মহানবী (সা.) রমজানে যেভাবে দান-সদকা করতেন

  • আপডেট সময় বুধবার, মার্চ ১৩, ২০২৪
  • 83 পাঠক

শরিফ আহমাদ। ১২ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।

দান-সদকা করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, মুমিনজীবনের অনুষঙ্গ। এর মাধ্যমে মানুষ পরস্পরের প্রতি সহনশীল হয়। সমাজব্যবস্থা সুন্দর হয়ে যায়। এ জন্য কোরআন-হাদিসে দানের আলাদা গুরুত্ব ও ফজিলত বয়ান করা হয়েছে।

রমজান দানশীলতার শ্রেষ্ঠ মাস, দ্বিগুণ প্রতিদান পাওয়া যায়। এ মাসে প্রসারিত হোক সবার দানের হাত।

দান করার ফজিলত

দান-সদকার প্রতিদান বাড়তে থাকে। আল্লাহ তাআলা চমৎকার উপমার মাধ্যমে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। বর্ণিত হয়েছে, যারা নিজেদের মাল আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের খরচের উদাহরণ এমন, যেমন একটা বীজ বপন করা হলো এবং তা থেকে সাতটা ছড়া বের হলো এবং প্রতিটি ছড়ায় ১০০ করে শস্যবীজ হলো। এভাবেই আল্লাহ যার আমলকে চান বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ উদার ও মহাজ্ঞানী। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬১)।

দান-সদকার মাধ্যমে সম্পদে বরকত হয়

বিপদ-আপদ দূর হয়। গরিব-দুঃখীর উপকার হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে তিনি তার মর্যাদা উঁচুতে তুলে দেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৩৫৬)।

রমজানে নবীজির দান

রাসুল (সা.) দান করার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করেছেন। ফজিলত ঘোষণা করেছেন এবং তিনি নিজেও শ্রেষ্ঠ এক দানবীর ছিলেন।

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) দানশীলতায় সবচেয়ে অগ্রগামী ছিলেন। আর অন্য সময়ের চেয়ে রমজান মাসে তাঁর দানশীলতা অত্যধিক হতো। কেননা জিবরাঈল (আ.) প্রতিবছর রমজান মাসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত রাসুল (সা.) তাঁর সামনে কোরআন পাঠ করে শোনাতেন। যখন জিবরাঈল (আ.) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি কল্যাণ প্রবাহের (বসন্তের) বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল হতেন। (বুখারি, হাদিস : ৬; মুসলিম, হাদিস : ৫৮০৪)।

ইফতার সামগ্রী দান

ইফতারসামগ্রীর টাকা মানুষকে দান করে অথবা ইফতার পার্টির আয়োজন করে খাওয়ানোর মাধ্যমে সওয়াব অর্জন করা যায়। জায়েদ ইবনে খালিদ জুহানি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ যে ব্যক্তি সাওম পালনকারীকে ইফতার করায় তার জন্য আছে তাদের অনুরূপ সওয়াব। আর এতে তাদের কারো সওয়াবের কিছুই কম হবে না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৪৬)।

তাওফিক অনুযায়ী শরবত, খেজুর ইত্যাদি রোজাদার ব্যক্তিকে খাইয়ে সওয়াব পাওয়া যায়। জাহান্নাম থেকে বাঁচা যায়। আদি ইবনে হাতিম (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) জাহান্নামের আলোচনা করলেন। অতঃপর তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং ভ্রু কুঞ্চিত করলেন। তারপর বলেন, তোমরা আগুন থেকে বাঁচো। এবারও তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং ভ্রু কুঞ্চিত করলেন। এমনকি আমাদের ধারণা হলো, তিনি যেন আগুন দেখতে পাচ্ছেন।

এরপর বললেন, এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও তোমরা আগুন থেকে বাঁচো। যদি সে তা না পায় তাহলে একটি উত্তম কথার বিনিময়ে হলেও। (মুসলিম, হাদিস : ২২২১)।

সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!