজের একটি প্রবীণ শ্রেণি নিজেদেরকে পুরোপুরি সম্পৃক্ত না করলেও বাধা দিচ্ছেন না।

অন্যদিকে প্রচলিত আইনেও এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিশেষ করে রাস্তার পাশে দোকানগুলোতে কেরাম, লুডু ও তাস খেলাতো সম্পূর্ণ অবৈধ।

তবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ক্লাবগুলোতে সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে খেলতে বাধা নেই প্রচলিত আইনে।

তথাপি অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এর ভিন্ন চিত্র। ছাত্র ও যুবকরা খেলায় প্রতিযোগীতার পাশাপাশি বাজি ধরে অনেক সময়ই খেলে থাকে। কোন কোন সময় বাজি টাকার অংকে না হলেও সেটি দোকানের বিভিন্ন কোমল পানীয়, সাবান, তৈল অথবা ফাস্টফুড আইটেম হয়ে থাকে।

এতে করে ছাত্ররা প্রতিদিন অনেক টাকা অনর্থক ব্যয় করে। পাশাপাশি বোর্ড ভাড়া দিয়ে আবার অতিরিক্ত টাকা গচ্ছা দিতে হয়। ছাত্রদের বাবার পকেটের টাকা ব্যতীত আয়ের তেমন কোন উৎস নেই।

প্রতিনিয়ত টাকা বাজে পথে খরচ করতে গিয়ে ঘরে চুরির অভ্যাস গড়ে ওঠে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। বাজি ধরা বা জুয়া নামক এই সামাজিক ব্যাধিতে অনেক পরিবার ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে।

এদিকে, প্রায় প্রতিটি দোকানেই টেলিভিশন চালিয়ে গভির রাত পর্যন্ত আড্ডায় মগ্ন থাকে এলাকার কিছু লোক। তাতে করেও চোর-ডাকাতের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সুশীল সমাজ।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!