সব কাজে আল্লাহর নির্দেশনা পালন

  • আপডেট সময় শনিবার, মার্চ ৪, ২০২৩
  • 119 পাঠক

জাওয়াদ তাহের
০৪ মার্চ, ২০২৩

————-

আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য দ্বিন হিসেবে ইসলামকে নির্বাচন করেছেন। আর পরিপূর্ণ দ্বিন মানার নামই হচ্ছে ইসলাম। আংশিক মানলাম আর কিছু অমান্য করলাম এটার নাম দ্বিন-ইসলাম নয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২০৮)

আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছে তার একটি দিক ভালো থাকলে অন্যদিকে আবার মন্দ। সমাজে এমন বহু মানুষ পাওয়া যাবে, যারা খুব নামাজে পাবন্দি, প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করে, খুব আল্লাহভীরু। কিন্তু সে আত্মীয়তার হক রক্ষা করে না।

আবার অনেককে এমন পাবেন, আত্মীয়তার ব্যাপারে খুবই সচেষ্ট; কিন্তু সে সন্তানদের ব্যাপারে খুব উদাসীন। সন্তানদের হক ঠিকমতো আদায় করে না। আবার কাউকে পাবেন সন্তানদের হক ঠিকমতো আদায় করে; কিন্তু সে মা-বাবার অবাধ্য সন্তান। অথবা তার লেনদেন খুবই খারাপ। অথচ ইসলাম এগুলোর কোনোটি সমর্থন করে না।

অনেক মানুষ এমনও আছে, যারা মা-বাবার সঙ্গে খুবই সদ্ব্যবহার করে; কিন্তু সে তার স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে না। স্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর আচরণ করে না। অথবা এমনও পাওয়া যাবে, স্ত্রীর সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে চলে; কিন্তু সে তার প্রতিবেশীর হক রক্ষা করে না। প্রতিবেশীর সঙ্গে সে দুর্ব্যবহার করে। অথচ হাদিসে প্রতিবেশীর হকের কথা জোরালোভাবে উচ্চারিত হয়েছে।

অনেকে আবার এমন রয়েছে, যে ব্যক্তিগত কাজগুলো খুব গুরুত্বসহ পালন করার চেষ্টা করে; কিন্তু সামাজিক যেসব কাজ আছে, তার ওপর যেসব দায়িত্ব রয়েছে, সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন।

আমাদের মাঝে এমন অনেক দ্বিনদার মানুষ আছে, যারা ফরজ বিধানের ব্যাপারে খুব যত্নবান ও সচেষ্ট। কিন্তু ইসলামের যেসব আদাব বা শিষ্টাচার আছে, এগুলোর ব্যাপারে একদমই উদাসীন। সালাম দেওয়া, খাওয়া ও পান করা এবং মজলিশের আদব ও কথাবার্তার যেসব আদব আছে এগুলোর ব্যাপারে তার তেমন গুরুত্ব নেই। অথচ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি সর্বোত্তম স্বভাব-চরিত্রকে পূর্ণতা দান করার জন্য প্রেরিত হয়েছি।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ২৭৩)

অথচ ইসলাম আংশিক কোনো বিষয়কে মানার নাম নয়। এসব হচ্ছে ইসলামের বিকৃত উপস্থাপন। প্রিয় নবী (সা.) আমাদের যা কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেছেন, সবই অনুসরণ করানো হচ্ছে ইসলাম। রাসুল (সা.) আমাদের কাছে যে নুর নিয়ে এসেছেন তার অনুসরণ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করবে। আর তখনই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র সব জায়গায় শান্তির বাতাস বইতে থাকবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে কিতাবিরা, তোমাদের কাছে আমার (এই) রাসুল এসে পড়েছে, যে (তাওরাত ও ইনজিল) গ্রন্থের এমন বহু কথা তোমাদের কাছে প্রকাশ করে, যা তোমরা গোপন কর এবং অনেক বিষয় এড়িয়ে যাও। আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এক জ্যোতি এবং এমন এক কিতাব এসেছে, যা (সত্যকে) সুস্পষ্ট করে। যার মাধ্যমে আল্লাহ যারা তাঁর সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করে, তাদের শান্তির পথ দেখান এবং নিজ ইচ্ছায় তাদের অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে আসেন এবং তাদের সরল পথের দিশা দেন। (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ১৫, ১৬)

অন্যত্র ইরাশাদ হয়েছে, ‘…তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখো আর কিছু অংশ অস্বীকার করো? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ছাড়া তাদের কী প্রতিফল হতে পারে? আর কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন আজাবে নিক্ষেপ করা হবে। আর তোমরা যা করো, সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৮৫)

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!