মহানবী (সা.) বিভিন্ন নামাজের পর সাহাবায়ে কেরামের দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসতেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তোমাদের মধ্য হতে কেউ যেন তার পক্ষ থেকে শয়তানের জন্য কোনো অংশ নির্ধারণ না করে। অর্থাৎ সে যেন এরূপ মনে না করে যে, নামাজ শেষে ডান দিকে ছাড়া অন্য কোনো দিকে মুখ ফেরানো যাবে না। কেননা আমি বেশির ভাগ সময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বাম দিকে মুখ ফেরাতে দেখেছি।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫২৩)
আরো অনেক হাদিসে প্রিয় নবী (সা.)-এর মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসার প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি নামাজের পর মুসল্লিদের দিকে মুখ করে বসে তাদের মহান আল্লাহর বিভিন্ন বাণী ও নির্দেশন শোনাতেন, কখনো কখনো তাদের বিভিন্ন সমস্যা বা স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাইতেন।
জায়েদ ইবনে খালিদ জুহানি (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) রাতে বৃষ্টি হওয়ার পর হুদায়বিয়াতে আমাদের নিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষ করে তিনি লোকদের দিকে ফিরিয়ে বলেন, তোমরা কি জান, তোমাদের পরাক্রমশালী ও মহিমাময় প্রতিপালক কি বলেছেন? তাঁরা বলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই বেশি জানেন।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, (রব) বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে কেউ আমার প্রতি মুমিন হয়ে গেল এবং কেউ কাফির। যে বলেছে, আল্লাহর করুণা ও রহমতে আমরা বৃষ্টি লাভ করেছি, সে হলো আমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি অবিশ্বাসী। আর যে বলেছে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের ওপর বৃষ্টিপাত হয়েছে, সে আমার প্রতি অবিশ্বাসী হয়েছে এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাসী হয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৮৪৬)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সামুরাহ ইবনে জুনদাব (রা.) বলেন, নবী (সা.) ফজরের নামাজ আদায়ান্তে লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন এবং বলতেন, তোমাদের কেউ কি গত রাতে কোনো স্বপ্ন দেখেছ? (মুসলিম, হাদিস : ৫৮৩১)
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বোঝা যায়, নামাজের পর কিবলা থেকে ঘুরে মুসল্লিদের দিকে মুখ করে বসা দোষণীয় কিছু নয়। এবং এটি আদবের পরিপন্থী নয়। তবে এভাবে বসা ওয়াজিবও নয়, সুন্নত হিসেবে কেউ বসতে চাইলে বসতে পারে।
Leave a Reply