আহমাদ রাইদ ।৩০ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ।
গিবত তথা অন্যের দোষচর্চা কত ভয়ংকরভাবে পরিবার ও সমাজকে প্রভাবিত করতে পারে, মহানবী (সা.)-এর যুগে ইফকের ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। বনু মুসতালিক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই অপবাদ আরোপের মাধ্যমে নবীপত্নী আয়েশা ছিদ্দিকা (রা.)-এর চরিত্রে যে কলঙ্ক লেপন করার অপচেষ্টা করেছিল।
সাময়িকভাবে অনেকেই তাতে প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং আয়েশা (রা.)-এর ব্যাপারে মন্দ ধারণা করা শুরু করেছিলেন। এই ঘটনা কেন্দ্র করে মদিনার আউস ও খাজরাজ গোত্রের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল।
এই অশান্তির আগুন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পরিবারকেও সাময়িকভাবে প্রভাবিত করেছিল এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) ও আয়েশা (রা.)-এর মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছিল। পরে মহান আল্লাহ সুরা নূরের ১০টি আয়াত নাজিল করে আয়েশা (রা.)-কে অপবাদমুক্ত করেন। এবং প্রকৃত সত্য সবার সামনে উম্মোচন করেন।
প্রশ্ন হলো, অপবাদ ও পরচর্চা যদি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় তাঁর সমাজ ও পরিবারকে এভাবে প্রভাবিত করতে পারে, তাহলে আমাদের পরিবার ও সমাজকে তা কত দ্রুত প্রভাবিত করতে পারে, তা বলাই বাহুল্য।
আর মহানবী (সা.)-এর যুগে ওহির মাধ্যমে সত্য জানার একটা সুযোগ ছিল, এখন তো সেটাও নেই। সুতরাং এই মহা পাপ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জরুরি।
গিবতের মাধ্যমে পরিবার ও সমাজ যেভাবে কলুষিত হয়, তেমনি প্রাকৃতিক পরিবেশও দূষিত হয়। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে একবার প্রচণ্ড দুর্গন্ধময় বাতাস প্রবাহিত হলো।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মুনাফিকদের মধ্যে কিছু মানুষ কতিপয় মুসলমানের দোষচর্চা করেছে। ফলে এই দুর্গন্ধময় বাতাস পাঠানো হয়েছে। (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৭৩৩)। আসলে এটি ছিল মহানবী (সা.)-এর মুজিজা। তিনি ওহির মাধ্যমে গিবতের ইহকালীন ক্ষতি প্রত্যক্ষ করেছেন।
মহান আল্লাহ আমাদের গিবতের অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন।
Leave a Reply