মুফতি আতাউর রহমান । ২৩ জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।।
মুমিন হওয়ার জন্য অন্তরের বিশ্বাসের সঙ্গে মৌখিক স্বীকারোক্তি ও সাক্ষ্য দেয়া অপরিহার্য। কিন্তু মানুষের ভেতরে ও বাইরে তথা বিশ্বাস ও কাজের ভেতরে যেন মিল থাকে। সমাজের বহু মানুষ এমন আছে যারা অন্তরে কুফরি গোপন রাখে, কিন্তু মুখে ঈমানের দাবি করে। তাদের কর্মকাণ্ড ঈমানের অনুকূল নয়।
এই শ্রেণির মানুষের ঈমানের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়, ঈমানের দাবির মাধ্যমে তারা মূলত সমাজকে প্রতারিত করতে চায়। পবিত্র কোরআনে তাদের ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মানুষের ভেতরে এমন লোকও আছে, যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। কিন্তু তারা মুমিন নয়। আল্লাহ ও মুমিনদেরকে তারা প্রতারিত করতে চায়। অথচ তারা যে নিজেদের ভিন্ন কাউকে প্রতারিত করে না, তা তারা বুঝতে পারে না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ৮-৯)
পরবর্তী আয়াতে মহান আল্লাহ তাদের এমন হীন কর্মকাণ্ডের কারণ ও পরিণতিও বাতলে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের অন্তরের ব্যাধি আছে। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন এবং তাদের জন্য আছে কষ্টদায়ক শাস্তি। কেননা তারা মিথ্যাবাদী।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১০)
বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যারা কপটতার আশ্রয় নেয়, শরিয়তের ভাষায় তারা মুনাফিক। ঈমানের মিথ্যা দাবি দ্বারা যেমন নিফাকি প্রকাশ পায়, তেমন কিছু কাজের মাধ্যমেও মানুষের কপটতা প্রকাশ পায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি : কথা বললে মিথ্যা বলে, যখন অঙ্গীকার করে তার খেলাফ করে এবং তাদের কাছে আমানত রাখলে খিয়ানত করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩)
মুনাফিকরা নিজেদের অবিশ্বাসকে আড়াল করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ তাদের শঠতা প্রকাশ করে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুনাফিকরা ভয় করে, তাদের সম্পর্কে এমন এক সুরা না অবতীর্ণ হয়, যা তাদের অন্তরের কথা ব্যক্ত করে দেবে! বলুন, বিদ্রুপ করতে থাকো; তোমরা যা ভয় কোরো আল্লাহ তা প্রকাশ করে দেবেন।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৬৪)
আল্লাহ এই কপট ও মিথ্যা পরিহার করে সত্যবাদী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘কেননা আল্লাহ সত্যবাদীদের পুরস্কৃত করেন তাদের সত্যবাদিতার জন্য এবং তাঁর ইচ্ছা হলে মুনাফিকদের শাস্তি দেন অথবা তাদের ক্ষমা করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ২৪)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া।
Leave a Reply