মুফতি আতাউর রহমান
———————-
‘রাজ্জাক’ (জীবিকা দানকারী) মহান আল্লাহর একটি সত্তাগত গুণ বা গুণবাচক নাম। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে আল্লাহ নিজেকে ‘রাজ্জাক’ বা জীবিকা দানকারী হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং বলেছেন, জীবিকা তিনিই দান করেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের হালাল ও পবিত্র যা দিয়েছেন তা থেকে তোমরা আহার করো এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করো। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১১৪)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ অবশ্যই তাদের উত্তম জীবিকা দান করবেন।
নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম জীবিকা দানকারী। ’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৫৮)
আল্লামা খাত্তাবি (রহ.) বলেন, ‘রাজ্জাক তিনি যিনি জীবিকা নির্বাহ করেন এবং যাঁর প্রদত্ত জীবিকার ওপর প্রতিটি জীবের অস্তিত্ব নির্ভর করে। তাঁর জীবিকা ও অনুগ্রহ সব সৃষ্টিকে অন্তর্ভুক্ত করে। জীবিকার ক্ষেত্রে আল্লাহ অবিশ্বাসী থেকে বিশ্বাসীকে এবং শত্রু থেকে বন্ধুকে পৃথক করেননি। আল্লাহর জীবিকা পৌঁছে দুর্বল ও অসহায়দের কাছে যাদের কোনো উপায় নেই এবং তাদের কাছেও যারা শক্তিশালী ও সামর্থ্যবান। নিম্নোক্ত আয়াত থেকে এই ব্যাপকতার ধারণা লাভ করা যায়।
ইরশাদ হয়েছে, ‘এমন কত জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মজুদ রাখে না। আল্লাহই জীবিকা দান করেন তাদের ও তোমাদের; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৬০; শানুদ দোয়া, পৃষ্ঠা ৫৪)
আল্লামা খাত্তাবি (রহ.) আরো বলেন, ‘জীবিকা কখনো কারণে পৌঁছায় আবার কখনো কারণ ছাড়াই পৌঁছায়। কখনো তা প্রার্থনার কারণে মেলে, কখনো প্রার্থনা ছাড়াই মেলে। কখনো কখনো মানুষ ইচ্ছা ছাড়াই সম্পদের মালিক হয়ে যায়। সামগ্রিক অর্থে এর সবই জীবিকার অন্তর্ভুক্ত। বান্দার হাতে বৈধ ও অবৈধ যা কিছু পৌঁছায় তার সবই জীবিকা। তবে বৈধ হলে তাকে হালাল এবং অবৈধ হলে তাকে হারাম বলা হয়। ’ (শানুদ দোয়া, পৃষ্ঠা ৫৪)
আল্লাহ যাকে ইচ্ছা জীবিকা বাড়িয়ে দেন এবং যাকে ইচ্ছা জীবিকা কমিয়ে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা তার জীবনোপকরণ বাড়িয়ে দেন এবং সংকুচিত করেন। তারা পার্থিব জীবন নিয়ে উল্লসিত। অথচ পার্থিব জীবন পরকালের তুলনায় ক্ষণস্থায়ী ভোগমাত্র। ’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২৬)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া
Leave a Reply