রায়হান রাশেদ । ২৩ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ নিশ্চয়ই আল্লাহ (জামিল) সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। ’ (মুসলিম, হাদিস: ৯১)। ‘আল্লাহ সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন’—এর অর্থ হলো, তিনি দেহ ও কাপড়ের পবিত্রতা অর্জন এবং পাপ-পঙ্কিলতা থেকে আত্মিক পরিচ্ছন্নতা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। (আল মাফহুম, ১/২৮৮)
বাহ্যিক বেশভূষা সুন্দর ও পরিপাটি হলে মানুষের হৃদয়ে সুন্দর অনুভূতি তৈরি হয়। আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তাই তো রাসুল (সা.) মুসলিমদের বাহ্যিক অবয়ব সুন্দর করে এমন প্রতিটি উপকরণ ব্যবহারে গুরুত্ব দিয়েছেন। এর একটি হলো, চুল আঁচড়ানো, চুলকে পরিপাটি করে রাখা। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ যার চুল আছে, সে যেন চুলের যত্ন নেয়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪১৬৩)
চুলের যত্ন নেওয়া বলতে আঁচড়ানো, পরিষ্কার রাখা, চুলকে সুন্দর রাখে—এমন সব উপকরণ ব্যবহার করা। রাসুল (সা.) চুল আঁচড়ানোর সময় সুন্দর একটি নিয়ম অনুসরণ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘ রাসুলুল্লাহ (সা.) চুল আঁচড়ানো, জুতা পরিধান, পবিত্রতা অর্জন থেকে শুরু করে সব কাজ ডান দিক থেকে শুরু করতে পছন্দ করতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৬৬)
আর এই সুন্দর সুন্নাহকে যারা আমলে নেয় না, তাদের তিনি সতর্ক করতেন। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘একবার এলোমেলো চুলবিশিষ্ট এক লোক রাসুল (সা.)-এর কাছে এলে তিনি বললেন, চুলকে স্থির ও সুন্দর করার মতো কিছুই কি সে পায় না?’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪০৬২)
তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) চুল আঁচড়ানোর ব্যাপারটিকে মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়া পছন্দ করতেন না। যেমনটি আজকালের তরুণ ও যুবকরা করে থাকে। বেশি গুরুত্ব দিতে গেলে জীবনের অন্যান্য দায়িত্ব ও কাজ থেকে বিমুখ হয়ে পড়বে। অন্তরে দম্ভ ও অহংকার তৈরি হবে। আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) বলেন, ‘ রাসুল (সা.) ঘন ঘন চুল আঁচড়াতে নিষেধ করেছেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪১৫৯)
মুসলমানদের উচিত, চুল আঁচড়ানোর ব্যাপারটিতে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি না করা। মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। সুন্দর অবয়বে থাকা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। এগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক
Leave a Reply