নিজের পাপের শাস্তি কামনা নিষিদ্ধ

  • আপডেট সময় রবিবার, অক্টোবর ৩০, ২০২২
  • 207 পাঠক

দিশারী ডেস্ক

————-
মহান আল্লাহ আমাদের ছোট-বড় প্রতিটি কাজের নজরদারি করেন। কোনো কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে ঘটানো সম্ভব নয়। কারণ তিনি প্রবল পরাক্রমশালী প্রভু। সব কিছুর নিয়ন্ত্রক।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনি আল্লাহ, যিনি সাত আসমান এবং অনুরূপ জমিন সৃষ্টি করেছেন; এগুলোর মাঝে তাঁর নির্দেশ অবতীর্ণ হয়, যেন তোমরা জানতে পারো যে আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান এবং আল্লাহর জ্ঞান তো সব কিছুকে বেষ্টন করে আছে। ’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ১২)

তিনি বান্দার প্রতিটি কাজ যেমন পর্যবেক্ষণ করেন, আমাদের ছোট-বড়, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব কাজের হিসাব তাঁর কাছে আছে। তাই প্রতিটি মানুষকেই তার কর্মফল ভোগ করতে হবে। যার কর্ম যেমন হবে, তার ফলও তেমন হবে। হ্যাঁ, মহান আল্লাহ যদি কারো ওপর দয়া করে তাঁকে বিনা হিসাবে ক্ষমা করে দেন, সেটা ভিন্ন কথা।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব, কেউ অণু পরিমাণ সৎকাজ করলে তা সে দেখবে, আর কেউ অণু পরিমাণ অসৎকাজ করলে সে তা-ও দেখবে। ’ (সুরা : জিলজাল, আয়াত : ৭-৮)

অর্থাৎ পরকালে মানুষকে তার প্রতিটি কাজের হিসাব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দিতে হবে। তবে মহান আল্লাহ কখনো কখনো কিছু কিছু পাপের শাস্তি মানুষকে দুনিয়ায়ই দিয়ে দেন। কোরআনের ভাষ্য মতে মহান আল্লাহ যদি কাউকে তার কোনো পাপের শাস্তি দুনিয়ায় দিয়ে দেন, সেটা তার জন্য কল্যাণকর। আখিরাতের শাস্তি দুনিয়ার শাস্তির চেয়ে বেশি কঠিন ও স্থায়ী। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আখিরাতের আজাব তো অবশ্যই কঠোরতর ও অধিকতর স্থায়ী। ’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৭)

তাই দুনিয়ায় সৎপথে চলার পরও কোনো বিপদাপদ কিংবা রোগব্যাধির সম্মুখীন হলে ধৈর্য না হারিয়ে বরং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা উচিত। হতে পারে সাময়িক এই কষ্টের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বড় কোনো পাপের শাস্তি থেকে বাঁচিয়ে দেবেন। তবে কোনোভাবে নিজের পাপের শাস্তি দুনিয়ায়ই হয়ে যাক, এই দোয়া করা যাবে না। কারণ মহানবী (সা.) এমন দোয়া করতে নিষেধ করেছেন। বরং আল্লাহর কাছে সর্বদা সমুদয় পাপ থেকে ক্ষমা চাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন মুসলিম রোগীকে সেবা করতে গেলেন। সে (অসুখে কাতর হয়ে) অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল, এমনকি সে পাখির ছানার মতো হয়ে গেল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, তুমি কি কোনো বিষয় প্রার্থনা করছিলে অথবা আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কিছু চেয়েছিলে? সে বলল, হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহ! আপনি পরকালে আমাকে যে সাজা দেবেন তা ইহকালেই দিয়ে দিন। সে সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সুবহানাল্লাহ! তোমার এমন সামর্থ্য নেই যে তা বহন করবে। অথবা তুমি তা সহ্য করতে পরবে না। তুমি এমনটি বললে না কেন—হে আল্লাহ! আমাদের কল্যাণ দাও পৃথিবীতে এবং কল্যাণ দান করো পরকালেও। আর জাহান্নাম থেকে আমাদের রক্ষা করো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, তখন তিনি (নবীজি) তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, আর আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দেন। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭২৮)

তাই আমাদের উচিত, সর্বদা মহান আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করা, দুনিয়ার বিপদাপদ ও আখিরাতের শাস্তি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!