১. শক্তির বিপরীতে মহাশক্তির উত্থান : সৃষ্টিজগতের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মহান আল্লাহ রাজত্বকারী শক্তির বিরুদ্ধে মহাশক্তির উত্থান ঘটান, যাতে পৃথিবীতে ক্ষমতা, রাজত্ব ও মানবিকতায় ভারসাম্য রক্ষা পায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি আল্লাহ মানুষকে পরস্পরের মাধ্যমে প্রতিহত না করতেন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেত।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫১)। এই আয়াতের উদ্দেশ্য হলো, মানুষ ও পৃথিবীর শাসনব্যবস্থা কখনো একই অবস্থায় থাকে না। বরং তার পরিবর্তন হয় এবং শক্তির বিপরীতে মহাশক্তির উত্থান ঘটে। আল্লাহ তাআলা সেই উত্থান এমনভাবে ঘটান, যা মানুষের কল্পনাতীত এবং তা ধারাবাহিক।
২. সংস্কার ও পুনর্গঠন : আল্লাহ তাআলা প্রাকৃতিকভাবেই পৃথিবীর জলবায়ু, প্রকৃতি, মানবসভ্যতার সংস্কার ও পুনর্গঠন করেন। কোথাও কোনো বিপর্যয় দেখা দিলে মহান আল্লাহ তাআলা তা কাটিয়ে ওঠা এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কুদরতি ব্যবস্থা রেখেছেন। মানবসমাজেও আল্লাহ সংস্কার ও পুনর্গঠনের ব্যবস্থা কার্যকর রেখেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে কাজে আমি তোমাদের নিষেধ করেছি, সে কাজে আমি তোমাদের অনুসরণ করতে চাই না। আমি তো আমার সাধ্যানুযায়ী সংশোধন (কল্যাণের পথে) কামনা করি।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৮৮)। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আপনার প্রভু অন্যায়ভাবে কোনো জনপদ ধ্বংস করেন না। যে তার অধিবাসীরা কল্যাণের অনুসারী।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১১৭)
৩. পরিবর্তন : পুরো সৃষ্টিজগৎ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিবর্তনের পেছনে তার কাজ ও কর্মপদ্ধতিই কার্যকরণ হিসেবে কাজ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থায় পরিবর্তন আনে।’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ১১)
৪. ন্যায়পরায়ণতা : আল্লাহ তাআলা সব সৃষ্টিকে উপযুক্ত কর্মফল দান করেন। ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতে সৃষ্টিজীবন কর্মের ফলাফল ভোগ করে ও করবে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর বিচার ইনসাফপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি কি মুসলিমদের প্রতি মুজরিমদের (অবাধ্য ও অপরাধী) মতো আচরণ করব?’ (সুরা : কলম, আয়াত : ৩৫)
সৃষ্টিজগৎ পরিচালনায় আল্লাহর নীতি ও চিরায়ত বিধান শতভাগ জানা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা থেকে যতটা জানা যায়, তা আত্মস্থ করা মুমিনের জন্য কল্যাণকর; যেন তার জীবন আল্লাহর ইচ্ছার অনুকূলে পরিচালিত হয়।
Leave a Reply