ষড়যন্ত্র করা গুরুতর পাপ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, জুন ১৩, ২০২৩
  • 192 পাঠক

সাআদ তাশফিন। ০৯ জুন, ২০২৩ ।

——————————–

কিছু মানুষ সংশোধনের নামে ষড়যন্ত্র করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য থাকে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। অন্যকে ফিতনায় ফেলে দেয়া। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা সাদাকে কালো আর কালোকে সাদা উপস্থাপন করে মানুষকে ধোঁকা দেয়।

পবিত্র কোরআনে এই অভ্যাসটিকে মোনাফিকের অভ্যাস আখ্যা দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন তাদের বলা হয়, তোমরা জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করো না। তারা বলে, আমরা তো কেবল সংশোধনকারী।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১১)

যারা অন্যদের বিপদে ফেলতে সর্বদা নতুন ফন্দি আঁটে, তাদের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করে, তারা মূলত শয়তানের দোসর।

বলা যায় শয়তানের প্রতিবিম্ব। এরা সারাক্ষণ অন্যের ক্ষতি করে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। অন্যকে ফাঁসানোর জন্য তারা যে পরিমাণ মেধা খরচ করে, তা যদি নিজের স্কিল ডেভেলপ বা ইবাদতে করার পেছনে ব্যয় করত, তাহলে তাদের দুনিয়া ও আখিরাত আরো সুন্দর হতো। কিন্তু তা না করে তারা এমন কাজে লিপ্ত করে, যা তাদের নবীজি (সা.)-এর দেয়া অভিশাপের পাত্র বানিয়ে দেয়।

প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)
পবিত্র কোরআনের ভাষ্যমতে, যারা চক্রান্ত করে, তাদের চক্রান্ত তাদেরই ঘিরে ধরে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ কিছু চক্রান্তকারী দুষ্ট লোককে নিন্দা করতে গিয়ে বলেন, ‘আর তারা দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহর নামে কসম করে বলত যে যদি তাদের কাছে কোনো সতর্ককারী আসে, তাহলে তারা অবশ্যই অন্য যেকোনো জাতির চেয়ে অধিক হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে; কিন্তু যখন তাদের কাছে সতর্ককারী এলো, তখন তা কেবল তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি করল। জমিনে উদ্ধত আচরণ আর কুচক্রান্ত। কুচক্রান্ত তাকেই ঘিরে ধরবে যে তা করবে।

তাহলে তারা কি তাদের পূর্ববর্তীদের ওপর (আল্লাহর পক্ষ থেকে) যে বিধান প্রয়োগ করা হয়েছে তারই অপেক্ষা করছে? তুমি আল্লাহর বিধানে কখনো কোনো পরিবর্তন পাবে না। তুমি আল্লাহর বিধানে কখনো কোনো ব্যতিক্রম পাবে না।’ (সুরা : ফাতির, আয়াত : ৪২-৪৩)

অর্থাৎ কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকে বিপদে ফেলে দেওয়া সফলতা নয়; বরং এটি নিজের বিপদকে কাছে আনার একটি প্রক্রিয়া। তাদের চক্রান্তের জালে তারা নিজেরাই আটকা পড়বে। চক্রান্ত করে তারা অন্যের ক্ষতি করতে সক্ষম হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। কিন্তু তাদের ক্ষতি নিশ্চিত হবে।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তাআলা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)

সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো, এই অভ্যাসটি মানুষকে মহান আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে দেয়। সে অন্যের বিরোধিতা করার কারণে স্বয়ং আল্লাহ তার বিরোধী হয়ে যান। আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)

মহান আল্লাহ যার বিরোধী হবেন, তাকে রক্ষা করার কেউ নেই। তার চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ নেই।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!